ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

দুর্দশাগ্রস্ত শিল্পীর পাশে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিষদ

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ২৫ এপ্রিল ২০২০

 দুর্দশাগ্রস্ত শিল্পীর পাশে  রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিষদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে স্তব্ধ সারা পৃথিবী। ঘরবন্দী অনেক মানুষ আর্থিক অনটনে ভুগছে। অন্যান্য মানুষের সঙ্গে বেকার হয়ে পড়েছেন দেশের অনেক শিল্পী। করোনাভাইরাসের দুর্যোগে দেশের শিল্পীদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ। শিল্পীদের এ সাহায্যে সংগঠনটির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে লন্ডনভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দধারা আর্টস। বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিল্পী বুলবুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ থেকে সারাদেশে যেসব দুর্দশাগ্রস্ত শিল্পী আছেন তাদের এই দুঃসময়ে কিছুটা হলেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এবার পহেলা বৈশাখ গেল কোন অনুষ্ঠান নেই, টিউশনি করে কিংবা গানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যাদের জীবিকা তাদের সহযোগিতা করার জন্য রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলনের পক্ষ থেকে আমরা একটা ফান্ড তৈরি করেছি। ইতোমধ্যে আমরা দেশের এক হাজার শিল্পীর তালিকা তৈরি করেছি। তাদের আর্থিক সহযোগিতা দেয়া শুরু করেছি। এটা দেখে লন্ডনভিত্তিক সংগঠন আনন্দধারা আর্ট উৎসাহিত হয়েছে। আমরা ওদের বলেছিলাম যে আপনারা আমাদের এখানে কিছু কন্ট্রিবিউট করেন। তারা বলেছিল তাহলে তো আমরা ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে একটা অনুষ্ঠানও করতে পারি। আমরা বলেছিলাম অবশ্যই ভাল প্রস্তাব আপনারা করেন। এটা শুক্রবার থেকে শুরু হলো। তিনি বলেন, এটার শুরুটা বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ করেছিল। আমাদের এবারের রবীন্দ্র সম্মেলন হয়েছে সিরাজগঞ্জে এ বছরের ৬, ৭ ও ৮ মার্চ। এবং মার্চের ৮ তারিখে প্রথম বাংলাদেশে অফিসিয়ালি করোনা ধরা পড়ে। আমরা সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফিরলাম ৯ মার্চ। দেশের এই অবস্থায় আমি তখন প্রথম প্রস্তাব রাখলাম আমরা রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের একটা ওয়ার্ডসহ্যাব গ্রুপ করে যে এ সময় আমরা শিল্পীদের জন্য কিছু করতে পারি কিনা। আমাদের সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্স গবর্নর আতিউর রহমান এটাকে সমর্থন দিলেন। আমরা প্রস্তাব দিলাম এই দুঃসময়ে আমাদের কিছু করা দরকার। তখন শুধু যে শিল্পীদের জন্য করব এটা ভবিনি। আমরা তখন ভেবেছিলাম সমাজের নিরীহ মানুষের জন্য সাহয্যের হাত বাড়ানো যায় কিভাবে এটা ভেবেছিলাম। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা রেস্পন্স করা শুরু করল। অনেকে কিছু কিছু করে টাকা দিতে শুরু করল। এটা করতে করতে এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের প্রায় আড়াই লাখ টাকা ফান্ড হয়ে গেল। আমরা তখন বিদ্যানন্দ সংগঠনকে এক লাখ টাকা দিলাম এটাকে বিতরণ করতে। এরপর থেকে আমাদের টাকা উঠতে থাকল। ইতোমধ্যে আমাদের সংগঠনের নিজস্ব সদস্যদের কাছ থেকে তিন লাখ টাকার মতো উঠে গেল। এছাড়া কমিটির বাইরের লোকজনও কিছু কিছু অর্থ দিতে শুরু করল। আমরা তখন চিন্তা করলাম অনেক শিল্পীরা যারা আছে তারা রিলিফের জন্য হাতও পাততে পারে না কিংবা লাইনেও দাঁড়াতে পারে না। এদের আমরা সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। তখন সারা বাংলাদেশে আমাদের যে শাখা আছে তাদের বললাম নিজ জেলার এই ধরনের শিল্পীদের তালিকা দিতে। ইতোমধ্যে প্রায় এক হাজারের মতো তালিকা চলে এসেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও আর্থিক সহযোগিতা করা শুরু করেছে। কয়েকটি ব্যাংক এবং ব্যক্তিগতভাবেও কিছু কিছু মানুষ এগিয়ে এসেছে। ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে তিনশ শিল্পী মোটামুটিভাবে এক মাস ডাল ভাত খেতে পারবে এই আর্থিক ব্যবস্থা করতে পেরেছি। মূলত এক হাজার শিল্পীকে এই সহযোগিতা করার ইচ্ছা রয়েছে। এই উদ্যোগটা লন্ডনভিত্তিক সংগঠন আনন্দধারা আর্ট শুনে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এবং সেটা শুক্রবার থেকে শুরু করেছে।
×