ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্টোর রেন্ট মওকুফের সময় শেষ হচ্ছে আজ ॥ বৃদ্ধির আহবান

কন্টেনার জট কমাতে ছয় ধরনের পণ্য বেসরকারী আইসিডিতে নেয়ার অনুমতি

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ২০ এপ্রিল ২০২০

 কন্টেনার জট কমাতে ছয় ধরনের  পণ্য বেসরকারী আইসিডিতে  নেয়ার অনুমতি

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার জট ভয়াবহ রূপ নেয়ার প্রেক্ষাপটে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) ৬ ধরনের পণ্যবোঝাই কন্টেনার বেসরকারী আইসিডিতে (অফডক) সংরক্ষণের অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২৭ মার্চ থেকে আমদানির কন্টেনার খালাস নিলে স্টোর রেন্ট শতভাগ মওকুফ থাকার যে ঘোষণা দিয়েছে তা আজ সোমবার শেষ হচ্ছে। বন্দর সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতিতে এনবিআর অফডকগুলোতে আমদানির ৬ ধরনের পণ্য সাময়িক সংরক্ষণের অনুমতি দেয়ার আদেশ তারা পেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, অফডকগুলোতে নিয়মানুযায়ী ৩৮ ধরনের পণ্য সংরক্ষণের বিধান রয়েছে। নতুন যে ৬টি পণ্য সাময়িক রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে সব ধরনের বীজ, ফাইবার, ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত ব্লক লিস্ট পণ্য, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের আমদানির সূতা, ইনসেকটিসাইট এবং টায়ার কর্ড। তিনি জানিয়েছেন, এনবিআরের এ আদেশ আগামী জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এদিকে, এনবিআরের এ আদেশের পর বন্দর ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে এ বন্দরে কন্টেনার ধারণ ক্ষমতা ছুঁই ছুঁই করছে। অর্থাৎ ৫০ হাজার টিইইউএস কন্টেনার পুরোতে আর বেশি সময় নেই। এ অবস্থায় জট পরিস্থিতি এড়াতে মাত্র ছয় ধরনের আমদানি পণ্যের কন্টেনার অফডকে নেয়ার যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা খুব বেশি ফলপ্রসূ হবে না। তাদের মতে, অফডকে সাড়ে ১৮ হাজারের বেশি কন্টেনার নেয়ার সুযোগ থাকলেও হাতেগোনা মাত্র ছয়পণ্য নির্ধারণ করে দেয়ায় জট পরিস্থিতি খুব একটা কমবে না। তবে এ আদেশ তাদের মতে, মন্দের ভাল। এদিকে বন্দর সূত্র জানিয়েছে, বহির্নোঙ্গরে বর্তমানে যে পরিমাণ জাহাজ অপেক্ষমাণ রয়েছে তার মধ্যে ৩৩টিই কন্টেনার বোঝাই। এমনিতেই বন্দরে থাকা কন্টেনার যে ধীর গতিতে হ্যান্ডলিং হচ্ছে তাতে জেটি থেকে জাহাজগুলোর বন্দর ত্যাগে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ সময় নেবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, চট্টগ্রাম বন্দরে জিসিবি, সিসিটি ও এনসিটিতে বার্থিংয়ে থাকা যেসব কন্টেনার রয়েছে সেগুলো খুব ধীরগতিতে নামছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ আগেই জানান দিয়েছে, প্রতিদিন যে পরিমাণ কন্টেনার জাহাজ থেকে নামবে ঠিক সে পরিমাণ রফতানির পণ্য উঠানো হবে। এদিকে, একশভাগ স্টোর রেন্ট মওকুফের ঘোষণা আজ সোমবার শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বন্দর ব্যবহারকারীরা অচলাবস্থার অবসানে রেন্ট মওকুফের সময় আরও বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স এ্যাসোসিয়েসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন ছয় ধরনের পণ্য অফডকে সংরক্ষণের নির্দেশনা নিঃসন্দেহে ভাল সংবাদ। কিন্তু বিষয়টি ইতিবাচক কি সুফল বয়ে আনবে তা দেখার বিষয়। বার্থ অপারেটরস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে একরাম জনকণ্ঠকে জানান, অফডকে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার কন্টেনার সংরক্ষণের সুবিধা রয়েছে। এতে করে বন্দরে বর্তমানে যে পরিমাণ কন্টেনার রয়েছে সেক্ষেত্রে এটি কিছুই না। তার মতে, বন্দর থেকে কন্টেনার ও কন্টেনার থেকে পণ্য ডেলিভারি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত জট পরিস্থিতির অবসান হবে না। পণ্যের যারা আমদানিকারক তাদের অধিকাংশকে আমদানির কন্টেনার নেয়া বা পণ্য খালাস কাজে উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়া কন্টেনার জট হ্রাসে বন্দরের পাশাপাশি কাস্টমস, ব্যাংক, পণ্য পরিবহনে সংশ্লিষ্ট খাতগুলো সক্রিয় হতে হবে। লকডাউন পরিস্থিতিতে সর্বত্র যে অচলাবস্থা নেমে এসেছে বিশেষ করে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন খাত ব্যাপকভাবে সক্রিয় না হলে অফডকে ছয় ধরনের পণ্য বোঝাই কন্টেনার নিয়ে যাওয়ার আদেশ কার্যকর কোন সুফল বয়ে আসবে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
×