স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে রাজধানীর কাঁচাবাজার ও সুপার শপসহ সব ধরনের দোকানপাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। শুধু ঢাকাতেই নয়, বস্তুত সারাদেশেই এমন অলিখিত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। ফলে সারাদেশেই এমন অঘোষিত লকডাউন চলছে। বিশেষ লকডাউন চলছে দেশের সব জেলা শহর, মেট্রোপলিটন শহর ও বিভাগীয় শহরে। পাড়া মহল্লার মুদি দোকানগুলো খোলা থাকবে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এমন নির্দেশনা সারাদেশেই বলবত রাখতে অঘোষিত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তরফ থেকে। তবে ওষুধের দোকান, সংবাদপত্র, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেবাসহ জরুরী সার্ভিসগুলো এমন নির্দেশনার বাইরে থাকবে। ইতোমধ্যেই পুলিশের তরফ থেকে মাইকিং করে এমন ঘোষণা প্রচার করা হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এমন নির্দেশনা বলবত থাকবে।
ঢাকার পর চট্টগ্রাম, রাজশাহী, নড়াইলসহ অনেক জেলা থেকে কার্যত লকডাউন ঘোষণার খবর পাওয়া গেছে। এসব জেলার বাইরে থেকে প্রবেশ অথবা নির্গমন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকা থেকে বের হওয়া ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সশস্ত্রবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকার প্রতিটি প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। জরুরী সেবাদানকারী যানবাহন ব্যতীত সব ধরনের যানবাহনের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এদিকে ঢাকায় অন্যান্য দিনের মতো জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানো ঘরে ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলামের তরফ থেকে ডিএমপির সব ইউনিটকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান। তিনি জানান, সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ঢাকার সব সুপার শপ ও কাঁচা বাজার বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এমন নির্দেশনা এসেছে ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলামের কার্যালয় থেকে।
ইতোমধ্যেই ডিএমপির সব বিভাগকে এমন নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে জানানো হয়েছে। পুলিশ কমিশনের নির্দেশনা পাওয়ার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা সুপার শপগুলোতে গিয়ে বিষয়টি জানিয়ে এসেছেন। এমনকি মাইকিং করা হচ্ছে। আজ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এমন নির্দেশনা বলবত থাকবে। কাঁচা বাজারগুলো ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চালু রাখা যাবে। আর পাড়া মহল্লার মুদি দোকানগুলো খোলা থাকবে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। চালু থাকবে শুধুমাত্র ওষুধের দোকান।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, তারা ইতোমধ্যেই নির্দেশনা পেয়েছেন। নির্দেশনা মোতাবেক সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সব সুপার শপ ও কাঁচা বাজার খোলা থাকবে। সন্ধ্যা ৭টার পর যাতে কোন সুপার শপ ও কাঁচাবাজার খোলা না থাকে এজন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি মাইকিং করে জানানো হচ্ছে। পাড়া মহল্লার মুদি দোকান ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর আগে রবিবার পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে ঢাকাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। সেই নির্দেশনায় পুলিশ সদর দফতরের তরফ থেকে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকা থেকে কেউ বাইরে যাবে না এবং ঢাকাতে কেউ প্রবেশ করবে না।
এর আগে গত রবিবার করোনা পরিস্থিতিতে দোকান বন্ধের সময়সীমা বাড়ানোর নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। তাতে বলা হয়, আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশের সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, মহাসচিব জহির উদ্দিন ভূঁইয়া ও সহসভাপতি তৌফিক এহেসান বলেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ ও দোকান মালিকদের সুরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে কাঁচাবাজার, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান, সুপারশপ, ওষুধের দোকান, খাবার হোটেল ইত্যাদি খোলা থাকার থাকার ঘোষণা দিয়েছিল তারা।
তবে সোমবার ডিএমপির তরফ থেকে জারি করা আদেশে দোকান মালিক সমিতির জারি করা আদেশের মধ্যে কিছুটা রদবদল করা হয়েছে। সুপার শপ ও কাঁচাবাজারসহ অন্য দোকান সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে সোমবার প্রায় শতভাগ জনমানবশূন্য ছিল ঢাকার রাস্তাঘাট। সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকেই ঢাকা হয়ে পড়ে। দিন দিন ঢাকা জনমানবশূন্য হয়ে পড়ছে। এটিকে ভাল দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হলে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো যাবে। ঢাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
