ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল থেকে মাহে রমজান

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ২৪ এপ্রিল ২০২০

আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল থেকে মাহে রমজান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল শনিবার থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। আর চাঁদ দেখা না গেলে রবিবার থেকে শুরু হবে সিয়াম সাধনার মাস। এদিকে মাহে রমজানের তারিখ নির্ধারণে এবং পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা করতে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বসছে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশে ঘরে ঘরে রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। চাঁদ দেখা গেলে শুক্রবার রাতে সেহরি খাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে পবিত্র রমজানের আনুষ্ঠানিকতা। এ কারণে সন্ধ্যার পূর্বাপর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দৃষ্টি থাকবে আকাশের দিকে। হিজরি সাল হিসাব করা হয় চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রোজা রাখতে হয় বলে বিশ্বব্যাপী একদিন আগে ও পরে রোজা শুরু হয়। এবার উত্তর গোলার্ধের মানুষকে তীব্র গরমে দীর্ঘসময় না খেয়ে রোজা করতে হবে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মিলনায়তনে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন ধর্মমন্ত্রী। রোজা কবে থেকে- এ সিদ্ধান্ত আসবে আজকের বৈঠক থেকে। বাংলাদেশের আকাশে কোথাও রমজান মাসের চাঁদ দেখে গেলে ৯৫৫৯৪৯৩, ৯৫৫৫৯৪৭, ৯৫৫৬৪০৭ ও ৯৫৫৮৩৩৭ ফোন নম্বরে এবং ৯৫৬৩৩৯৭ ও ৯৫৫৮৩৩৭ ফ্যাক্স নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। এদিকে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার রমজানে তারাবি নামাজ মসজিদে আদায় করা হবে কিনা তা আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছ। যদিও প্রধানমন্ত্রী এর আগে মুসল্লিদের তারাবি নামাজ ঘরেই আদায় করার অনুরোধ জানিয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেমরা ছাড়া কেউ মসজিদে তারাবি নামাজ আদায় করতে পারবেন না। ঘরেই নামাজ আদায় করতে হবে। তারা জানায়, করোনায় সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে সরকারের যে নির্দেশনা আছে- ঘরেই সব নামাজ আদায় করার, সেটাই মানতে হবে। এটা কাউকে মসজিদে যাওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য নয়, বরং নিরাপদে থাকার জন্যই নির্দেশনাটি দেয়া হয়েছে। গত ৬ এপ্রিল এ নির্দেশনাটি জারি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে পাঁচটি দফা দেয়া হয়। এগুলো হলো- করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে মসজিদের ক্ষেত্রে খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেম ব্যতীত অন্য সব মুসল্লিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিজ নিজ বাসস্থানে নামাজ আদায় এবং জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে সম্মানিত খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেম মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে অনধিক পাঁচজন ও জুমার নামাজে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে বাইরের মুসল্লি মসজিদের ভেতরে জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও ধর্মীয় উপসনালয়ের পরিবর্তে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করতে হবে। তবে জানা গেছে, রমজানের তারাবি নামাজ মসজিদে আদায় করা হবে কিনা সে বিষয়েও আজকের বৈঠকে আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কর্মকর্তারা জানান, আজ শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক আছে। সেখানে হয়ত বিস্তারিত আলোচনা হবে। আগেই ২৫ এপ্রিল রাত থেকে সেহরির সময়সূচী প্রণীত হয়েছে। সেখানে ২৫ এপ্রিল থেকে সেহরি ইফতারের সময়সূচী ধরা হয়েছে। এদিকে বুধবার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে চাঁদ দেখা না যাওয়া দেশগুলোতে শাবান মাস ৩০ দিন পূর্ণ করবে। ফলে শুক্রবার থেকে সেখানকার মুসলিমরা রোজা রাখা শুরু করবেন। তবে বিশ্বজুড়ে চলমান করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে এবারের রোজার সময়টা কাটবে। মহামারী ছড়ানো ঠেকাতে জামাতে নামাজ বন্ধ থাকায় এবার তারাবির জামাতও হবে না; সমবেতভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ইফতারের দৃশ্যও চোখে পড়বে না।
×