ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার ঝুঁকি এড়াতে চাই সকলের সহযোগিতা

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২১ এপ্রিল ২০২০

করোনার ঝুঁকি এড়াতে চাই সকলের সহযোগিতা

বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়াচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। প্রাণী থেকে আসা এই ভাইরাস এখন মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে। মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাচ্ছে সঙ্গে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে করোনাভাইরাসটিকে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবীব্যাপী জরুরী অবস্থা জারি করেছে। এখন পর্যন্ত ১৪৭টি দেশ সংক্রমিত। আক্রান্তের সংখ্যা ও তৎসঙ্গে মৃতু্যুর সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে। ভাইরাসটির বয়স মাত্র আড়াই মাস। এর চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে এখনও সম্যক জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হয়নি। ভাইরাসটি হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। যখন কোন সুস্থ লোক আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সংস্পর্শে আসে তখনই তার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই রোগের কোন নির্দিষ্ট লক্ষণ নেই। অনেকটা নিউমনিয়ার মতো- জ্বর, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা ও অবসাদ। তবে এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে ১৪ দিনের মতো সময় লাগতে পারে। এই সময় ওই ব্যক্তি যত জনের সংস্পর্শে আসবে নিজে অসুস্থ না হয়েও অন্যদের মাঝে জীবাণু ছড়াতে থাকবে। বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। চীন বা অন্যান্য দেশের মতো রাতারাতি বড় বড় হাসপাতাল বানানোর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বা খোলা জায়গার দরকার তার কোনটাই আমাদের দেশে নেই। তা ছাড়া করোনাভাইরাস শনাক্ত করার মতো যন্ত্রপাতিও অপ্রতুল। তাই সাবধানতাই আমাদের একমাত্র সম্বল। বিদেশ থেকে যারা বাংলাদেশে ঢুকছেন তাদের প্রতি নজরদারি বাড়াতে হবে। আমাদের স্বাস্থ্য অধিদফতর যাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বাড়ি পাঠাচ্ছে তাদের উচিত বাড়ি গিয়ে নিজ থেকে দায়িত্বশীল হওয়া। নিজের ঘরে আবদ্ধ (ছঁধৎধহঃরহব) থাকা কোন কঠিন বা অসম্মানজনক কাজ নয়। ভেবে দেখতে হবে যিনি বিদেশ থেকে আসছেন তিনি নিজে আক্রান্ত কিনা ১৪ দিনের আগে তা বুঝতে নাও পারেন। এই ১৪ দিনের মধ্যে তিনি নিজের পরিবারের বা আশপাশের কতজনকে আক্রান্ত করেছেন তার হিসাব কে দেবে? তাই আমাদের সবাইকে ভীষণভাবে সচেতন হতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসনেও বলা আছে নিজে বাঁচ, প্রতিবেশীকেও বাঁচাও। করোনা মহামারী দেখা দিয়েছে, কোথায় গিয়ে শেষ হবে আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানেন না। আসুন আমরা সচেতন হই, সতর্কতা অবলম্বন করি, সবাই নিজ তাগিদে নিজেদের রক্ষা করি। সন্দেহভাজন যে কোন ব্যক্তি নিজেকে ১৪ দিন ঘরের মধ্যে আবদ্ধ (ছঁধৎধহঃরহব) রাখি। বাংলাদেশে আমাদের জনগণের অসতর্কতা বা অবহেলার জন্য যেন করোনা মহামারী না দেখা দেয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের- সরকারেরে যে কোন নির্দেশকে সঠিকভাবে পালন করে নিজের পরিবার তথা দেশবাসীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করি। সবাই মিলে করোনা মহামারীকে প্রতিরোধ করি। নিজে বাঁচি, দেশকে বাঁচাই। ক্স জাপানের ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন যে, ঘন ঘন পানি পান করে মুখের ভেতর ভেজা রাখলে ভাইরাসটি মুখ দিয়ে প্রবেশ করলে ফুসফুসে যেতে পারবে না। পানির সঙ্গে পাকস্থলীতে চলে যাবে ও পাকস্থলীর এসিড ভাইরাসটিকে মেরে ফেলবে। ক্স যেখানে সেখানে কফ, থুতু ফেলা যাবে না। ক্স করোনার ঝুঁকি বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি। উনারা ভিড় এড়িয়ে চলবেন। ক্স ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীরা যে কোন ভাইরাস সংক্রমণে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের সচেতন হতে হবে। ডাঃ মোঃ আবদুর রহমান সাবেক পরিচালক, নিপসম ও সাবেক অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান পাবলিক হেলথ ও ইনফরম্যাটিকস বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
×