ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আরও রোহিঙ্গা ধেয়ে আসার আশঙ্কায় টেকনাফের ইউএনওর সতর্কবার্তা

প্রকাশিত: ১০:০৩, ২০ এপ্রিল ২০২০

  আরও রোহিঙ্গা ধেয়ে আসার  আশঙ্কায় টেকনাফের  ইউএনওর সতর্কবার্তা

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ সমুদ্রপথে আকস্মিক রোহিঙ্গাদের গমনাগমন, মালয়েশিয়া উপকূল থেকে প্রায় ৭শ’ রোহিঙ্গা বোঝাই দুটি ট্রলারের প্রবেশের আশঙ্কা এবং গত শুক্রবার মিয়ানমারে জেলমুক্ত হওয়া সহস্রাধিক রোহিঙ্গা ধেয়ে আসতে পারে শঙ্কা নিয়ে টেকনাফের উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত সকল সংস্থা এবং স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম সাইফ রবিবার উপকূলে যে কোন ধরনের রোহিঙ্গা বোঝাই ইঞ্জিনবোট বা ট্রলার দেখামাত্র প্রশাসনকে খবর দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এদিকে, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের গণক্ষমা করার আওতায় প্রায় ২৫ হাজার বন্দী জেলমুক্ত হয়েছে তন্মধ্যে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা রয়েছে। গত শুক্রবার এরা মুক্তি পেয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্ত এসব রোহিঙ্গার অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ইতিপূর্বে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান নিয়েছে। গুঞ্জন উঠেছে, আশ্রিতদের পক্ষে জেলমুক্তদের এদেশে চলে আসার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ফলে জেলমুক্ত রোহিঙ্গাদের অনেকের এদেশে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, মালয়েশিয়ার লংকাউইদ্বীপের উপকূলে প্রায় ৭শ’ রোহিঙ্গা বোঝাই যে দুটি ট্রলার ভাসমান রয়েছে সেগুলোকে পুশব্যাক করা হলে এদের গন্তব্য হতে পারে বাংলাদেশের টেকনাফ উপকূল। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ নাকি মিয়ানমার থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে গমন করেছে তা এখনও অজানা। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, এসব রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়ার আগে থাইল্যান্ডে নামার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। টেকনাফের আশ্রয় শিবিরে থাকা রোহিঙ্গা সূত্রগুলো জানিয়েছে, যে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা মিয়ানমারে জেলমুক্ত হয়েছে এদের এদেশে চলে আসার সম্ভাবনা বেশি। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য রয়েছে। মূলত বিশ্বের যেসব সাহায্য সংস্থা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজ করছে এদের অনেকেই বিভিন্ন কারণে মিয়ানমারের এ ক্ষদ্র জনগোষ্ঠীর সদস্যদের বাংলাদেশে আশ্রয় দানের পক্ষে। এ প্রক্রিয়ায় তাদের আসল উদ্দেশ্য কি তা অজ্ঞাত। গত বুধবার যে ৩৯৬ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পুশব্যাক হয়ে এসেছে এদেরকে গ্রহণের জন্য এ জাতীয় সংস্থার চাপ ছিল বলেও চাউর হয়েছে। এ অবস্থায় রবিবার টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম সাইফ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও উপকূলবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা বোঝাই কোন ট্রলার বা নৌকা সাগরে দূরবর্তী বা নিকটবর্তী উপকূলে আশ্রয়ের জন্য ভিড়লে দ্রুত প্রশাসনকে অবহিত করুন। কোনভাবেই আমরা যেন অতি উৎসাহী হয়ে তাদের উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ না করি। তিনি এ বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী থাকার আশঙ্কা রয়েছে। নিজেদের বিষয় সবার আগে ভাবুন। ভাল থাকুন। নিরাপদ থাকুন। আমরা আছি আপনাদের পাশেই।’
×