ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কন্টেনার নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম বন্দর

প্রকাশিত: ১১:২১, ১৩ এপ্রিল ২০২০

 কন্টেনার নিয়ে বিপাকে  চট্টগ্রাম বন্দর

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ করোনা সতর্কতায় লাগাতার ছুটি ও লকডাউনে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। আমদানির তুলনায় কমেছে রফতানি। বিভিন্ন কলকারখানায় বন্ধ রয়েছে উৎপাদন। জনজীবন এমন বন্দীদশায় পড়েনি আগে কখনও। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা অজানা। অর্থনীতির অগ্রযাত্রা থমকে যাওয়ার সাক্ষ্যই দিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের সিংহদ্বার এই বন্দর এখন বিপাকে, হারিয়েছে তার স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি এখন নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কমে। কিন্তু যেটুকু আসছে তা-ও ডেলিভারি হচ্ছে না। ছুটির মধ্যে পণ্য ডেলিভারি নিলে রেন্ট মওকুফের ঘোষণা দেয়ার পরও প্রত্যাশিত তেমন সাড়া মিলছে না আমদানিকারকদের কাছ থেকে। কারণ, খাদ্যপণ্য উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছাড়া অধিকাংশ কলকারখানাই বন্ধ। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম রবিবার জনকণ্ঠকে বলেন, ছুটির মধ্যে পণ্য নিয়ে গেলে দ-ভাড়া মওকুফের সুবিধা দেয়ায় যেমন ফল আশা করা হয়েছিল, তেমন হচ্ছে না। কারণ আমদানি, ডেলিভারি, উৎপাদন, বাজারজাতকরণ বা রফতানি- পুরোটাই একটা চেইন। সবকিছু বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে বন্দরের ওপর। এমন অবস্থায় আমরা ইয়ার্ডে জায়গা বুঝে জাহাজ থেকে কন্টেনার নামাচ্ছি। অর্থাৎ এক হাজার ডেলিভারি হলে জাহাজ থেকে ওই পরিমাণ আনলোড। এতে করে জাহাজের অবস্থানকাল বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, করোনার কারণে সৃষ্ট মন্দাবস্থায় বন্দরে জাহাজ আসা অনেক কমেছে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যা ডেলিভারির ক্ষেত্রে। বন্দর থেকে পণ্য বের হওয়ার কাজটি স্বাভাবিক না থাকায় ইয়ার্ডে জায়গা কমে যাচ্ছে। ফলে কন্টেনার আনলোড ব্যহত হচ্ছে। কারখানা বন্ধ থাকায় রফতানির পণ্য নেই। জাহাজগুলো ফিরছে কিছু খালি কন্টেনার নিয়ে। তিনি বলেন, এই অবস্থার জন্য কাউকে দায়ীও করা যাবে না। এই দুর্যোগ মেনেই নিতে হচ্ছে। বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বড় সঙ্কট এখন ডেলিভারি পয়েন্টে। আমদানি কমা সত্ত্বেও গড়ে প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার কন্টেনার আসছে। কিন্তু বন্দর থেকে বের হচ্ছে এক হাজারের মতো। ফলে প্রতিদিনই জমা থেকে যাচ্ছে হাজারখানেক কন্টেনার। এভাবেই বন্দর ইয়ার্ডে কন্টেনারের পরিমাণ এখন ধারণ ক্ষমতার প্রায় কাছাকাছি। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৪৯ হাজার টিইইউএস কন্টেনার। করোনা শঙ্কায় অভ্যন্তরীণ বাজারে স্থবিরতার কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়েছে বিদেশ থেকে আসা হিমায়িত (রেফার) কন্টেনার নিয়ে। কারণ, বিশেষায়িত এমন কন্টেনারগুলো অন্য কন্টেনারের মতো ফেলে রাখা যায় না। মাছ, ফলসহ নানা ধরনের কাঁচা পণ্য থাকে এসব কন্টেনারে।
×