ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

একদিনে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪৮০, ফ্রান্সে ১১২০, স্পেন ৮০৯, ইতালিতে ৬৮১ , ব্রিটেনে ৬৮৪

করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ৬৩ হাজার ৯শ’ ২৪

প্রকাশিত: ১০:০৯, ৫ এপ্রিল ২০২০

   করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ৬৩ হাজার ৯শ’ ২৪

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ২০৪ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় শনিবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখ ৮২ হাজার ৪২৭ জন। এর মধ্যে ৬৩ হাজার ৯২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছে দুই লাখ ৪৪ হাজার ১০৯ জন। এদিকে করোনায় শনিবার আরও নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪৮০, ফ্রান্সে ১১২০, স্পেনে ৮০৯, ইতালিতে ৬৮১, ব্রিটেনে ৬৮৪ ও জার্মানিতে ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ফ্রান্সের ছয় শতাধিক সেনা সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং নতুন এক গবেষণা বলছে, করোনায় ইউরোপকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত। এছাড়া চীনে করোনায় ৪৭ হাজার মানুষ মারা গেছে বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। এদিকে পাকিস্তানে ভুক্তভোগী এক কোটি ২০ লাখ পরিবারকে ১২ হাজার রুপী করে নগদ অর্থ সহায়তা দিচ্ছে দেশটির সরকার। অন্যদিকে জেদ্দায় আরও ২৪ ঘণ্টা কার্ফু বাড়ানো হয়েছে। খবর এএফপি, বিবিসি, ফ্রান্স২৪, এনডিটিভি, আলজাজিরা, সিএনএন, ডেইলি মেইল, ইউরো নিউজ, ওয়াশিংটন পোস্ট, রেডিও ফ্রি এশিয়া, দ্য নিউজ অস্ট্রেলিয়া, ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফো ও ইয়াহু নিউজের। যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১,৪৮০ জনের মৃত্যু ॥ যুক্তরাষ্ট্রে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ ভাইরাসে এক হাজার ৪৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বৈশ্বিক মহামারী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী ২৪ ঘণ্টায় এটি সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণহানি। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে ১ হাজার ৪৮০ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটিতে করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া লোকের সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার ৪০৬ জনে দাঁড়াল। এদিকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সতর্কতামূলকভাবে মাস্ক পরার পরামর্শ উপেক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসের এক ব্রিফিংয়ে মাস্ক না পরার ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় বিষয়টিকে ঐচ্ছিক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, শুধু যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সংশ্লিষ্ট রোগীদের সেবা করছেন তাদের অবশ্যই মাস্ক পরা উচিত। বাকিদের সর্দি, কাশি হলেই মাস্ক পড়তে হবে। শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা এ রোগের সংক্রমণ বিষয়ে আগে যা ভাবতাম তার বদল ঘটেছে। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, কোন লক্ষণ ছাড়াই অনেকে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। তাই মাস্ক পরাই ভাল কাজ।’ তবে একইসঙ্গে মাস্ক পরার প্রতি নিজের অনীহার কথা জানান তিনি। ট্রাম্পের যুক্তি, ‘ভাল অফিসে বসে মাস্ক পরে কাজ করা কার্যত অসম্ভব। তাই এটা আমি পালন করতে রাজি না।’ ফ্রান্সে আরও ১১২০ জনের মৃত্যু, ছয় শতাধিক সেনা সদস্য করোনায় আক্রান্ত ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে আরও এক হাজার ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে শুক্রবার ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা ছিল এক হাজার তিন শ’ ৫৫ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ছয় হাজার পাঁচ শ’ সাতজন। শনিবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। এদিকে ফ্রান্সের ছয় শতাধিক সেনা সদস্য মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লি শনিবার এক ঘোষণায় এই তথ্য জানিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘পরিস্থিতি দিন দিন আরও বিস্তার লাভ করছে এবং আমরা তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তবে আমাদের সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমে কোন প্রভাব পড়েনি।’ স্পেনে আরও ৮০৯ জনের মৃত্যু ॥ স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৮০৯ জন কোভিড-১৯ রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার তথ্য জানিয়েছে। স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার স্পেনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৯৩৫ জন থাকলেও শনিবার তা বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৭৪৪ জন। স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, শুক্রবার দেশজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৭১০ জন থাকলেও শনিবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৭৩৬ জনে। ইতালিতে আরও ৬৮১ জনের মৃত্যু ॥ ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৮১ জন করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগী মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় ১৫ হাজার ৩৬২ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেশটিতে করোনায় ৭৬০ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪ হাজার ৫৮৫ জনের দেহে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৮৭ জন। ব্রিটেনে আরও ৬৮৪ জনের মৃত্যু ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রিটেনে আরও ৬৮৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। যা এই মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট ৩ হাজার ৬০৫ জনের প্রাণহানি ঘটল। শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনে একদিনে সর্বোচ্চ ৬৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের দিন দেশটিতে ৫৬৯ জন মারা যান করোনায়। যা আগের দিনের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি ছিল। