ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় ত্রাণের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ১০:৫০, ১৭ এপ্রিল ২০২০

সাতক্ষীরায় ত্রাণের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ ত্রাণের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ করেছে বাকাল ইসলামপুরের সহস্রাধিক ভূমিহীন নারী-পুরুষ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে কালীগঞ্জ সড়কে এ বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে বাঁকাল ইসলামপুর (চর) ভূমিহীন জনপদের ত্রাণবঞ্চিতরা অংশ নেন। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন সিপিবির জেলা সম্পাদক আবুল হোসেন, খেত মজুর সমিতির জেলা সভাপতি ইয়ার আলী, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আশরাফুল আলম, মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ। পরে ত্রাণ পাইয়ে দেয়ার আশ^াস দিয়ে তাদেরকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। আবুল হোসেন জানান, বাঁকাল এলাকার ইসলামপুর চর এলাকায় ভূমিহীন জনপদে প্রায় ৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন। এ পর্যন্ত সেখানে কেউ ত্রাণ পাননি। বার বার বলার পরেও স্থানীয় কাউন্সিলর কর্ণপাত করেননি। তাই বাধ্য হয়ে বিক্ষোভে নামতে হয়েছে। কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম জানান, সেখানে দেড় হাজারের মতো ভোটার রয়েছে। সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ত্রাণ পাইয়ে দেয়ার আশ^াস দিলে তারা বিক্ষোভের সমাপ্তি ঘোষণা করে যার যার অবস্থানে চলে যায়। রংপুর নিজস্ব সংবাদদাতা রংপুর থেকে জানান, খাদ্যের দাবিতে রংপুর সদর-৩ আসনের এমপি প্রয়াত জাপা চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদের রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকায় অবস্থিত পল্লী নিবাস বাস ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে শত শত নারী পুরুষ। এছাড়াও পল্লী নিবাস বাস ভবনের সামনে রংপুর ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে তারা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ জীবিত থাকাকালে তিনি এলাকার গরিব সহায় সম্বলহীন মানুষসহ রংপুরের সকল স্তরের মানুষের পাশে থাকতেন। মানুষকে সাহায্য দিতেন। অথচ তার ছেলে সাদ এরশাদ এমপি হবার পর থেকে এলাকায় আসেন না। তিনি আমাদের কোন খোঁজ খবর নেন না। করোনাভাইরাস মহামারী আকারে দেখা দেবার পর তিনি রংপুরে আসেননি এমনকি কোন খাদ্য বিতরণ করার কোন ব্যবস্থা নেননি। যশোর স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, ত্রাণের দাবিতে যশোরে ফের কয়েক শ’ মানুষ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পাশে খুলনা-বেনাপোল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন এলাকাবাসী। এ সময় মহাসড়কের দু’পাশে পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও জনপ্রতিনিধিরা এসে ত্রাণ দেয়ার আশ্বাসে অবরোধ তুলে দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শংকরপুর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পাশে অবস্থান নেন শ্রমজীবী মানুষেরা। এক পর্যায়ে কয়েক শ’ লোক জড়ো হলে তারা ত্রাণের দাবিতে খুলনা-বেনাপোল মহাসড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। বিক্ষোভকারীরা জানান, লকডাউনের কারণে তারা কাজে যেতে পারছেন না। অথচ তাদের ঘরে খাবার ফুরিয়ে গেছে। কোন খাদ্য সহায়তাও তারা পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় তাদের রাস্তায় নামা ছাড়া কোন উপায় নেই। পরে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে হাজির হন। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তাদের ত্রাণ সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিলে অবরোধকারীরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন। মাদারীপুর নিজস্ব সংবাদদাতা মাদারীপুর থেকে জানান, ঘরে খাবার না থাকায় রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে মাদারীপুরের মস্তফাপুর ইউনিয়নের কর্মহীন মানুষ। কাজ নেই, খাবার নেই, সরকারী ত্রাণ দেয়ার কথা থাকলেও এখন কারও ঘরে কোন প্রকার ত্রাণ পৌঁছায়নি। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকায় অবরোধ করে দুই শতাধিক নি¤œ আয়ের কর্মহীন মানুষ। এতে অংশ নেয় নারী ও শিশুরাও। তাদের একটাই দাবি বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু খাবার প্রয়োজন অন্তত তার ব্যবস্থা করুক সরকার। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা জানান, আমাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়ার কথা থাকলেও সেই খাবার কেউ দিচ্ছে না। আমাদের কাজকর্ম নেই, কাজে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দিচ্ছে, তাহলে আমরা কি করে খাবার আনব। মস্তফাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কুদ্দুস মল্লিক জানান, আমার ইউনিয়নে যত জনসংখ্যা আছে সে পরিমাণ ত্রাণ আমি পাইনি। সবাইকে দেয়ার মতো ত্রাণ এখনও আসেনি। আসলে দেয়া হবে। কুড়িগ্রাম স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, উলিপুরে ত্রাণের দাবিতে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা রাস্তায় বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে শুয়ে রাস্তা অবরোধ করেন সেখানকার শতাধিক নারী-পুরুষ। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উলিপুর-রাজারহাট রাস্তা অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে উলিপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরবর্তীতে সঠিক তালিকা অনুযায়ী ত্রাণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে রাস্তা অবরোধ তুলে নেয়া হয়। জানা গেছে, জেলার উলিপুর-রাজারহাট রাস্তার সরফদি গ্রামের শতাধিক নারী-পুরুষ কয়েক দফা ত্রাণ বিতরণ হলেও তাদের কেউই খাদ্য সহায়তা পাননি। ফলে সবাই জড়ো হয়ে খাদ্যের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে এসে রাস্তায় সেøাগান দিতে থাকেন। তাছাড়াও যে কোন যানবাহন আসার সঙ্গে সঙ্গে তারা রাস্তায় শুয়ে পড়েন। ওই গ্রামের আবু মিয়া জানান, আমরা নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছি। কিন্তু এখানকার কোন জনপ্রতিনিধি আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন না। তাদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা তাদের বাছাই করা লোককে রিলিফ দেয়। যারা তাদের ভোট দেয় নাই, তাদের দেয় না।
×