ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কেনাকাটা বেড়েছে

নিত্যপণ্যের বাজারে ভোক্তাদের উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ১১:১৭, ৯ এপ্রিল ২০২০

নিত্যপণ্যের বাজারে ভোক্তাদের উপচেপড়া ভিড়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই শব-ই-বরাতের কেনাকাটায় নিত্যপণ্যের বাজারে ভোক্তাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বুধবার সকালে বাজারে গিয়ে সব ধরনের পণ্যসামগ্রী কেনাকাটা করেছেন ক্রেতারা। চলতি সপ্তায় আরেকদফা বেড়েছে চাল, পেঁয়াজ, মসুর ডাল ও ভোজ্যতেলের। তবে সরবরাহ বাড়ায় স্বস্তি বিরাজ করছে শাক-সবজির বাজারে। কমেছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। জানা গেছে, চাহিদাকে সামনে রেখে বাজারে বেড়েছে চালের দাম। গরিবের খাবার হিসেবে পরিচিত ভালমানের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া নিম্নমানেরটি ৪৪-৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে খোলা বাজারে ১০ টাকার ওএমএস চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলেও বাজারে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। বরং করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে বিষয়টি মাথায় রেখে ভোক্তারা কেনাকাটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। নগরবাসী একান্ত প্রয়োজন ছাড়া এখন আর ঘরের বাইরে যাচ্ছে না। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বাইরে কড়াকড়ি আরোপ করায় বিশেষ কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে আসছে না ঢাকাবাসী। এছাড়া মার্কেট, শপিংমল ও ফ্যাশন হাউসগুলো বন্ধ করার পাশাপাশি পাড়া মহল্লার মুদি দোকান এমনকি কাঁচাবাজারও দুপুর ২টার পর খোলা রাখা যাচ্ছে না। আর এ কারণে সকাল সকাল ক্রেতারা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করছেন। ঢাকার কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন মার্কেট এবং গোড়ান কাঁচাবাজার সূত্রে জানা গেছে, সকাল সকাল বাজারে ক্রেতাদের ঢল নামে। ব্যবসায়ীরা এ কারণে খুব সকালে পণ্যসামগ্রী নিয়ে দোকানপাট চালু করে দেন। ভোক্তারা প্রয়োজনীয় পণ্যের কেনাকাটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ কারণে সবজি ছাড়া বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড়েছে। কাপ্তান বাজারের মুদিপণ্যের ব্যবসায়ী আবদুল গনি মিয়া জনকণ্ঠকে বলেন, শব-ই-বরাতের কেনাকাটা করতে ক্রেতারা বাজারে আসছেন। নির্দিষ্ট সময়ের পর মার্কেট বন্ধ রাখতে হচ্ছে বিধায় সকাল সকাল ক্রেতারা কেনাকাটা করে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, শব-ই-বরাত সামনে রেখে ভোজ্যতেল, বুটের ডাল, আতব চালের গুঁড়া, মসুর ডালের মতো পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। আর এ কারণে এসব পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। এদিকে, খুচরা বাজারে প্রতিকেজি স্বর্ণা ও চায়না ইরিখ্যাত মোটা চাল ৪৪-৫০, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা ৫৫-৬০ এবং ভালমানের সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৮ টাকায়। গত এক মাস ধরে প্রায় চালের দাম বাড়তি। কাওরান বাজারের চাল বিক্রেতা আবুল কালাম জানান, হঠাৎ করে আবার চালের চাহিদা বেড়ে গেছে। ভোক্তারা কেনাকাটা বাড়িয়ে দেয়ায় বাজারে এর একটি প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, দাম বাড়লেও পাইকারি বাজারে চালের সরবরাহ রয়েছে। এছাড়া বাজারে দাম বেড়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ দেশীটি ৪৫-৫০, আমদানিকৃতটি ৩৫-৪৫, রসুন ৮০-১৭০, আদা ১২০-১৭০, ফার্মের ডিম ২৮-৩০, চিনি ৬৫-৭০, ভোজ্যতেল প্রতিলিটার ৯৩-৯৫ এবং প্রতি পাঁচ লিটারের ক্যান ৫০০-৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। ভোক্তারা বলছেন, একদিনে করোনা আতঙ্ক, অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইতোমধ্যে শব-ই-বরাতের কারণে বেশিরভাগ পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশনের ক্রেতা জামাল মিয়া বলেন, সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা না হলে সামনে ভোক্তাদের আরও কষ্ট ভোগ করতে হবে। আর এ কারণে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানো উচিত। এছাড়া রাজধানীর বাজারে শাক-সবজির সরবরাহ বেড়েছে। বেশিরবাগ সবজির দাম নিম্নমুখী।
×