ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যেভাবে কাটছে সিমোনার লকডাউন

প্রকাশিত: ১১:০২, ১৩ এপ্রিল ২০২০

 যেভাবে কাটছে সিমোনার লকডাউন

জিএম মোস্তফা ॥ বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ ভাইরাস ইতোমধ্যেই স্থবির করে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। অনেক ক্রীড়াবিদের জীবনেও পরিবর্তন নিয়ে এসেছে তা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিশ্বের অনেক দেশই এখন লকডাউনে। এই মুহূর্তে ঘরে থাকাটাই সবচেয়ে নিরাপদ। যে কারণে এ্যাথলেটদের সূচীতেও নেমে এসেছে এই পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে রোমানিয়ার টেনি তারকা সিমোনা হ্যালেপের জীবনেও। আগে প্রচ- ব্যস্ততম সূচী থাকার কারণে খুব বেশি ঘুমাতে পারতেন না সিমোনা হ্যালেপ। কিন্তু বর্তমানে লকডাউন পরিস্থিতিতে আগের তুলনায় বেশি ঘুমাচ্ছেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান এই তারকা। এ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাতকারে রোমানিয়ান তারকা বলেন, ‘বুখারেস্টে আমার নিজের এপার্টম্যান্টেই আছি। এখন একটু বেশিই ঘুমাচ্ছি। যা আগে সম্ভব হতো না। কেননা, সবসময়ই ব্যস্ত সূচীর কারণে বেশি ঘুমানো সম্ভব হয়নি। আগেও বলেছি, আমি একটু দেরিতে করেই ঘুমাতে চাই। বিছানায় যেতে যেতে ১১টা থেকে ১২টা বেজে যায়। কিন্তু এখন দিনের ১০টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত ঘুমাতে পারি। আগে কখনোই সাড়ে ৮টা থেকে নয়টার বেশি ঘুমানোর সুযোগ ছিল না। কেননা, মানসিকভাবেই একটা চাপ ছিল। আগে থেকেই জানতাম দিনে আমার কোন না কোন কর্মসূচী আছে। তাই এলার্ম ছাড়াই ঘুম থেকে উঠে যেতাম। কিন্তু এখন আমি স্বস্তি নিয়েই ঘুমাতে পারছি। কেননা, এখন তো সূচীটা আমি নিজেই তৈরি করছি।’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে নিয়মিতই অনুশীলন করেন সব এ্যাথলেটরা। যে কারণে শরীর ফিট রাখার জন্য কোন রকমের আলাদা কাজ না করলেও চলে। কিন্তু করোনাভাইরাসের এই কঠিন সময়ে শরীর ফিট রাখাটাই এ্যাথলেটদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে নিজেকে ফিট রাখার জন্য সবকিছুই করে চলেছেন হ্যালেপ। নিয়মিত দৌড়ানোর পাশাপাশি জিমেও সময় দিচ্ছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে রোমানিয়ান তারকা বলেন, ‘আমি একটু দেরিতে করেই সকালের নাস্তা করি। নাস্তা করতে করতে প্রায় ১১টা বেজে যায়। নাস্তা সেরে আউটডোরে কমপ্লেক্সে যাই। সেখানে গিয়ে দৌড়াদৌড়ি করি। কেননা, শরীর ফিট রাখার জন্য এটাই আমার প্রধান কাজ। এরপর শারীরিক ব্যায়ামগুলো করি আমি। বিশেষ করে এ্যাবস, পিঠ, এবং পায়ের অনুশীলন করি। মোটকথা বাড়িতে যেগুলো করা যায় তার সবগুলোই করি। প্রায় ২০-২৫ মিনিট দৌড়াদৌড়ি করি। তবে ধীরে ধীরে আমি এক ঘণ্টা দৌড়াতে চাই। সাধারণত আমি খুব বেশি দৌড়াই না। কিন্তু এই মুহূর্তে শরীরকে ফিট রাখার জন্য এটাই একমাত্র উপায়। বাড়িতে পুশ-আপ, পিঠের অনুশীলনসহ আরও কিছু অনুশীলন করি। ছোটবেলায় যেসব অনুশীলণ করেছিলাম এখন সেগুলোই করছি বাড়িতে।’ অনুশীলন সেরে দুপুরের খাবার খান সিমোনা হ্যালেপ। খাবারেও বেশ যতœবান তিনি। অনুশীলন আর খাবার ছাড়া আরও দুটি কাজ লকডাউনের সময়ে বাড়িতে করছেন রোমানিয়ান টেনিসের এই তারকা খেলোয়াড়। সেগুলো হলো বই পড়া এবং সিনেমা দেখা। হ্যালেপের বর্তমান বয়স ২৮। ইতোমধ্যেই দুটি গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন তিনি। ২০১৮ সালে ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর শিরোপার দেখা পান তিনি। সে বছরেই প্রথম বিশ্ব টেনিসের পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে এসেছিলেন হ্যালেপ। ফ্রেঞ্চ ওপেনের আগে সেবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেরও ফাইনাল খেলেছিলেন এই রোমানিয়ান তারকা। কিন্তু তাকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর শিরোপার দেখা পায় ডেনমার্কের ক্যারোলিন ওজনিয়াকি। যার ফলে স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় নিয়ে কোর্ট ছাড়েন হ্যালেপ। তবে একই বছরে ফ্রেঞ্চ ওপেনেই আক্ষেপ ঘুচান তিনি। এরপর গত মৌসুমে উইম্বলডনেও বাজিমাত করেন এই ললনা।
×