ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষ বাঁচানোর ব্রত

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ২০ এপ্রিল ২০২০

মানুষ বাঁচানোর ব্রত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব মহামারীকালে বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলার স্বচ্ছ চিত্র জনসম্মুখে উপস্থাপনের মাধ্যমে। দফায় দফায় তিনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও বৈঠকে সরাসরি নির্দেশনা প্রদান করছেন। এ পর্যায়ে তিনি স্থানীয় পর্যায়ের সার্বিক পরিস্থিতি সন্বন্ধে খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রয়োজনে প্রাসঙ্গিক জিজ্ঞাসার মধ্য দিয়ে সার্বিক চিত্র অনুধাবনের প্রয়াস পাচ্ছেন। বিষয়টি টেলিভিশনে প্রদর্শনের কারণে দেশবাসী সরাসরি ওয়াকিফহাল থাকছেন সরকারের সদিচ্ছা, তৎপরতা এবং সর্বোচ্চ সক্রিয়তার বিষয়ে। বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা বিভাগের ৯টি জেলার জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, সংসদ সদস্য, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সিভিল সার্জন, চিকিৎসক-নার্স, সশস্ত্রবাহিনী এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট কিছু নির্দেশ দেন। এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম দেখলে ছাড় দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি। মানুষের মনোবল বৃদ্ধিই এই মহাদুর্যোগকালে সবচেয়ে বড় বিষয়। সরকারের নির্বাহী প্রধানের সংগ্রামী মনোভাব দেশবাসীকে যে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা ও শক্তি জোগাচ্ছে সেটি স্পষ্ট। করোনজনিত ছুটিতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড প্রায় স্থবির হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের, যারা দিন এনে দিন খাওয়ার মতো অর্থনৈতিক স্তরে আছেন তারাই সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। প্রতিদিনের খাদ্য সংগ্রহই তাদের জন্য বড় সমস্যা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে সম্পূর্ণ সজাগ ও সচেতন সেটি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ থেকেই স্পষ্ট হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে জোরালো হয়েছে। দিনমজুর ও মেহনতী শ্রেণীর মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিতে আরও ৫০ লাখ দরিদ্র লোককে ১০ টাকা কেজিতে চাল সরবরাহের জন্য ওএমএস কার্ড সুবিধার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষকে আশ্বস্ত করার বিষয়টি এবং নতুন রোগকে ঠেকিয়ে দেয়ার জন্য সঠিক নিয়মে সংগ্রাম করার প্রেরণাই তার ভাষণ থেকে দেশবাসীর মূল প্রাপ্তি। দুর্যোগে ভরসা ও মনোবল অত্যন্ত সহায়ক। প্রধানমন্ত্রী দলমত না দেখে সঠিক তালিকা তৈরি করে প্রকৃত অসহায় মানুষের কাছে ত্রাণসহ সরকারের সহযোগিতা পৌঁছে দিতে জনপ্রতিনিধি, দলের নেতাকর্মী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তার ভাষায়, দলমত নির্বিশেষে মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখে তাদের তালিকা তৈরি করে প্রকৃত অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে হবে। একজন জননেত্রীর কাছ থেকে দেশবাসী তো সেটিই আশা করে। বিশেষ কোন দলের নন, তিনি যে দেশের প্রতিটি নাগরিকের কল্যাণে এবং দেশের অগ্রগতির জন্য কাজ করে চলেছেন সেটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মকান্ড ও পরিকল্পনা থেকেই জনতার কাছে স্পষ্ট হয়েছে। মহামারীকালে মানুষ বাঁচানোর যে ব্রত শেখ হাসিনা নিয়েছেন সেটি জাতি কখনই বিস্মৃত হবে না বলে আমাদের বিশ্বাস। বঙ্গবন্ধুকন্যা হিসেবে তিনি জাতির প্রিয়ভাজন ছিলেন প্রথম থেকেই। কিন্তু সরকারপ্রধান হিসেবে বর্তমানে তিনি সাধারণ মানুষকে রক্ষার, সোজা ভাষায় মানুষ বাঁচানোর যে ব্রত নিয়েছেন তাতে সত্যিকারার্থেই তিনি গরিব-দুঃখী খেটে খাওয়া মানুষের মাতৃতুল্য মমত্ববোধ ও সক্রিয়তার দৃষ্টান্তই স্থাপন করে চলেছেন। দেশবাসীর প্রত্যাশা, ত্রাণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে। কোন নয়ছয় পরিলক্ষিত হবে না। এক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান যে কঠোর তাতে কারও সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই।
×