ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জরুরী সেবার নামে তৈরি হচ্ছে রফতানির জন্য পোশাক

গাজীপুরে দেড় শতাধিক কারখানার উৎপাদন অব্যাহত

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ২৪ এপ্রিল ২০২০

গাজীপুরে দেড় শতাধিক কারখানার উৎপাদন অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি। আর এ ভাইরাস সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েই গাজীপুরের প্রায় দেড় শতাধিক কারখানায় বৃহস্পতিবার উৎপাদন অব্যাহত ছিল। জরুরী সেবার জন্য সুরক্ষা পোশাক (পিপিই), মাস্ক, ওষুধ এবং মানুষ ও পশু-পাখির খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনের নামে এসব কারখানা খোলা থাকলেও কিছু কারখানায় শার্ট-প্যান্ট জাতীয় পোশাক তৈরি করা হচ্ছে। চালু থাকা এসব কারখানায় শ্রমিকদের সুরক্ষা না দিয়ে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে কাজ করানো হচ্ছে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গাজীপুরের দুই সহস্রাধিক কারখানার প্রায় সবক’টিই বন্ধ রয়েছে। তবে পিপিই, মাস্ক, ওষুধ, মানব খাদ্য এবং পশু, পাখি ও মাছের খাদ্য উৎপাদনকারী প্রায় ১৫২টি কারখানা খোলা রয়েছে। জরুরী সেবার জন্য কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে এসব কারখানার উৎপাদন চালু রেখেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের অধিকাংশ কারখানা বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-এর নির্দেশনায় বন্ধ থাকলেও জেলার প্রায় দু’শ কারখানায় উৎপাদন কাজ করোনা পরিস্থিতি শুরুর প্রথম থেকেই অব্যাহত রয়েছে। জরুরী সেবার প্রয়োজনে পিপিই, মাস্ক, ওষুধ, মানুষ ও পশু-পাখির খাদ্য উৎপাদনের জন্য এসব কারখানা চালু রয়েছে। তবে কিছু সংখ্যক কারখানায় ওইসব জরুরী পণ্য সামগ্রী নামে মাত্র উৎপাদনের পাশাপাশি রফতানির জন্য শার্ট-প্যান্টসহ স্বাভাবিক পোশাক ও বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছে। এরমধ্যে মহানগরীর গাছা এলাকার ওনার্স গ্রুপের কারখানায় তিনটি ফ্লোরে পিপিই ও একটি ফ্লোরে রফতানির জন্য শার্ট তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়াও টঙ্গী পশ্চিম এলাকার হামীম গ্রুপের ক্রিয়েটিভ কালেকশন্স লিমিটেড কারখানায় একইভাবে রফতানির জন্য পোশাক তৈরি করছে। প্রতিদিন এসব কারখানায় হাজার হাজার শ্রমিক করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছে। একই ফ্লোরে পাশাপাশি থেকে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। এসব কারখানার অধিকাংশেরই করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে বজায় নেই সামাজিক দূরত্ব এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম। এখানে নেই কোন সামাজিক নিরাপত্তার বালাই, নেই হ্যান্ড গ্লাভসসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী। ফলে করোনা আতঙ্কে প্রতিটি ফ্লোরে কাজ করছেন হাজার হাজার শ্রমিক। এ অবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কর্মরত শ্রমিকরা। গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী জানান, গাজীপুরে চালু থাকা কিছু কারখানায় শ্রমিকদের সুরক্ষা না দিয়ে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে কাজ করানো হচ্ছে।
×