ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী করোনা ল্যাবে বাড়ছে নমুনা জট

প্রকাশিত: ০৮:৪২, ২১ এপ্রিল ২০২০

রাজশাহী করোনা ল্যাবে বাড়ছে নমুনা জট

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ পহেলা এপ্রিল থেকে রাজশাহীতে স্থাপিত করোনা ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ হলেও পরীক্ষায় জট বাড়ছে। করোনা প্রতিরোধে সন্দেহভাজনদের নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়া হলেও কাক্সিক্ষত হারে হচ্ছে না পরীক্ষা। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) করোনা পরীক্ষা ল্যাব চালুর পর থেকে শুক্রবার করে ল্যাবটি বন্ধ থাকছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির দাবি টেকটিনক্যাল সমস্যার করণে শুক্রবারে ল্যাবে পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া ল্যাবে জনবলের সঙ্কট রয়েছে। দিন যত গড়াচ্ছে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলা থেকে সন্দেহভাজন রোগীদের সংখ্যা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা একটি মাত্র ল্যাবে পরীক্ষা করা দুরূহ হয়ে পড়ছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজশাহী বিভাগে আরও অন্তত দুটি ল্যাব চালুর দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার সন্দেহভাজনদের করোনা পরীক্ষার জন্য ১ এপ্রিল থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে (রামেক) স্থাপন করা হয়েছে ল্যাব। রামেকের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডাঃ সাবেরা গুলনেহারকে প্রধান করে ৩০ সদস্যের টেকনিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। সদস্যরা পৃথক টিমে পালাক্রমে ল্যাবটি পরিচালনা করে আসছেন। তবে ল্যাবটি চালুর পর থেকেই শুক্রবার করে বন্ধ রাখা হয়। ফলে ল্যাবে নমুনা এসে জমা পড়লেও তা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে নমুনার জট; বাড়ছে ঝুঁকি। আর সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা সময়মতো পরীক্ষা না হওয়ায় ওইসব রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ল্যাব সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্য মতে, গত ১ এপ্রিল ল্যাব চালুর পর রবিবার পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলা থেকে মাত্র ১২শ ১২ জনের নমুনা এসেছে। যার মধ্যে পরীক্ষা হয়েছে ৮২৮ জনের। এদের মধ্যে ৯ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এদিকে ১২শ’ জনের মধ্যে ৩৫০টিরও বেশি নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হয়নি। এছাড়া এই ল্যাবটিতে ৯৪ জনের নমুনা একত্রে পরীক্ষা করা সম্ভব হলেও সংগ্রহীত নমুনাগুলোতে ত্রুটি থাকায় তার সব পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করাও সম্ভব হচ্ছে না। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডাঃ বুলবুল হাসান বলেন, নমুনা সংগ্রহের পর সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে তা পরীক্ষা করতে হবে। তা না হলে নমুনার গুণগত মান নষ্ট হতে থাকে। ফলে পরীক্ষার ফলাফল নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এদিকে উপজেলা পর্যায় থেকে পাঠানো নমুনাগুলোর প্যাকেটের গায়ে যে আইডি (নাম, ঠিকানা, বয়স) দেয়া থাকছে, ভেতরে থাকা নমুনার টেস্টটিউবের গায়ে একই আইডি থাকছে না। এতে নমুনা পরীক্ষায় গতি আসছে না। নষ্ট হচ্ছে সময় ও কিট। আর জন্য দায়ী করা হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের নমুনা সংগ্রহকারীদের। শুক্রবার করে করোনা পরীক্ষা বন্ধের বিষয়ে রামেক প্রিন্সিপাল নওশাদ আলী জানান, ল্যাবের মেশিনে কিছু সমস্যা হয়েছে তাই পরীক্ষা বন্ধ ছিল। শনিবার থেকে যথারীতি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এসময় তিনি জানান, করোনা ল্যাবে পরীক্ষাটি জটিল ও পুরো বিশ্বেই বিষয়টি নতুন। আমাদের জনবলের ঘাটতি আছে। তবে যারা কর্মরত আছেন তারা প্রত্যেকেই অত্যন্ত আন্তরিক। নতুনদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নমুনা জটের বিষয়ে ডাঃ নওশাদ আলী আরও বলেন, প্রতিদিন নমুনার সংখ্যা বাড়ছে। তাই এই বিভাগে আরও ল্যাবের প্রয়োজন।
×