ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় মৃত্যু ‘শূন্য’ চীন

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ৮ এপ্রিল ২০২০

করোনায় মৃত্যু ‘শূন্য’ চীন

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান নগরীতে প্রথম প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। এরপর গত মঙ্গলবার দেশটিতে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। মঙ্গলবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য দফতর এ তথ্য নিশ্চিত করে। পাশাপাশি দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাও কমেছে। সোমবার দেশটিতে ৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়। মঙ্গলবার এ সংখ্যা কমে ৩২ জনে দাঁড়ায়। খবর বিবিসি ও সিএনএন অনলাইনের। খবরে বলা হয়েছে, করোনা নির্ণয়ে চীন সরকারের কঠোর পদক্ষেপ, উন্নত পরীক্ষা ও সচেনতার কারণে দেশটিতে করোনা পরিস্থিতি ক্রমে শূন্যের কোঠায় নেমে আসছে। চীন সরকার দাবি করেছে, করোনার আক্রমণে চীনে মোট ৩৩ হাজার তিন শ’ ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আর আক্রান্ত হয়েছিল মোট ৮১ হাজার সাত শ’ ৪০ জন। এদিকে চীনে দ্বিতীয় দফা করোনা রোগী বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তায় ছিল দেশটির সরকার। কারণ সে দেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর বিদেশে থাকা ব্যাপক সংখ্যক চীনা দেশে প্রবেশ করে। কিন্তু চীন সরকার ওই সব নাগরিকদের ব্যাপকহারে নজরদারিতে রাখে। পাশাপাশি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। গত জানুয়ারির পর সোমবার প্রথমবারের মতো উহানের জনগণ রাস্তায় নামে। অবশ্য এখনও শহরটির বাসিন্দা অনুমতি ছাড়া অন্য শহরে যেতে পারবে না। বাইরে বের হতে চাইলে তার হাতে স্মার্টফোনে একটি কোড আসবে। তারপর ওই কোডের সাহায্যে অনুমতি মিললেই তারা উহান থেকে বের হতে পারবে। আবার উহানে যারা করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছে-তাদের দিনে অন্তত দুই ঘণ্টার জন্য ঘরের বাইরে যাবার অনুমতি মিলেছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই কার্যত চীনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমতে শুরু করে। চীন বর্তমানে করোনার সামান্য উপসর্গ আছে-এমন এক হাজার ৩৩ জনকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। মঙ্গলবার চীনে করোনায় মারা যাওয়ার ঘটনা শূন্যে নেমে আসায় দেশটির নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমে-এর ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। অনেকে একে ভাল খবর বলে উল্লেখ করেছেন। এখন উপসর্গহীন রোগীদের নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছে চীন। যেহেতু দেখে বোঝার উপায় নেই, তাই উপসর্গহীন রোগীর মাধ্যমে দ্রুতই সুস্থ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস। সোমবার চীনে ৩০ জন উপসর্গহীন আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে। আগেরদিন রবিবার এ সংখ্যা ছিল ৭৮। উপসর্গহীন নতুন আক্রান্তর মধ্যে ৯ জন বিদেশ ফেরত। বাকিদের মধ্যে ১৮ জন হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর বর্তমানে এটি বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করেছে। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে (কোভিড -১৯)-এ মৃতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ৪৮ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই সময়ের মধ্যে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে দেড় লাখের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৮৬ হাজার ৪০৯ জনে। আর মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ৩৫৬। ১৮৩ দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। ঠিক ৪৮ ঘণ্টা আগে বিশ্বজুড়ে ১৮১টি দেশে ১১ লাখ ৩১ হাজার ৭১৩ জন ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। আর ওই সময় করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ছিল ৬০ হাজার ১১৫ জন ব্যক্তি। এই হিসাবে গত ৪৮ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজার ২৪১ জন।
×