ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় দাফন না করায় আনন্দিত এলাকাবাসী

মাজেদের লাশ সোনারগাঁ থেকে তুলে নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ১৩ এপ্রিল ২০২০

 মাজেদের লাশ সোনারগাঁ থেকে তুলে নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী মাজেদের লাশ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে অপসারণের দাবিতে কবরস্থানের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। বিক্ষোভে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ যোগ দেন। এদিকে খুনী মাজেদের লাশ ভোলায় দাফন না করায় আনন্দ প্রকাশ করেছে স্থানীয় লোকজন। লাশ দাফন না করায় ভোলাবাসী কলঙ্কমুক্ত হয়েছে বলেও দাবি করেন তারা। খবর নিজস্ব সংবাদদাতাদের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানতে সপরিবারে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (চাকরিচ্যুত) আব্দুল মাজেদের লাশ সোনারগাঁয়ে হোসেনপুর এলাকায় দাফন করায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠন নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের লোকজন কবরস্থানের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। রবিবার সকাল ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল করে তারা বলেন, দ্রুত খুনী মাজেদের লাশ সোনারগাঁ থেকে তুলে অন্যত্র দাফন করতে হবে। তা না হলে নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে লাশ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দেবেন বলেন জানান বিক্ষোভকারীরা। এর আগে রবিবার ভোর চারটায় কড়া পাহারার মধ্য দিয়ে সোনারগাঁর শম্ভুপুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে তার শ্বশুর হাজী শামসুদ্দিন সরকারের পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুনী মাজেদের চাচা শ্বশুর আলী আক্কাস ও শ্যালক শহিদুজ্জামানসহ পরিবারের নিকটাত্মীয়-স্বজনরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাতের আঁধারে জাতির এ কলঙ্ক এনে দাফন করায় আমাদের কলঙ্কিত করা হয়েছে। এ কলঙ্ক মোচনের জন্য এ লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে সোনারগাঁকে কলঙ্কমুক্ত করা হোক। এর আগে শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী বরখাস্ত ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর তার লাশ ভোলার মাটিতে না পাঠানোর দাবি জানান ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের সাংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, কাউকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে এ খুনীকে সোনারগাঁয়ে দাফন করায় আমাদের জন্য লজ্জাজনক ও ন্যক্কারজনক। এ লাশ তোলার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামসুল ইসলাম বলেন, খুনী মাজেদের লাশ তার পৈত্রিক বাড়ি ভোলায় দাফন না করে সোনারগাঁ করায় আমরা ক্ষুব্ধ। এতে সোনারগাঁকে কলঙ্কিত করা হয়েছে বলে মনে করি। এদিকে বঙ্গবন্ধুর খুনী আব্দুল মাজেদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর তার লাশ তীব্র প্রতিবাদের মুখে তার জন্মস্থান ভোলায় দাফন না করা যায়নি। এর মধ্যে দিয়ে ভোলা কলঙ্কমুক্ত হলো বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা বিভিন্নভাবে তাদের আনন্দ উচ্ছাস অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। খুনী মাজেদের লাশ যাতে বোরহানউদ্দিনে দাফন না করা হয়, তার জন্য শনিবার বিকেল থেকে সেখানে ভোলা-২ আসনের সাংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলের নেতৃত্বে শহরে বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে মানববন্ধন করেন। এসময় এমপি মুকুল বুকে প্লাকার্ড ঝুলিয়ে বলেন, ফাঁসির পর খুনী মাজেদের বাড়ি বোরহানউদ্দিনে তার লাশ যাতে না আনা হয়। লাশ ভোলায় আনা হলে তা প্রতিহত করে মেঘনায় ভাসিয়ে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি করেন। একই দাবিতে লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন। এছাড়াও ভোলা পৌর মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মাজেদের লাশ ভোলায় আসলে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। অবশেষে প্রতিবাদের মুখে খুনী মাজেদের লাশ ভোলায় দাফনের জন্য আনা হয়নি। সাংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল বলেন, খুনী মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হওয়াতে আমরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বাসিত। তার ফাঁসির মাধ্যমে আমরা কলঙ্কমুক্ত হয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভোলা প্রেসক্লাব সভাপতি এম হাবিবুর রহমান মনে করেন, খুনী মাজেদ ভোলাবাসীর জন্য একটি কলঙ্ক। সেই খুনীর ফাঁসিতে আমরা আনন্দিত।
×