ঢাকার শেরেবাংলা নগর এলাকার ষাটফুট, আমতলী, ভাঙ্গা ব্রিজ, বাংলাদেশ বেতার, পাসপোর্ট অফিস, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, জাতীয় সংসদ ভবন, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, বিজয় সরণি মোড়, বাংলামটরসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। এসব জায়গায় পুলিশের চেকপোস্টও দেখা গেছে। রাস্তায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের টহল ছাড়াও সচেতনতামূলক কর্মকা-ের অংশ হিসেবে মাইকিং করতে দেখা গেছে। পুলিশের পিকআপ গাড়িগুলোর সামনে বড় বড় মাইক লাগানো হয়েছে। মাইক দিয়ে নগরবাসীকে নিরাপদে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলে পরিচয়পত্র, মুখে মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাভস ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। এছাড়া চলাচলের সময় সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ একজন ব্যক্তি থেকে আরেকজন ব্যক্তির মধ্যে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে মাইকিং করা হচ্ছে।
গত বৃৃহস্পতিবার থেকেই এমন কড়াকড়ি চলছে রাজধানীতে। বিনা কারণে বাইরে থাকা মানুষদের ঘরে ফেরাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকার প্রতিটি প্রবেশ পথ বিশেষ করে আমিনবাজার ব্রিজ, গাবতলী, গাবতলী বাস টার্মিনাল, গাবতলীর পর্বতা সিনেমা হলের ঢালে, আব্দুল্লাহপুর তিন রাস্তার মোড়ে, টঙ্গী ব্রিজের ঢালে, সায়েদাবাদ, তুরাগ থানাধীন দৌড় এলাকায়, মিরপুর মাজার রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এসব জায়গায় বসানো চেকপোস্টগুলোতেও পুলিশের তরফ থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে করণীয় সম্পর্কে মাইকিং করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলামের নির্দেশনার বরাত দিয়ে জনকণ্ঠকে জানান, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক বিনা প্রয়োজনে কাউকে ঘরের বাইরে থাকতে দেয়া হবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে যাচ্ছে পুলিশ। তবে এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পুলিশকে অত্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে এবং মানুষজনকে সামলাতে অত্যন্ত সর্তকর্তা অবলম্বন করতেও বলা হয়েছে। তল্লাশির নামে অহেতুক কাউকে হয়রানি না করতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জরুরী সেবাদানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও যানবাহনের বিষয়ে অত্যন্ত সর্তকর্তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে পুলিশ সদস্যদের। বিনা কারণে কাউকে হয়রানি করলে ওইসব পুলিশ সদস্যের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। চেকিংকালে পুলিশকে মানুষের সঙ্গে অত্যন্ত বিনয়ী আচরণ করতেও বলা হয়েছে।
এদিকে অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারও ঢাকার ৫০টি থানা এলাকায় আড়াই হাজার ছিন্নমূল মানুষকে একবেলা খাবার দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের তরফ থেকে। এছাড়া ঢাকায় ডিএমপির তরফ থেকে দুই বেলা জীবাণুনাশক ছিটানো অব্যাহত আছে। পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা ওয়াসা, সশস্ত্র বাহিনীও জীবাণুনাশক ছিটানো অব্যাহত রেখেছে। ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি ও উর্দুভাষী অবাঙালীদের বিহারি ক্যাম্পগুলোতে অধিকহারে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। এসব এলাকার ভেতরে নিয়মিত পরিষ্কার করার কাজ চলছে।
পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক মোঃ সোহেল রানা জনকণ্ঠকে বলেন, দেশবাসীকে ঘরে থাকতে যা যা করণীয় সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক তাই করা হচ্ছে। এমন নির্দেশনা সারাদেশেই কার্যকর থাকবে। বিনা প্রয়োজনে কাউকে ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। যারা বের হচ্ছেন তাদের ঘরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিনা প্রয়োজনে কাউকেই ঘরের বাইরে থাকতে দেয়া হবে না। দেশে ও দেশবাসীর স্বার্থেই এমন কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। যানবাহন চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জনকণ্ঠকে বলেন, রাজশাহীতে কাউকেই বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। যারা ঘরের বাইরে বিনা প্রয়োজনে আছেন তাদের ঘরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, যানবাহন চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে এমন কঠোরতা রাজশাহী মহানগরের ক্ষেত্রে আরও বেশি। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের প্রধান ডিআইজি হাবিবুর রহমান জানান, দেশবাসীকে ঘরে রাখতে যা করণীয় সবাই করা হচ্ছে। আর এসবই করা হচ্ছে দেশবাসীর স্বার্থে।
