ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটবলে ফিরতে ব্যাকুল মুন্না

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ১৬ এপ্রিল ২০২০

ফুটবলে ফিরতে ব্যাকুল মুন্না

রুমেল খান ॥ প্রতিভা থাকলে তা বিকশিত হবেই। কেউ তাকে দমিয়ে রাখতে পারে না। তাকে শুধু সুযোগ করে দিতে হয়। কিন্তু অপার সম্ভাবনাময় সেই প্রতিভা বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে অঙ্কুরেই। সেটা ‘ইনজুরি’ নামক এক সর্বনাশা অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনায়। এমনই অবস্থা হয়েছে ১৬ বছর বয়সী সিরাজুম মনির মুন্নার। নীলফামারীর দরিদ্র অথচ মেধাবী ও তুখোড় এক ফুটবলার। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয় অনুর্ধ-১৫ ফুটবল দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে নাম ছিল তার। এছাড়া বসুন্ধরা কিংসের বয়সভিত্তিক দলেও (ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রম) ‘ইয়েস কার্ড’ পেয়েছিল। সতীর্থরা যখন মাঠ দাপিয়ে ফুটবল খেলছে, তখন মুন্না অসহায় দৃষ্টি নিয়ে তাদের খেলা দেখছে গ্যালারির দর্শক হয়ে! মারাত্মক চোট পাওয়ায় পাঁচ মাস ধরে মাঠে নেমে খেলতে না পারার যন্ত্রণায় পুড়ছে অহর্নিশ। অপারেশন না করার ফলে চোটের অবস্থা এখন প্রকট আকার ধারণ করায় ক্যারিয়ার হয়ে পড়েছে সঙ্কটাপন্ন। এখন তার দরকার অপারেশনের জন্য কমপক্ষে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা (ওষুধের খরচসহ)। মুন্নাকে কেউ আর্থিক সাহায্য করতে চাইলে ০১৮৭৮১৯৪৫৭৩ বিকাশ নম্বর এবং নীলফামারীর সোনালী ব্যাংকের শাখায় একাউন্ট নম্বর ৫৩০৯০০১০০০০২৯-তেও টাকা জমা দিয়ে সাহায্য করতে পারেন। মানুষ ভাবে এক, আর হয় আরেক। তার জীবনের চলার পথ কখনই মসৃণ নয়। প্রতিটি বাঁকেই রয়েছে বিপদ, সমস্যা আর বাধা। এই যেমন মুন্না। ২০১৯ সালের নবেম্বর ৫ ফুট ৪ ইঞ্চির অধিকারী মুন্নার জীবন এলোমেলো হয়ে যায়। নীলফামারীর জেলা ফুটবল লীগে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হয়ে খেলছিল সে। লেফট ব্যাক পজিশনে খেলা মুন্নার সেদিনের প্রতিপক্ষ দল ছিল নীলফামারী টাউন ক্লাব। খেলার একপর্যায়ে মারাত্মক চোট পায় সে। ছিঁড়ে যায় ডান পায়ের লিগামেন্ট। এরপর মুন্না চোট নিয়ে শরণাপণœ হন বসুন্ধরা কিংসের ফিজিওর কাছে। তিনি মুন্নাকে এমআরআই করানোর পরামর্শ দেন। সেটার জন্য মুন্না যায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডাক্তার নন্দকুমারের কাছে। তিনি জানান, অপারেশন করাতে হবে। লাগবে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু দরিদ্র পরিবার হওয়ায় মুন্নার পক্ষে তখন এই টাকা যোগাড় করা অসম্ভব ছিল (বাবা একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে ২০১২ সালে অবসর নেন, তার মোট ২ ছেলে ও ২ মেয়ে)। তাই আজ অবধি অপারেশন করা হয়ে উঠেনি তার। অবশ্য বসুন্ধরা কিংসের সাধারণ সম্পাদক মিনজাজুল ইসলাম মিনহাজ গত জানুয়ারিতে মুন্নাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি মুন্নাকে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করাবেন। সে অনুযায়ী অনেক দৌড়-ঝাঁপ করে পাসপোর্টও করে ফেলেছিল মুন্না। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে হওয়ায় সেই প্রক্রিয়াও থমকে যায়। ফলে মুন্না এখন দেশের কোন হাসপাতাল থেকেই অপারেশন করাতে আগ্রহী। জনকণ্ঠর কাছে বাংলাদেশের রহমত মিয়া ও ব্রাজিলের মার্সেলোকে নিজের আর্দশ ফুটবলার মানা মুন্নার আকুতি, ‘এত টাকা আমার পরিবার কোথা থেকে পাবে? কেউ যদি আমাকে অপারেশন করানোর জন্য এই টাকাটা দিতেন, তাহলে আমি অপারেশন করিয়ে সুস্থ হয়ে আবারও ফুটবল খেলে উপার্জন করে পরিবারকে সাহায্য করতে পারতাম। এখন তো চোখে ঘোর অন্ধকার দেখছি! আমাকে নিয়ে যদি একটা রিপোর্ট করতেন, তাহলে হয় তো এটা পড়ে অনেকেই আমার সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারে।’
×