ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খামারে বিক্ষোভ নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২২ এপ্রিল ২০২০

খামারে বিক্ষোভ নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব

অনলাইন ডেস্ক ॥ নিজের নামে করা কাঁকড়া খামারের শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের জন্য বিক্ষোভের দুইদিন পর মুখ খুলেছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেছেন, বছরের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী-সন্তানের কাছে অবস্থান করায় তিনি খামারে শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি জানতেন না। বিক্ষোভের খবর গণমাধ্যমে প্রচারের পরপরই নিজের তহবিল থেকে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন সাকিব। গত সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন এলাকার বুড়িগোয়ালিনীতে সাকিব আল হাসানের মালিকানাধীন ‘সাকিব অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড’ নামের কাঁকড়ার হ্যাচারির শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। তাদের অভিযোগ ছিল,তাদের চার মাসের মজুরি বাকি পড়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী-সন্তানের কাছে যান সাকিব আল হাসান। তবে সেখানে পৌঁছে সরাসরি পরিবারের কাছে যাননি। শরীরে কোনো উপসর্গ না থাকলেও স্বজনদের সুরক্ষার কথা ভেবে একটি হোটেলে ওঠেন। বুধবারের স্ট্যাটাসে পরিবারে নতুন অতিথি আগমনের কথাও জানিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। খামারে শ্রমিক বিক্ষোভের বিষয়ে ব্যাখ্যায় সাকিব বলেন, “যদিও এগ্রো ফার্মের সাথে আমার নাম সরাসরি যুক্ত, আমার পেশাগত ব্যস্ততার কারণে আমার অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মতো এই কোম্পানিটিও অন্যান্য মালিক/অংশীদারদের দ্বারাই পরিচালিত হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময়েই আমার জন্য ব্যবসার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড তদারকি বা সরাসরি অফিস পরিদর্শন করা সম্ভব হয়ে উঠে না।’’ “আপনারা সবাই জানেন, এবছরের শুরু থেকে আমি আমেরিকায় অবস্থান করছি আমার পরিবারের সাথে, পরিবারের নতুন অতিথির অগমনের অপেক্ষায়। এই সময়ের মধ্যে এগ্রো ফার্মের বর্তমান ব্যবসায়িক অবস্থা আমার জানা ছিলো না এবং শ্রমিক অসন্তোষের ব্যাপারটি আমি মিডিয়ার মাধ্যমেই জানতে পারি।” খামারের অন্য মালিকরা গত কয়েক মাসের তথ্য তাকে যথাযথভাবে জানাননি দাবি করে তিনি লিখেছেন, “কিন্তু তারা আমাকে অবহিত করেছে, কিছু সংখ্যক কর্মচারী যারা কর্মরত ছিল তাদের বেতন আগামী ৩০ এপ্রিল, ২০২০ তারিখের মধ্যেই দিয়ে দেয়া হবে।’’ “এক্ষেত্রে উল্ল্যেখযোগ্য যে, এ বছরের জানুয়ারি মাসের শেষেই প্রায় সব কর্মচারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এপ্রিলের ৩০ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কর্মচারীরা হঠাৎ রাস্তায় নেমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় ধারণা করা যায়, কারো গোপন ও কুপ্ররোচনাতেই এমনটি হয়েছে।” ঘটনা জানার পরপরই অন্য অংশীদারদের সাহায্য ছাড়াই নিজের তহবিল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছেন বলে জানান সাকিব। করোনা ভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে সাকিব বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। নিজের নামে গড়া ফাউন্ডেশন থেকে অসহায়দের সহায়তা দিতে তহিবল সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কয়েকটি হাসপাতালে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার কিট বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। “অনেকের মত আমিও এই মহামারী মোকাবেলায় তহবিল সংগ্রহ করে আমার কর্মচারীদের মতই অন্যান্য অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু আমি এটা বুঝে উঠতে পারছি না, মানুষ কেন ভাবছে আমি আমার কর্মচারীদের বঞ্চিত করবো যাদের আমি গত ৩ বছর ধরে বেতন দিয়ে আসছি।” ঘটনার পূর্বাপর যাচাই না করে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করায় মর্মবেদনাও প্রকাশ করেছেন সাকিব আল হাসান। “আমি সত্যিই মর্মাহত যে মিডিয়া ব্যাপারটির সত্যতা যাচাই না করেই আংশিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছে। আংশিক মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিমূলক সংবেদনশীল শিরোনামগুলির চেয়ে তাদের সত্যতা যাচাই করে নেয়াই উচিত ছিলো।’’ “আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সত্য অনুসন্ধান করে সঠিক তথ্য মানুষকে জানানো মিডিয়ার বড় দায়িত্ব, তা না হলে অযথাই আমার মতো অনেক মানুষই এ ধরনের খবরের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা শুধুমাত্র আমাকে দোষারোপ না করে পুরো ব্যাপারটি সকল অংশীদারের নামসহ সবার সামনে তুলে ধরতে পারতো।” যেকোনো ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য, গুজবের বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকারও আহ্বান তিনি।
×