ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউনের সিদ্ধান্ত কাজে দিয়েছে ॥ ইতালির জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান

ইতালি-স্পেনে সর্বনিম্ন মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ৭ এপ্রিল ২০২০

ইতালি-স্পেনে সর্বনিম্ন মৃত্যু

ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে মৃতের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম মানুষ মারা গেছেন। একই সঙ্গে ইরান ও নিউইয়র্কে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। এসব দেশের কর্মকর্তারা মৃতের সংখ্যা ও আক্রান্তের হার কমাকে লকডাউনের সুফল মনে করছেন। ইতালিতে গত রবিবার ৫২৫ জন করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। গত দুই সপ্তাতে এটিই সর্বনিম্ন মৃত্যুর রেকর্ড। ইতালির জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সিলভিও ব্রুসাফেরো বলেন, ‘লকডাউনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল তা কাজে দিয়েছে।’ এখনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে ইতালি। এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট ১৫ হাজার ৮৮৭ জন মারা গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৯০০ জন। এদিকে একই দিনে স্পেনে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ৬৭৪ জন মারা গেছেন। ২৬ মার্চের পর ২৪ ঘণ্টায় রবিবারই সবচেয়ে কম মানুষ মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত স্পেনে ১২ হাজার ৪১৮ জন মানুষ মারা গেছেন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। রবিবার যুক্তরাজ্যেও মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে কমেছে। যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ হাজার ৪০৬ জন এবং মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, আরও সাত থেকে ১০ দিন পর যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আসতে পারে। তারপর সংক্রমণের হার নিম্নগামী হবে। রবিবার ফ্রান্সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৫৭ জন মারা গেছেন, যা আগের দিনের চেয়ে ৮৪ জন কম। ফ্রান্সে এ পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার মানুষ মারা গেছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। ইরানে টানা পঞ্চম দিনের মতো মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। ইরানে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৬০০ জন মারা গেছেন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮ হাজারের মতো। নিউইয়র্কে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা প্রথমবারের মতো আগের দিনের চেয়ে কমেছে। রবিবার নিউইয়র্ক রাজ্যে ৫৯৪ জন মারা গেছেন, আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ৬৩০ জন। করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যায় এই মুহূর্তে বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯ হাজারের বেশি এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ২৫ হাজারের বেশি। তবে এ পর্যন্ত সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯০ জন। ভাইরাস সংক্রমণে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৯ হাজার ৪৪৪ জনের। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২ লাখ ৬১ হাজার ৪৮৫ জন। তবে হঠাৎ করেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে জাপান ও সিঙ্গাপুরে। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেলেও তার চেয়ে বড় শঙ্কা দেখা দিয়েছে মুম্বাইয়ের ধরাবি বস্তিতে সংক্রমণ ঘটায়। ইউরোপ ও আমেরিকায় পরিস্থিতির উন্নতির চিত্র দেখা গেলও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে এশিয়ায়। জাপানে হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা ৩৩৬ জন বেড়েছে। চীন থেকে সংক্রমণ হওয়ার পর শুরুর দিকেই জাপানে ছড়িয়েছিল করোনাভাইরাস, তবে দেশটি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছিল। জাপানের মোট ৪ হাজারের মতো মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে, তার মধ্যে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিঙ্গাপুরে একদিনে নতুন ১২০ জনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। সিঙ্গাপুরে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৩০৯ জন এবং মারা গেছে ৬ জন। ভারতে এখন প্রতি চারদিনে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ভারতে রোগীর সংখ্যা বেড়ে সাড়ে ৩ হাজার ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৩ জন। পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ভারতের চেয়েও কম, সেখানে মোট ৩ হাজার ১৫৬ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে ৪৭ জন। -বিবিসি, সিএনএন ও আলজাজিরা
×