ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু অর্ধলাখ ছাড়াল

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৫ এপ্রিল ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু অর্ধলাখ ছাড়াল

করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ১৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একদিনে মৃতের সংখ্যার দিক থেকে এ সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মৃতের সংখ্যার দিনগুলোর অন্যতম। এতে দেশটিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসে প্রায় ৫০ হাজারের অধিক মানুষ প্রাণ হারাল। বৃহস্পতিবার জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি পরিচালিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা যায়। খবর এএফপি ও বিবিসির। বাল্টিমোরভিত্তিক এ ইউনিভার্সিটি জানায়, স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। বিশ্বে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে ২৬ হাজার ৯৭১ জন বেড়ে বর্তমানে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬৪৬ জনে দাঁড়াল। কিন্তু এর মধ্যেও লকডাউন তুলে দিতে মঙ্গলবার দেশটির প্রায় ১২ অঙ্গরাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে। অর্থকষ্ট, কাজ হারানোর ভয়সহ অন্যান্য কারণে মঙ্গলবার নর্থকারোলাইনা, ওয়াশিংটন, ভার্জিনিয়া, অরেগন, আলাবামা, ম্যারিল্যান্ড, টেক্সাস ও ফ্লোরিডাসহ অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামে। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে ওয়াশিংটনে। সামাজিক দূরত্বর বিধান না মেনে অনেকে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। লকডাউনে যুক্তরাষ্ট্রের দুই কোটি ২০ লাখ লোক কাজ হারিয়েছে। আবার অনেকে কোয়ারেন্টাইনে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে দেশটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বেশি সমস্যায় পড়েছেন। টেক্সাসের বিক্ষোভে যোগ দেয়া এ্যালেক্স জোন্স নামে এক বিক্ষোভকারী অন্যদের সঙ্গে হাত মেলান। তিনি করেনাভাইরাস প্রসঙ্গে বাজারে চাউর হওয়া ষড়ষন্ত্র তত্ত্ব বিশ্বাস করেন। বিক্ষোভে যোগ দেয়াদের সাধুবাদ জানান তিনি। অপর এক বিক্ষোভকারী বলেন, লকডাউনের কারণে আমার কাজ নেই। আমি আমার পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছি না। তাই আমি এ লকডাউন চাই না ঘরবন্দী দশার নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবিতে গত সপ্তাহেও টেক্সাস ও উইসকনসিনে কয়েক শ’ মানুষ বিক্ষোভ করেছে। টেক্সাসের রাজধানী অস্টিনে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা ‘যুক্তরাষ্ট্র, আমাদের কাজ করতে দাও’ বলে স্লোগান ধরে। আর উইসকনসিনের ব্রুকফিল্ডে মূল সড়কের একপাশে প্রতিবাদকারীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা নাড়িয়ে অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষের ঘরবন্দী দশার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানায়। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন তুলে নিয়ে লোকজনকে কাজে ফেরার সুযোগ দিলে সংক্রমণ আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। ব্যাপক সংখ্যক পরীক্ষা, আক্রান্তদের শনাক্ত ও তাদের এ্যান্টিবডি পরীক্ষারও পরামর্শও দিচ্ছেন তারা। শুধু টেক্সাস ও উইসকনসিনে নয়, গত সপ্তাহ থেকেই ওহাইও, মিনেসোটা, মিশিগান ও ভার্জিনিয়াতে ‘ঘরে থাকার নির্দেশনা’ তুলে নেয়ার দাবিতে বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ চলছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব কর্মসূচীতে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীরা ‘সামাজিক দূরত্ব’ এবং মাস্ক পরার নির্দেশনা অবজ্ঞা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একের পর এক টুইটে এ বিক্ষোভকারীদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। মিশিগান, মিনেসোটা ও ভার্জিনিয়ার বাসিন্দাদের অঙ্গরাজ্যগুলোকে ডেমোক্র্যাট গবর্নরদের হাত থেকে ‘মুক্ত করতেও’ ডাক দিয়েছেন তিনি। প্রাণঘাতী নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কয়েক সপ্তাহের এ লকডাউনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহর থেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। এরপর ২৩ জানুয়ারি শহর লকডাউন করে দেয় চীন। সম্প্রতি সে লকডাউন তুলে নেয় চীন। এ উপলক্ষে শহরটি বর্ণিল আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়। সব সড়ক ও রেলযোগাযোগ ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে।
×