সূত্র বলছে, পুলিশের সকল ইউনিট, প্রত্যেক রেঞ্জ প্রধান থেকে শুরু করে প্রতিটি স্তরে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর হতেও বলা হয়েছে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম কার্যত লকডাউন ॥ স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, রাজধানী ঢাকার পর বন্দরনগরী চট্টগ্রামকেও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। পুলিশ কমিশনারের নিজ ক্ষমতাবলে সোমবার বিকেল থেকে এ ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে।
নগরীর ৫ প্রবেশমুখে ইতোমধ্যে পুলিশের নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করা হয়েছে। সিএমপি সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রবেশ পথগুলো হচ্ছে নগরীর শাহ আমানত সেতু পয়েন্ট, কালুরঘাট সেতু পয়েন্ট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, অক্সিজেন মোড় ও সিটি গেট।
সিএমপি কমিশনার মোঃ মাহবুবর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন মানুষ শহরে প্রবেশ করে থাকেন। অনুরূপভাবে শহর থেকেও নিকটবর্তী উপজেলাসমূহে মানুষ যাতায়াত করেন। এক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিরোধের উপায় হিসেবে আপাতত নগরীর পাঁচ প্রবেশপথ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পুলিশ কমিশনার আরও জানিয়েছেন, এসব প্রবেশ পথ দিয়ে ওষুধ, খাদ্য ও জরুরী পণ্যবাহী পরিবহন, রফতানি পণ্য বোঝাই পরিবহন, রোগী নিয়ে এ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য কোন পরিবহন প্রবেশ বা বের হতে পারবে না। এসব পয়েন্ট দিয়ে অতি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এমন লোকজনকে নিরাপত্তা চৌকির মুখোমুখি হতে হবে। জবাব সন্তোষজনক পাওয়া গেলে অনুমতি দেয়া হবে। এছাড়া পুলিশ কমিশনার আরেক আদেশে সোমবার থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত মহানগরীতে শুধু ওষুধের দোকান ছাড়া অন্য সকল দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
রাজশাহী লকডাউন ॥ স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, রাজশাহীতে শুরু হয়েছে ‘লকডাউন’। অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাজশাহীতে প্রবেশ করতে বা বের হতে দেয়া হচ্ছে না। সোমবার দুপুর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এমন কঠোর অবস্থান নিয়ে কাজ শুরু করেছে। । এছাড়াও দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে যে, সন্ধ্যা ৬টা থেকে জরুরী সেবা বাদে রিক্সা ও মোটরসাইকেলসহ সবধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মোঃ হামিদুল হক বলেন, সকালে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। লোকজন যেন অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে বের না হয় এবং রাজশাহীতে প্রবেশ ও বের হতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়টি বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সভায়।
এদিকে সোমবার দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সভা শেষে স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, দেশে ধীরে ধীরে করোনার রোগী বাড়ছে। তাই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে আমরা রাজশাহীকে লকডাউনের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, এক জেলার সঙ্গে আরেক জেলার যোগাযোগ বন্ধ থাকবে। তবে জরুরী খাদ্য ও ওষুধের মতো জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক চলবে। দুই জেলার সীমানায় পুলিশ থাকবে। তারা যানবাহন ও মানুষের চলাচলের বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে। পুলিশের কড়াকড়িকে জনস্বার্থে মেনে নিতে সকলের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাদশা বলেন, এখন থেকেই রাজশাহী লকডাউন।
সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সভায় পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা গুরুপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা অথবা মারা গেলে দাফন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে সভায়।
সভায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবির খন্দকার, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান, জেলা প্রশাসক হমিদুল হক, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ গোপেন্দ্রনাথ আচার্য ও সিভির সার্জন ডাঃ এনামুল হক।
নড়াইলে প্রবেশে বিধি নিষেধ জেলা প্রশাসনের ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল থেকে জানান, করোনা সংত্রমণ এড়াতে নড়াইল জেলায় অপ্রয়োজনে মানুষের গমনাগমনে বিধি নিশেধ আরোপ করেছে প্রশাসন। প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। নড়াইল জেলা থেকে কেউ বাইরে যেতে পারবে না, কেউ জেলায় প্রবেশও করতে পারবে না। বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হলে কঠোর শাস্তি। এদিকে নড়াইলের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় এখন মানুষের ঢল। মানুষের ঢলকে সামলাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের লোকজন হিমশিম খাচ্ছে। সেনা টহল ও মোবাইল কোট জোরদার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোঃ জসিম উদ্দিন পিপিএম বার।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: