ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি ও ভাঙ্গা বন্ধ, শিল্পে সঙ্কট

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ১১ এপ্রিল ২০২০

স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি ও  ভাঙ্গা বন্ধ, শিল্পে  সঙ্কট

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেশে বর্তমানে বিদেশ থেকে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি ও ভাঙ্গা বন্ধ রয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৬ মার্চ থেকে এ আদেশ কার্যকর হয়েছে। তবে আমদানির ৭টি স্ক্র্যাপ জাহাজ বহির্নোঙ্গরে রয়েছে এবং এগুলোকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এ শিল্পে নেমে এসেছে সঙ্কট। এ অবস্থায় বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এ্যান্ড রিসাইক্লার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএসইআরএ) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ শিল্পের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার পক্ষে ইতোমধ্যে যে ৭২ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে তাতে এ খাতকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করা হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডের দীর্ঘ এলাকাজুড়ে চালু প্রায় ৬২টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের অনিশ্চয়তা। স্ক্র্যাপ লোহার কোন ধরনের বিক্রি ও সরবরাহ নেই। অপরদিকে, এর প্রভাব পড়েছে দেশজুড়ে থাকা রি-রোলিং মিলগুলোতে। এসব মিল থেকে যেসব লোহা উৎপাদিত হয় এর ৭৫ শতাংশ কাঁচামাল আসে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প থেকে। করোনা পরিস্থিতিতে দেশে চলমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে সব ধরনের রি-রোলিং মিল বন্ধ হয়ে যাবে কাঁচামালের অভাবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন অবস্থায় রয়েছেন শিপ ব্রেকিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীগণ। ইতোমধ্যেই শিপ ব্রেকিং ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিএসবিআরএ স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি, শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড এবং যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ থাকলে আগামী এক মাসের মধ্যে এ সেক্টরের ক্ষতির পরিমাণ ৪শ’ কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছে। ইতোমধ্যে এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে এ সংক্রান্ত যে তথ্য দেয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে বর্তমানে এ শিল্পে মজুদ স্ক্র্যাপের পরিমাণ প্রায় ১৪ লক্ষ মেট্রিক টন। টাকার অংকে যার মূল্য প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এছাড়া উক্ত পরিমাণ পণ্যের বিপরীতে ৯ শতাংশ হারে ব্যাংক ঋণের সুদের পরিমাণ প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। এ শিল্পে অতীতে ১৩০টি ইয়ার্ড চালু থাকলেও বর্তমানে চালু রয়েছে সর্বোচ্চ ৬২টি। এতে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। যাদের বেতন ভাতার বাবদ ব্যয় হয় ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া অত্যাবশ্যকীয় ব্যয় রয়েছে আরও ৫০ লাখ টাকা। উভয় খাতে মোট ব্যয়ের পরিমাণ মোট ১ কোটি টাকা। ৬২টি ইয়ার্ডে মাসিক ব্যয় ৬২ কোটি টাকা।
×