ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা শনাক্ত মাত্র আটজন ॥ সামাজিক দূরত্ব মানার সফলতা

এক অঙ্কে নামল আক্রান্ত

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ২০ এপ্রিল ২০২০

এক অঙ্কে নামল আক্রান্ত

দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা রোগী এক অঙ্কে নেমে এসেছে। গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের পর দেশটির কাছে প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়। রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় রোগতত্ত্ব বিভাগের এক হিসাবে বলা হয়, শনিবার রাত পর্যন্ত দেশটিতে মাত্র আট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু মহামারী আকার ধারণ করে। খবর আলজাজিরা ও বিবিসি অনলাইনের। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন রবিবার বলেন, তার দেশে করোনা আক্রান্ত এক অঙ্কে নেমে আসার ঘটনা ছোঁয়াচে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় একটি মাইলফলক। এটি অন্য দেশের কাছে উদাহরণ হতে পারে। তিনি বলেন, বিশ্বের যেসব দেশকে করোনাভাইরাস মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে তাদের কাছে দক্ষিণ কোরিয়া উদাহরণ হতে পারে। কারণ প্রথম দিকে চীনের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট ১০ হাজার ৬শ’ ৬১ জন করোনা রোগী ধরা পড়ে। এতে মারা গেছে মাত্র ২৩৪ জন। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি দেশটিতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তবে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা লাফিয়ে বাড়তে থাকে। এদিকে করোনা রোগী এক অঙ্কে নেমে এলেও দেশটি সামাজিক দূরত্বের নিয়ম এখনই তুলে দিচ্ছে না। ইয়ানহোপের এক খবরে বলা হয়েছে, আগামী ৫ মে পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় সামাজিক দূরত্বের নিয়ম বলবৎ থাকবে। পাশাপাশি ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্রসমূহ, খেলাধুলা ও যে কোন ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চাং শি কুন বলেছেন, আগামী ছুটির দিনগুলোতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা নিয়ে আমি চিন্তিত হয়ে পড়েছি। তিনি বলেন, সামাজিক দূরত্ব না মানলে পরিস্থিতি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। এদিকে করোনাভাইরাসের এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেও দেশটিতে সম্প্রতি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারপরও দেশটি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে। করোনাভাইরাসের কারণে ৭৬ দিন পর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে সম্প্রতি লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এই উহান শহর থেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। এরপর ২৩ জানুয়ারি শহর লকডাউন করে দেয় চীন। লকডাউন তুলে নেয়া উপলক্ষে শহরটি বর্নিল আলোয় সাজিয়ে তোলা হয় শহরটি। সব সড়ক ও রেলযোগাযোগ ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। লকডাউন প্রত্যাহারের পর থেকে প্রায় দুই শ’ ফ্লাইট ছেড়ে যায়। চীনের ূলভূখণ্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ফের কিছুটা বাড়ায় সংক্রমণের আরেকটি প্রবাহ শুরু হতে পারে আশঙ্কায় শুধু সুস্থ লোকজনকেই শহর ছাড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য অংশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে জানুয়ারির শেষ দিকে এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার শহরটি অবরুদ্ধ করে দেয় চীন। সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উহানের ৫০ হাজারেরও বেশি লোক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল এবং এতে আড়াই হাজারেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি নতুন আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে আসায় আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু হয়। হুবেই প্রদেশের এই রাজধানী শহরে গত ২১ দিনে নতুন নিশ্চিত সংক্রমণের মাত্র তিনটি ঘটনা ঘটে। করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ অঙ্গরাজ্যের সব, পাশাপাশি ইউএস ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, নর্দান মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ, ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া, গুয়াম ও পুয়ের্তো রিকোসহ দেশটির সব অঞ্চল ফেডারেল দুর্যোগ চলছে। দেশটির প্রখ্যাত জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন সাত লাখের বেশি। এ সংখ্যা চীন, ইতালি, স্পেনসহ বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় বেশি।
×