ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বকেয়া বেতন দাবি ॥ সড়ক অবরোধ

লকডাউন ভেঙ্গে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ১৭ এপ্রিল ২০২০

লকডাউন ভেঙ্গে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে লকডাউন ভেঙ্গে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। গাজীপুরে অন্তত ২২টি কারখানার শ্রমিক এবং নারায়ণগঞ্জের দুটি কারখানার শ্রমিক বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে। শ্রমিকদের অবরোধের ফলে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ পুলিশের মধ্যস্থতায় চলতি মাসের মধ্যে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা শান্ত হয়। তারা আন্দোলন কর্মসূচী স্থগিত করে ফিরে যায়। এদিকে বকেয়া বেতন দাবিতে সোনারগাঁয়ের টিপরদী এলাকার একটি নিট কম্পোজিট কারখানার শ্রমিকরা সড়ক করেছেন। বৃহস্পতিবার এসব কর্মসূচী পালন করেন শ্রমিকরা। খবর স্টাফ রিপোর্টারদের। গাজীপুরে বেতন ভাতা পরিশোধ দাবিতে ফের লকডাউন ভেঙ্গে বৃহস্পতিবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে অন্তত ২২টি পোশাক কারখানার শ্রমিক। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কসহ কয়েকটি সড়কের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ পুলিশের মধ্যস্থতায় চলতি মাসের মধ্যেই শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন কর্মসূচী স্থগিত করে ফিরে যান। গাজীপুর শিল্প পুলিশের এএসপি আরিফ রাইয়ানসহ শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আড়াই সহ¯্রাধিক কারখানার অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষা পোশাক পিপিই, মাস্ক, গ্লাভসসহ গোখাদ্য ও ওষুধ উৎপাদনের জন্য ১২০টি কারখানা চালু রাখা হয়েছে। কয়েকদিন ধরেই এসব পোশাক কারখানার শ্রমিক তাদের মার্চের বেতন ভাতাসহ বকেয়া পাওনাদি পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বেশিরভাগ কারখানার শ্রমিকের পাওনাদি পরিশোধ করা হয়েছে। তবে নানা জটিলতার কারণে কিছু কারখানার শ্রমিকের পাওনাদি পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। কয়েকটি কারখানার কর্তৃপক্ষ তাদের শ্রমিকদের বেতন ভাতা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের পাওনাদি হাতে হাতে পরিশোধ করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন ভাতাদি পরিশোধ করতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে বেতন ভাতা না পেয়ে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। তারা সড়ক মহাসড়কও অবরোধ করে। বৃহস্পতিবার ভোগড়া, কড্ডা, নাওজোর, হোতাপাড়া, কালিয়াকৈর, টঙ্গী ও তিন সড়কসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ২২টি পোশাক কারখানার শ্রমিক পৃথকভাবে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কসহ কয়েকটি সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে। নারায়ণগঞ্জ ॥ বৃহস্পতিবার সকালে ফতুল্লার পোস্ট অফিস চত্বর ও পুলিশ লাইন এলাকায় লকডাউন ভেঙ্গে করোনার ভয় উপেক্ষা করে হামিদ ফ্যাশন ও টিএস স্পোর্টস লিমিটেড নামের দুটি পোশাক কারখানার প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা রাস্তায় ইটের স্তূপ ও সিমেন্টের পিলার ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। শ্রমিকরা এই সড়কে দুই ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নিয়ে দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা তাদের অবরোধ তুলে নেন। সোনারগাঁ ॥ সোনারগাঁয়ে টিপরদী এলাকায় ইউসান নিট কম্পোজিট লিমিটেডের শ্রমিকরা ৭ মাসের বকেয়া বেতন দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে আন্দোলন করে পরে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ফলে মহাসড়কের যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে কাঁচপুর শিল্প ও হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিদের বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ^াস দিলে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে যান। শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দেই দিচ্ছি করে আমাদের ৭ মাসের বকেয়া পড়ে আছে। ইউসান নিট কম্পোজিট লিমিটেডের ম্যানেজার মোঃ আকতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
×