ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জীবনের জয়গানে বৈশাখ সংস্কৃতি সংবাদ

প্রকাশিত: ১১:২৩, ১৩ এপ্রিল ২০২০

  জীবনের জয়গানে বৈশাখ সংস্কৃতি সংবাদ

মনোয়ার হোসেন ॥ চার দেয়ালের মাঝে বন্দী এখন জীবন। প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা থেকে বাঁচতে হলে চাই বিচ্ছিন্নতা। স্বভাবতই সামাজিক বিচ্ছিন্নতায় বাকি সবকিছুর মতোই থমকে গেছে উৎসব-আনুষ্ঠানিকতা। তাই নিজেকে সুরক্ষা করার সেই সঙ্গনিরোধে জনসমাগম ঘটেÑএমন কোন অনুষ্ঠান হবে না প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে। রমনা বটমূলে অনুষ্ঠিত হবে না ছায়ানট আয়োজিত নববর্ষের প্রভাতী সঙ্গীতাসর। রাজপথে দেখা মিলবে না ঢাক-ঢোলের তালে রকমারি শিল্প-কাঠামো নিয়ে এগিয়ে চলা মঙ্গল শোভাযাত্রা। তাই বলে থেমে থাকছে না বর্ষবরণের আয়োজন। টিভি পর্দা থেকে ফেসবুকে থাকছে বঙ্গাব্দ ১৪২৭ আবাহনের বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা। নববর্ষকে স্বাগত জানাতে তেমনই এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে থিয়েটার কর্মীদের প্ল্যাটফর্ম সংস্কৃতিকর্মীবৃন্দ। এই প্ল্যাটফর্মে পয়লা বৈশাখে ফেসবুকের সংস্কৃতিকর্মীবৃন্দ নামের পেজে অনুষ্ঠিত হবে বর্ষবরণের বৈচিত্র্যময় আয়োজন। সেই সুবাদে ঘরে বসেই উৎসবে শামিল হবে শহরবাসী থেকে দেশবাসী। দিনভর চলবে বৈশাখী উৎসব। সকাল দশটায় শুরু হয়ে তিন ধাপে রাত ১১টা অবধি অন্তর্জালে সরাসরি সম্প্রচার হবে এ অনুষ্ঠান। ফেসবুকে লাইভকৃত অনুষ্ঠানের পরিকল্পনায় মিশে থাকবে পারিবারিক আবহ। আড্ডার সঙ্গে বৈশাখী গান, কবিতা আবৃত্তি, অভিনয়, নৃত্য পরিবেশনা, পাপেট শোসহ নানা অনুষঙ্গে সাজানো হয়েছে এ অনুষ্ঠান। ঘরে বসে উপভোগ করতে পারা শিকড়ের কথা বলা অনুষ্ঠানটির শিরোনাম ‘করোনাকালে বৈশাখ অন্তর্দর্শন’। ডিজিটাল বর্ষবরণ উৎসবটি প্রতিপাদ্য ‘এক সুরে বাজে একলা বাজানো শাঁখ/জীবনের জয়গানে আমাদের বৈশাখ’। আয়োজন প্রসঙ্গে নাট্যদল বটতলার শিল্প-নির্দেশক মোঃ আলী হায়দার জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা কয়েকজন নাট্যকর্মী মিলে এ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা। প্রাণঘাতী মহামারীর কারণে যেন উৎসবের আমেজ থেকে মানুষ বঞ্চিত না হয়Ñসেই ভাবনারই প্রতিফলন ‘করোনাকালে বৈশাখ অন্তর্দর্শন’। বাইরে অনুষ্ঠান না হোক নিজের বাড়িতে বসেই উপভোগ করা যাবে এমন উৎসব। তাহলে পথেঘাটেও থাকবে না ভিড়ভাট্টা। আমরা চাই সবাই যেন নিজ অবস্থানে থেকে সামাজিক দূরত্ব রেখেই মিলিত হবে সম্প্রীতির বন্ধনে। পাশাপাশি এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে করোনাদুর্গত সংস্কৃতিকর্মীদের সহায়তারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুটি বিকাশ নম্বরে বেশ সাড়াও পাচ্ছি। সচ্ছল সংস্কৃতিকর্মীসহ অনেক শুভাকাক্সক্ষী বাড়িয়ে দিয়েছেন সহায়তার হাতটি। দুই ঘণ্টা করে তিন ধাপে মোট ছয় ঘণ্টাব্যাপ্তির অনুষ্ঠানের সূচনা হবে সকাল দশটায়। সুরের স্রোতধারায় এগিয়ে যাবে সকালের পর্ব। কুড়ি মিনিটের পরিবেশনায় বৈশাখের গান শোনাবেন শ্রাবণী মুখার্জী। এরপর বড়দের পাশাপাশি ছোটদের মন রাঙাতে উপস্থাপিত হবে পুতুলনাচ। কুড়ি মিনিটের পাপেট শো উপস্থাপন করবেন মা ও মেয়ে। তারা হলেন সায়মা করিম ও ফাবলিহা নওয়াল জুবী। এরপর দেখা মিলবে নাচের নান্দনিকতা। মা ও মেয়ের যুগলবন্দী পরিবেশনাটি উপস্থাপন করবেন তাহমিনা সুলতানা মৌ ও ওয়ানিয়া আলম মাহা। আবৃত্তি পরিবেশনার পাশাপাশি করোনায় করণীয় সম্পর্কে বলবেন ডাঃ ফাতেমা দোজা। অরিগামি শীর্ষক পরিবেশনা উপস্থাপন করবেন শারমিন ইতি। মা ও মেয়ের নাচের তালে শেষ হবে সকালের অধিবেশন। দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করবেন সামিনা হোসাইন প্রেমা ও প্রত্যয়ী প্রথমা রাই। সকালের পর্বের সঞ্চালনা করবেন সামিনা লুৎফা নিত্রা ও মোঃ আলী হায়দার। বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা অবধি চলবে দ্বিতীয় পর্ব। এ অধিবেশনে বৈশাখী গান শোনাবেন ফারহানা হাফিজ তানিয়া, চেতনা রহমান ভাষা ও হুমায়ুন আজম নেওয়াজ। প্রাণবন্ত আড্ডায় অংশ নেবেন দুই অভিনয়শিল্পী তারিক আনাম খান ও মৌটুসি বিশ্বাস। এছাড়াও আবৃত্তির সঙ্গে আড্ডায় যুক্ত হবেন মোহাম্মদ বারী। এই পর্বের সঞ্চালনা করবেন সেলিনা শেলী ও মাসুম রেজা।
×