ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঘরবন্দী জন্মদিনে শচীনের ভাবনাজুড়ে ক্রিকেট

প্রকাশিত: ০৭:২০, ২৫ এপ্রিল ২০২০

  ঘরবন্দী জন্মদিনে শচীনের ভাবনাজুড়ে ক্রিকেট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শচীন টেন্ডুলকর। ব্যাটিং অধিশ্বর। এ যুগের ডন। কোটি মানুষের নয়নমণি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন সাত বছর। এখনও তিনি ভারতীয়দের ক্রিকেটইশ্বর। এখনও তিনি ওপরে। সবার সেরা। তাকে ঘিরে এতটুকু আয়োজনে গোট দেশ যেখানে বুঁদ হয়ে পড়ে, সেখানে ৪৭তম জন্মদিনে (২৪ এপ্রিল, শুক্রবার) কোন অড়ম্বরতা ছিল না। কারণটা অনুমেয়। বিশ্বের মতো করোনার থাবায় কাঁপছে তার দেশ ভারত। জীবন্ত কিংবদন্তি আগেই জানিয়েছিলেন এবার তাই কোন আয়োজন থাকবে না। ঘরবন্দী সাবেক ব্যাটিং মায়েস্ত্রো ক্রিকইনফোকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে কথা বলেছেন কেবলই ক্রিকেট নিয়ে ...। মাঠ শাসন করে বেড়ানো দুরন্ত সেই দিনগুলো কেমন ছিল? টি২০’র ধুন্ধুমার এই যুগে খেললে কিভাবে খেলতেন? ক্রিকেট কি আসলেই বদলে যাচ্ছে? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন রেকর্ডের বরপুত্র শচীন রমেশ টেন্ডুলকর। প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে ক্রিকেট। সেখানে সাত বছর কম সময় নয়। দুই যুগের ক্যারিয়ারে একটিমাত্র টি২০ খেলেছেন। ১শ’টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি, সবচেয়ে বেশি রান, বেশি ম্যাচসহ অজস্র রেকর্ডের সবই করেছেন টেস্ট আর ওয়ানডেতে। এখনকার বদলে যাওয়া এই সময়ে খেললে কি করতেন? ৩৬০ ডিগ্রী, স্কুপ না সুইস হিট? ‘আমি যেমন ছিলাম, আজকের ক্রিকেটেও তেমনি থাকতাম। মনে হয় না কিছু বদলাতাম’Ñ বলছেন ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় কিংবদন্তি। ধুন্ধুমার টি২০’র এই সময়ে ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিংয়ের ধরন বদলাচ্ছে, মানিয়ে নিচ্ছেন বোলাররাও। এ যুগে খেললে শচীনের ব্যাটিংয়ে কী বদল আসত? ‘আমার একেবারে চিরাচরিত ভাবনার বাইরে গিয়ে কিছু করতে হতো বলে মনে হয় না। কারণ, যেভাবে ব্যাটিং করতাম তাই যদি করে যেতাম ... বাউন্ডারি লাইন তো এখনও ৭০ গজ দূরেই আছে। বাউন্ডারি পার করার ব্যাপারে যদি মনস্থির করেই ফেলি, সে ক্ষেত্রে অন্য কিছুর চেয়ে ধারাবাহিকতা নিয়েই বেশি কাজ করতে হবে। এখানে অবশ্য উইকেটটা (সারফেইস) কেমন সেটাও একটা ব্যাপার। কিছু কিছু উইকেট আপনাকে ভিন্নভাবে খেলতে বাধ্য করবে। নিজের মনে, ভাবনায় এতটুকু নমনীয়তা অবশ্যই থাকত।’ তবে ক্রিকেটের এই বদলে যাওয়া অবধারিত বলেই মনে করেন সাবেক মাস্টার ব্লাস্টার, ‘বোলাররা এখন স্লোয়ার বল বাউন্সার দিচ্ছে, নকল বল করছে, ওয়াইড ইয়র্কার করছে...নতুন অনেক কিছুই এনেছে। ব্যাটসম্যানরাও। সামনের দিনে, হয়তো আট-দশ বছর পর আমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের ক্রিকেট দেখব। আগামীতে হয় তো ব্যাটের সুইংয়ের ধরন বদলাবে, ব্যাটসম্যানের স্টান্স (দাঁড়ানোর ভঙ্গি) হয় তো অন্যরকম হবে। অনেক কিছুই বদলাবে, যেসব হয় তো আজ আমরা ভাবতে পারছি না, কারণ খেলাটা এখনও সেটা দাবি করেনি।’ করোনার পরের ক্রিকেট কেমন হতে পারে? আর যাই হোক, দর্শকহীন স্টেডিয়ামে ক্রিকেট চান না শচীন, ‘খুবই অদ্ভুত হবে সেটা। দর্শকদের কাছ থেকে একটা অন্যরকম শক্তি পাওয়া যায়। যদি ভারত একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জেতার মতো অবস্থায় থাকে, আপনি অবশ্যই চাইবেন সেটা উদ্যাপন করার জন্য মাঠে দর্শক থাকুক, জয়ের আনন্দটা বাড়িয়ে দিক। কিন্তু স্টেডিয়ামে কেউ না থাকলে? কারওই তখন নিজেকে বিশেষ কিছু মনে হবে না। অদ্ভুত একটা অনুভূতি হবে। জানি না খেলোয়াড়দের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে। আমি সেটা চাই না।’ করোনার এই অন্ধকার ফুড়ে আলো আসবেই, বিশ্বাস শচীনের।
×