ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দ্রুততম সময়ে বোরো ফসল ঘরে তোলা

বগুড়া কৃষি অঞ্চলে ধান মাড়াই কাটাই কম্বাইন্ড হারভেস্টারে

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২৫ এপ্রিল ২০২০

 বগুড়া কৃষি অঞ্চলে ধান মাড়াই কাটাই কম্বাইন্ড হারভেস্টারে

সমুদ্র হক ॥ করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়া অঞ্চলের চার জেলার বোরোর মাড়াই কাটাই হচ্ছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে। এতে কম শ্রমিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খুবই দ্রুত অধিক জমির ধান মাড়াই কাটাই করে বস্তায় ভরে কৃষকের আঙ্গিনায় পৌঁছে দেয়া যাচ্ছে। কৃষি অঞ্চল বগুড়া জয়পুরহাট পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার মাড়াই কাটাই কেবল শুরু হয়েছে। গৃহস্থ ও কৃষক কম্বাইন্ড হারভেস্টারে ধান কাটতে ভাড়ার চুক্তি করছেন। এবার উত্তরাঞ্চলে বোরোর আবাদ ভাল। ঝড় বাদল ও শিলাপাতের ভয়ই এখন বেশি। শুকনো আবহাওয়া থাকলে উল্লেখিত চার জেলার ধান মাড়াই কাটাই দ্রুত শেষ করা যাবে। কৃষি কর্মকর্তাগণ এমনটিই বলছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন, উল্লেখিত চার জেলায় ১১৩টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার আছে। চলতি মৌসুমে বোরো ধান দ্রুত কাটতে সরকারী ভর্তুকিতে আরও ৬১টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার দেয়া হয়েছে। বগুড়ায় বোরো আবাদের টার্গেট দেয়া হয় ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬শ’হেক্টর জমিতে। জয়পুরহাটে ৬৯ হাজার ৪শ’২৫ হেক্টর, পাবনায় ৪১ হাজার ৩শ’ হেক্টর ও সিরাজগঞ্জে ১ লাখ ৪১ হাজার ৪০ হেক্টর। প্রতি হেক্টর জমিতে ৪ দশমিক ৫ মেট্রিক টন করে চাল ও ৬ দশমিক ৫ মে.টন করে ধান উৎপাদন হয়। চলতি মৌসুমে টার্গেটের চেয়েও অধিক জমিতে আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ আশা করছে, কম্বাইন্ড হারভেস্টারে দ্রুততম সময়ে ধান মাড়াই করে ঘরে তোলা যাবে। কম্বাইন্ড হারভেস্টারে মেকানিক্সসহ জনা তিনেক মানুষ হলেই চলে। যন্ত্রই কাটাই মাড়াই ঝাড়াইয়ের পর ধান বস্তায় ভরে খড় আলাদা করে দেয়। বগুড়া অঞ্চলে যে কম্বাইন্ড হারভেস্টার এসেছে তা ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, চীনের তৈরি। বড় কম্বাইন্ড হারভেস্টারের দাম ২০/২৫ লাখ টাকা। মাঝারির দাম ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা। বগুড়ার শিবগঞ্জের জানগ্রামের আল আমিন (৩০) কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সরকারী ভর্তুকির কম্বাইন্ড হারভেস্টার কিনেছেন। ১৮ লাখ টাকা দামের কম্বাইন্ড হারভেস্টারে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে ৫ লাখ টাকা। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রতি বিঘায় ৬শ’ থেকে ৮শ’ টাকায় জমির ধান কেটে মাড়াই করে বস্তায় ভরে রেডি করে দিচ্ছেন। গৃহস্থ চাইলে হারভেস্টারের ট্রলিতে বস্তা বোঝাই ধান আঙ্গিনায় পৌঁছে দিচ্ছেন। প্রতি ঘণ্টায় এক একর জমির ধান কাটাই মাড়াই বাছাই ঝাড়াই ও বস্তায় ভরানো যায়। চালকল মালিক মোস্তাফিজার রহমান বললেন, এখন ২/৩ দিনের মধ্যে চাতালে মাঠ থেকে ধান আসে। হারভেস্টার ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান শামীম জানান, কম্বাইন্ড হারভেস্টারে আছে ৫টি অংশ। শস্য কর্তন বা আহরণ, থ্রেসিং বা মাড়াই, ঝাড়াই বা পরিষ্কার করা, দানাদার শস্য আনলোড করে বস্তায় ভরানো ও খড় নির্গত করা। হুইল ক্রোলার রিপিং ধরনের হারভেস্টারে ২ থেকে ৬ সারি পর্যন্ত সেট করা যায়। শুকনো ও উঁচু ভূমিতে ব্যবহারের জন্য হুইল টাইপ এবং জমে থাকা পানি কর্দমাক্ত জমিতে ব্যবহারের জন্য ক্রোলার টাইপ ব্যবহার হয়। প্রতি ঘণ্টায় ৭ লিটার ডিজেলের প্রয়োজন।
×