ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার লকডাউন ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৯:০০, ৮ এপ্রিল ২০২০

রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার লকডাউন ঘোষণা

অনলাইন রিপোর্টার ॥ করোনা পরিস্থিতিতে ভাইরাস প্রতিরোধে কক্সবাজারস্থ সব রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ পুরো জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার (৮ এপ্রিল) বিকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন এ ঘোষণা দেন। ঘোষণায় বলা হয়, এখন থেকে কোনো ব্যক্তি কক্সবাজারে প্রবেশ করতে ও কক্সবাজার থেকে বের হতে পারবেন না। এ আদেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন। লকডাউন বিষয়ে আজ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নিজস্ব ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট দেয়া হয়েছে। নিম্নে পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- “জনস্বার্থে কক্সবাজারকে লকডাউন করা হলো। এখন থেকে এ জেলায় সকল আগমন ও বহির্গমন নিষিদ্ধ। আদেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা।” উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস (কেভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে কক্সবাজার জেলার ৮ উপজেলায় পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা ও শয্যাবিশিষ্ট ২২৭টি আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তন্মধ্যে রয়েছে- রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (নতুন ভবন) ৫০ শয্যা, চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (নতুন ভবন) ৫০ শয্যা, পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ শয্যা, কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৭ শয্যা, মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২০ শয্যা, উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ শয্যা ও টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩০ শয্যা। কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ মাহবুবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাথরুমের ব্যবস্থাসহ ২২৭টি আইসোলেশন ইউনিটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা সামগ্রী মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়াও বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থার ৮টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সমন্বয়ে ৬৬ শয্যাবিশিষ্ট আইসোলেশন ইউনিট, বেড, ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ও জরুরী বিভাগের প্রধান ডা: মোহাম্মদ শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী জানান, হাসপাতাল সংলগ্ন পুরাতন মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের চতুর্থ তলায় আইসোলেশন ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। ৩ শিফটে আইসোলেশন ইউনিটের প্রতি শিফটে একজন ডাক্তার, ৪ জন নার্স, একজন করে ক্লিনার, নিরাপত্তাকর্মী ও ওয়ার্ডবয় রয়েছে বলেও তিনি জানান। এদিকে, সর্বশেষ তথ্যমতে, কক্সবাজার জেলায় মোট ৫১৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং ২৩ জনকে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলার ২৯টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য ১০৬টি বেড প্রস্তত রাখা হয়েছে। কর্মরত আছেন ১০৭ ডাক্তার ও ৮০ জন নার্স। কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির জরুরী চিকিৎসা, স্থানান্তরের জন্য ১১টি পৃথক এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কক্সবাজারে অবস্থিত ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পও ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো জনঘনত্বপূর্ণ বসতি এলাকা হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মাহাবুবুল আলম তালুকদার জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো বলতে গেলে আগে থেকেই অঘোষিত লকডাউন ছিল। শুধু ঘোষণা করা হয়নি। তাছাড়া ১১ মার্চ থেকে সেখানে এনজিও সংস্থাদের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। সেখানে শুধু অতি জরুরি কার্যক্রমগুলোই চালু ছিল।
×