ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা পরিস্থিতি

জীবন ও জীবিকা রক্ষায় কাজ করছে সরকার ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:০০, ২৪ এপ্রিল ২০২০

জীবন ও জীবিকা রক্ষায় কাজ করছে সরকার ॥ তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকার মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটি রক্ষায়ই কাজ করছে। এ বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশে এখন পর্যন্ত একজন মানুষও না খেয়ে মরেনি। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে করোনাভাইরাসের প্রভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমসহ আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে সমন্বয় সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, জেলা প্রশাসক মোঃ ইলিয়াস হোসেন, জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রভাবে একটি মাস দেশের সব কর্মকা- বন্ধ। এ পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত না খেয়ে কেউ মারা না যাওয়ার সফলতা বর্তমান সরকারের। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে ১৭ লাখ টন খাদ্য মজুদ ছিল। বর্তমান সঙ্কট মোকাবেলায় এরই মধ্যে এক লাখ টন খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। আরও লাখ টন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সরকার গত কয়েক বছর ধরে ৫০ লাখ পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি চাল কেজি প্রতি ১০ টাকা হারে বিতরণ করে আসছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী আরও ৫০ লাখ পরিবারকে এর আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, এর বাইরে বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, পঙ্গুভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ সব ধরনের ভাতা এবং ১৪৪টি কর্মসূচীর মাধ্যমে আরও এক কোটি মানুষ সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে আছে। অর্থাৎ প্রায় ছয় কোটি মানুষ সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে আছে। এটি একটি বিরল ঘটনা। তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম জেলার পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ঢাকার চেয়ে অনেকাংশে ভাল। আমরা এ পরিস্থিতি ধরে রাখার রক্ষা করছি। যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থ করে তুলতে তৎপরতা চলছে। সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, কিভাবে করোনা রোগীদের আলাদা করে চিকিৎসা দেয়া যায়, ভবিষ্যতে আরও রোগী বাড়লে কি করা যায়, আর যারা ভাল আছেন তাদের কিভাবে সুরক্ষা দেয়া যায় এসব বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এর আগে গত বুধবার করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মন্ত্রী, এমপি এবং জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি সভাপতিত্ব করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন দিদারুল আলম এমপি, এবিএম ফজলে করিম এমপি, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, এম এ লতিফ এমপি, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, আবু রেজা মোঃ নিজাম উদ্দিন এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান এমপি এবং সংরক্ষিত নারী এমপি খতিজাতুল আনোয়ার সনি। বুধবারের ওই বৈঠকে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন না। কেন তিনি যাননি তার কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মধ্যে গ্রুপিং এখনও অব্যাহত রয়েছে। এ সংক্রান্তে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বৈঠকে জানিয়েছেন, মেয়রের বৈঠকে আসার কথা ছিল, হয়তো জরুরী কোন কাজে আটকা পড়ে আসতে পারেননি। চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে, নিজেদের মধ্যে বিবাদ কলহের জের হিসেবে মেয়রের বৈঠকে যোগ না দেয়ার ওই ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে, নগর আওয়ামী লীগের অন্য নেতৃবৃন্দ এমনকি মেয়র পদপ্রার্থীও উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নগরবাসীর নজর কেড়েছে। জাতীয় এমন দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সরকারী দলের নেতৃবৃন্দের এহেন বিভাজন পরিস্থিতি নগরবাসীর কাছে অগ্রহণযোগ্য। উল্লেখ করা যেতে পারে, করোনাপরিস্থিতির শুরু থেকে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ত্রাণ সহায়তাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে মাঠে কাজ করছেন।
×