ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আক্রান্ত ১৬ লাখ ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ১১ এপ্রিল ২০২০

আক্রান্ত ১৬ লাখ ছাড়িয়েছে

বিশ্বব্যাপী নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৬ লাখ পাঁচ হাজার পাঁচ শ’ ৯২ জনে পৌঁছেছে। এতে মারা গেছে ৯৫ হাজার ৭শ’ ৬৫ জন। চীনে প্রথম যেদিন নতুন ধরনের এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, তা মহামারী রূপ নিয়ে ১০০ দিনের মাথায় বিশ্বে মৃতের সংখ্যা লাখের কাছাকাছি পৌঁছে গেল। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির হিসাবে বিশ্বের ১৮৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া নোভেল করোনাভাইরাসে ১৬ লাখ পাঁচ হাজার পাঁচ শ’ ৯২ জনে পৌঁছেছে। মাত্র আট ঘণ্টার মাথায় শুক্রবার সকালে আক্রান্তের সংখ্যা এ পর্যায়ে পৌঁছায়। মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ২৭৯ জন মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যায় বৃহস্পতিবারই স্পেনকে ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র উঠেছে দ্বিতীয় স্থানে। দেশটিতে মারা গেছে ১৬ হাজার ৬৮৪ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা স্পেনে মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ৪৪৭ জন।- খবর বিবিসি, এএফপি ও পিপলস ডেইলি অনলাইনের। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর প্রথম মৃত্যুটি ঘটেছিল ১১ জানুয়ারি। চীনের বাইরে প্রথম মৃত্যুটি ঘটেছিল প্রায় এক মাস পর ২ ফেব্রুয়ারি ফিলিপিন্সে। সেদিন মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৬২। মৃতের সংখ্যা ১ হাজারে পৌঁছেছিল ১০ ফেব্রুয়ারিতে। অর্থাৎ প্রথম মৃত্যুর পর মৃতের সংখ্যা ১ হাজারে পৌঁছতে লেগেছিল ঠিক এক মাস। এরপর মৃতের সংখ্যা দুই হাজারে যেতে সময় লাগে ৮ দিন। তার এক মাস পর ১৯ মার্চ মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ায়। বিপর্যস্ত ইউরোপে এরপর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু। ১০ হাজার থেকে ২০ হাজারে যেতে সময় লাগে ৬ দিন। ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজারে যেতে সময় লাগে ৬ দিন। ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজারে যেতে সময় লাগে ৩ দিন। ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজারে যেতে সময় লাগে ২ দিন। ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজারে যেতে সময় লাগে ২ দিন। ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজারে যেতে সময় লাগে ২ দিন। ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজারে যেতে সময় লাগে ২ দিন। ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজারে যেতে সময় লাগে ২ দিন। অর্থাৎ এখন প্রতি দুই দিনে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার করে বাড়ছে। ১০ হাজার থেকে ২০ হাজারে যেতে সময় লাগে ৬ দিন। ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজারে যেতে সময় লাগে ৬ দিন। ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজারে যেতে সময় লাগে ৩ দিন। এরমধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা গত ৭ এপ্রিল। সেদিন ৭ হাজার ৮৩ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছিল নোভেল করোনাভাইরাস। এদিকে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রমণ করা চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এই উহান শহর থেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। এরপর ২৩ জানুয়ারি শহর লকডাউন করে দেয় চীন। বুধবার লকডাউন তুলে নেয়া উপলক্ষে শহরটি বর্ণিল আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়। খুব শীঘ্রই সব সড়ক ও রেলযোগাযোগ ব্যবস্থাও চালু করা হবে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার লকডাউন প্রত্যাহারের পর থেকে প্রায় দুই শ’ ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয় চীন। চীনের মূলভূখণ্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ফের কিছুটা বাড়ায় সংক্রমণের আরেকটি প্রবাহ শুরু হতে পারে আশঙ্কায় শুধু সুস্থ লোকজনকেই শহর ছাড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য অংশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে জানুয়ারির শেষদিকে এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার শহরটি অবরুদ্ধ করে দেয় চীন। সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উহানের ৫০ হাজারেরও বেশি লোক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল এবং এতে আড়াই হাজারেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি নতুন আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে আসায় আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু হয়। হুবেই প্রদেশের এই রাজধানী শহরে গত ২১ দিনে নতুন নিশ্চিত সংক্রমণের মাত্র তিনটি ঘটনা ঘটে। বুধবার প্রায় ৫৫ হাজার লোক ট্রেনযোগে উহান ছাড়েন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উহানের তিয়ানহে বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি ভ্রমণকারী শহরটি ছেড়েছেন। তবে উহান থেকে রাজধানী বেজিং ও বিদেশগামী ফ্লাইট চলাচল এখনও শুরু হয়নি। শিয়াংজিয়াং শহরে যাওয়ার উদ্দেশে উহানের হানকৌ রেলস্টেশনে সুটকেস নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শ্রমিক লিউ শিয়াওমিন বলেন, ‘আজ আমি বাড়িতে যাচ্ছি, আমি খুব খুশি।’ তবে অতি প্রয়োজন ছাড়া উহানের বাসিন্দাদের তাদের আবাসিক এলাকা, শহর ও এমনকি প্রদেশও না ছাড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। উহান থেকে বেজিংয়ে যাওয়া লোকজনকে দুই রাউন্ড ভাইরাস পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
×