ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘সর্বকালের সেরা ফিনিশার ধোনি’

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১৬ এপ্রিল ২০২০

‘সর্বকালের সেরা ফিনিশার ধোনি’

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ ক্রিকেটে ব্যাট হাতে ফিনিশিং দারুণ এক রোমাঞ্চের ব্যাপার। স্থায়ুর চাপ সামলে টেল এন্ডারদের নিয়ে ম্যাচ বের করে আনতে ‘বিশেষ’ পারদর্শিতার জন্য কালে কালে এমন অনেক ব্যাটসম্যানের আবির্ভাব হয়েছে। ভিভ রিচার্ডস, জাভেদ মিঁয়াদাদ, এবি ডি ভিলিয়ার্স, অরবিন্দ ডি সিলভা, মার্ক বাউচার, ল্যান্স ক্লুজনার, আবদুর রাজ্জাক, মাইকেল বেভান... তালিকায় অস্ট্রেলিয়ার মাইক হাসিও থাকবেন ভালভাবেই। তবে সাবেক অস্ট্রেলিয়ান তারকার চোখে মহেন্দ্র সিং ধোনিই সর্বকালের সেরা ফিনিশার। কেন? ‘ধোনি মাথা ঠা-া রাখতে জানে। প্রতিপক্ষকে আগে হার মানতে বাধ্য করে। অবিশ্বাস্য জোর আছে ওর আছে। ও খুব ভাল করেই জানে, যখনই বাউন্ডারি পার করার দরকার হবে, সেটা ও করতে পারবে। এ রকম আত্মবিশ্বাস ওর। সত্যি বলতে আমার নিজের ওপর অতটা আত্মবিশ্বাস কখনোই ছিল না।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘মানসিক ক্ষমতা, শীতলতা এবং শক্তি; এ তিনটি গুণ ধোনিকে অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে। ও খুব ভাল করে জানত, যখন ছক্কার দরকার তখন ভালভাবে আদায় করতে পারবে। আমার মতে এ কারণেই সে সর্বকালের সেরা।’ ব্যাট বা বলের শৈলীতে খেলায় উত্তেজনা আনা ক্রিকেটার ইতিহাস কম দেখেনি। চার-ছক্কার বন্যায় কিংবা সুইং-বাউন্সার বা স্পিনের বিষে ম্যাচের গল্প বদলে দেয়ার ক্রিকেটারও অনেকই আছেন। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বলে-রানের হিসেব কষে কষে, স্থায়ু নির্লিপ্ত রেখে দলকে জিতিয়ে নিয়ে আসা ক্রিকেটার? সে ‘ফিনিশার’দের সংখ্যা হাতে গোনা। ভারতীয় জাতীয় দলকে কি দেননি ধোনি? ২০০৭ টি২০ বিশ্বকাপ দিয়ে শুরুর পর, চার বছরের ব্যবধানে ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়। ২০১৩ সালে তার হাতে ওঠে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পুরস্কার। রঙিন পোশাকের সাফল্যর পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটেও ধোনি ছিলেন অতুলনীয়। ভারতকে দীর্ঘ সময় রেখেছিলেন র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। শুধু জাতীয় দল নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটেও ধোনি ছিলেন মাস্টারমাইন্ড। আইপিএলের শিরোপা জিতেছেন চারবার। রানার্সআপ তিনবার। ২২ গজে তার সাফল্যর কমতি নেই। দলগত অর্জনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত খাতাও টইটুম্বুর। কোন কমতি নেই। এ জন্যই ভারতীয় ক্রিকেট বোদ্ধারা তাকে মনে করেন একজন পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেটার। খেলার মাঠে তিনটি গুণ তাকে করেছে অন্য সবার চেয়ে আলাদা। কোন তিনটি গুণে ধোনি এগিয়ে? গ্রেট খেলোয়াড় হতে কী লাগে, তা নিয়েও কথা বলেছেন হাসি,‘ গ্রেট খেলোয়াড়েরা একটা হার নিয়ে বেশিক্ষণ পড়ে থাকে না। হারলে পরের ম্যাচের দিকে মনোযোগ দেয়। একটা হার বা জয়কে তাদের চিন্তায় প্রভাব ফেলতে দেয় না। সব সময়ই তাদের ভাবনা ধারাবাহিক, মাথা পরিষ্কার। সেটা এমএস ধোনিই হোক বা রিকি পন্টিং।’ ৩৮ বছর বয়সী ধোনি গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের পর আর মাঠে নামেননি। অবসরও নেননি। অনেকের মতে বিশ্বজয়ী তারকার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ। হয়ত অস্ট্রেলিয়ায় এ বছর টি২০ বিশ্বকাপ খেলে অবসর নেয়া ইচ্ছা ছিল ধোনির। সে জন্য আইপিএলে পারফর্ম করার তাগিদ ছিল। কিন্তু মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে আইপিএল তো বটেই, এমনকি এশিয়া কাপ, টি২০ বিশ্বকাপের আকাশেও শঙ্কার কালো মেঘ। ভারতীয় ক্রিকেটের মহাতারকার ক্যারিয়রাটা তাই মাঠের বাইরে থেকেই শেষ হয়ে যেতে পারে!
×