ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে কর্মহীন দুস্থ মা ও শিশুদের মধ্যে বিনামূল্যে দুধ বিতরণ

প্রকাশিত: ১০:১৪, ২৫ এপ্রিল ২০২০

 গাজীপুরে কর্মহীন দুস্থ মা ও শিশুদের মধ্যে বিনামূল্যে দুধ বিতরণ

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঘোষিত লকডাউনে সাড়া দিয়ে ঘরে অবস্থান করায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। নিম্ন আয়ের এসব পরিবার ও তাদের শিশু সন্তানদের মাঝে বিনামূল্যে গাভীর তরল দুধ সরবরাহ করা হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরে। শুক্রবার বিকেলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও সমাজকর্মী সুলতান মোঃ সিরাজুল ইসলাম শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের বেপারিচালা ও টেপিরবাড়ি দক্ষিণপাড়া এলাকায় ওই দুধ বিতরণ করেন। সুলতান মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, গাজীপুরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এ ভাইরাসের সংক্রমণরোধে ইতোমধ্যেই গাজীপুর জেলাকে লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সাড়া দিয়ে ঘরে অবস্থান করতে গিয়ে নিম্ন আয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষ ও তাদের পরিবারের খাদ্যসঙ্কট দূর করতে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির উদ্যোগে ইতোমধ্যে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে তাদের শিশুদের পুষ্টি সঙ্কট পূরণ করতে কেউ কোন খাবার সরবরাহ করেনি। এমতাবস্থায় এসব অসহায় শিশু ও তাদের মায়েদের পুষ্টির জোগান দিতে করোনাকালে এলাকা থেকে গাভীর বিশুদ্ধ দুধ কিনে আমি বিনামূল্যে তাদের সরবরাহ করছি। পুরো রমজান মাস এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শিশু ও মায়েদের তালিকা করে তাদের মাঝে আমার নিজ অর্থে গাভীর দুধ সরবরাহ করা হবে। কারণ দুধে অন্য খাদ্যের চেয়ে সবচেয়ে বেশি পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। প্রথম দিন এলাকায় ৪০ লিটার দুধ সরবরাহ করেন। স্থানীয় গৃহবধূ রোকসানা আক্তার জানান, আমার দিনমজুর স্বামী আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার ক্ষুদ্র আয়ের ওপর আমরা নির্ভরশীল। করোনাভাইরাসের কারণে তিনি প্রায় এক মাস ধরে কর্মহীন হয়ে ঘরে রয়েছেন। স্থানীয় এমপি ইকবাল হোসেন সবুজ ও বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেয়া চাল-ডাল-পেঁয়াজ-তেল পেয়েছি, যা দিয়ে আমরা বড়রা কোন রকমে দিন কাটাচ্ছি। কিন্তু আমার ছয় মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। স্বামী কর্মহীন হয়ে পড়ায় গত ক’দিন ধরে শিশু সন্তানটির খাদ্য দুধের খুব অভাব চলছিল। অনেকের কাছে ধার-দেনা করে কয়েকদিন তার দুধের ব্যবস্থা করেছি। আজ আমার সন্তানের জন্য বিনামূল্যে এক লিটার দুধ পেয়েছি। এ দুধ দিয়ে এখন আমার শিশু সন্তানকে কয়েক দিন খাওয়াতে পারব। এ সময় তিনি আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার সন্তানকে যিনি খাবার জুগিয়েছেন আল্লাহ যেন তাকে এবং তার সন্তানদের কোন অভাবে না রাখেন।
×