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা পর্যন্ত এক লাখ ৭৩ হাজার ৭৮৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৮ হাজার ১৬৮ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। জার্মানিতে আরও ১৪১ জনের মৃত্যু ॥ জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১৪১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ২৭৫ জনে পৌঁছেছে। শনিবার দেশটির রোগ ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা দ্য রবার্ট কোচ ইনস্টিটিউট এ তথ্য জানিয়েছে। জার্মানিতে বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯১ হাজার ১৫৯ জন। করোনায় আক্রন্তের সংখ্যা ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দেশটিতে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ২৪ হাজার ৫৭৫ জন। জেদ্দায় কার্ফু বাড়ল আরও ২৪ ঘণ্টা ॥ সৌদি আরবের জেদ্দার ছয় জেলায় কার্ফুর মেয়াদ আরও ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। শনিবার এ ঘোষণা দেয় সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জেলাগুলো হলো- কিলো ১৪, আলমাহজার, আলকুয়েট, গুলাইল, কিলো ১৩ ও পেট্রোমিন। ইউরোপকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত- গবেষণা ॥ ভারতের মুম্বাইয়ে এশিয়ার বৃহত্তম বস্তিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন মারা যাওয়ার পর দেশটির শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ব্যাপক সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য ভারতকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পাশাপাশি করোনায় মৃত্যুপরী ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত। দেশটির চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভারতের অসংখ্য বস্তির একটিতেও যদি করোনার স্থায়ী প্রাদুর্ভাব শুরু হয় তাহলে পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। কারণ ভারতের অধিকাংশ বস্তিতে স্যানিটেশন এবং বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা নেই। এছাড়া হাজার হাজার মানুষ গাদাগাদি করে সেখানে জীবন-যাপন করে। এসব বস্তিতে সামাজিক দূরত্ব শারীরিক কিংবা অর্থনৈতিকভাবে বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব। এদিকে ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লীতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের এক কর্তকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দূতাবাস থেকে এই কর্মকর্তার আক্রান্তের খবর নিশ্চিত করা হয়। তবে তার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। ১ কোটি ২০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে ১২ হাজার রুপী করে দেবে পাকিস্তান ॥ পাকিস্তানে করোনা সঙ্কটে ভুক্তভোগী ১ কোটি ২০ লাখ পরিবারকে ১২ হাজার রুপী করে নগদ অর্থ সহায়তা দিচ্ছে দেশটির সরকার। সম্প্রতি পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. সানিয়া নিশতার রেডিও পাকিস্তানকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, পাকিস্তান সরকারের এহসাস ইমার্জেন্সি ক্যাশ প্রোগ্রামের আওতায় তাদের এ সহায়তা দেয়া হবে। এর জন্য একটি বিশেষ নাম্বারে সহায়তাপ্রত্যাশীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এসএমএস করতে হবে। সেগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রকৃত বিপদগ্রস্তদের সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. নিশাত বলেন, গড়ে একেকটি পরিবারে সাতজন সদস্য ধরলে অন্তত আট কোটি মানুষকে সহায়তা দেয়া হবে। যদি দেখা যায়, প্রকৃত বিপদগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখের বেশি হয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য মন্ত্রিসভায় আবারও প্রস্তাব তোলা হবে। এত বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে ঠিকভাবে সহায়তার অর্থ পৌঁছানো নিশ্চিত করাই সরকারের অনেক বড় চ্যালেঞ্জ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পাকিস্তানে এ পর্যন্ত আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৪০ জন। সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউনসহ বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটির সরকার। চীনে করোনায় মারা গেছেন ৪৭ হাজার- ওয়াশিংটন পোস্ট ॥ করোনাভাইরাসের মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান শুরু থেকে চীন দিয়ে আসছে তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সন্দেহ পোষণ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম। এবার এই বিতর্কে নতুন তথ্য হাজির করেছে মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট। মার্কিন এই দৈনিক চীনা সাময়িকী ক্যাইক্সিনের বরাত দিয়ে বলেছে, চীনে করোনায় কমপক্ষে ৪৬ হাজার ৮০০ জন মারা গেছেন। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া বলেছে, কর্তৃপক্ষ চীনের মধ্যাঞ্চলীয় উহান শহরের দুই মাসের লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়ার পর সেখানকার বাসিন্দারা বলছেন, উহানে করোনায় মাত্র আড়াই হাজার মানুষ মারা গেছেন। এটি তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে উহানের অন্তত সাতটি বৃহৎ শ্মশানে দিনে গড়ে ৫০০ জনের মরদেহ পোড়ানোর পর তাদের স্বজনদের কাছে ছাই-ভস্ম হস্তান্তর করা হয়। সেই হিসাবে দেশটির সরকার করোনায় মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। শুক্রবার উহানের বাসিন্দা ঝ্যাং রেডিও ফ্রি এশিয়াকে বলেছেন, সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যান সত্য হতে পারে না... কারণ সেখানকার চুল্লিগুলোয় ২৪ ঘণ্টাই মরদেহ পোড়ানো হয়েছে। তাহলে সেখানে এত কম সংখ্যক মানুষ কিভাবে মারা যায়? বর্তমানে উহানে সাতটি মরদেহ পোড়ানো কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়াও হ্যানকু, উচ্যাং এবং হ্যানইয়াং শহরেও আছে। এসব চুল্লিতে প্রত্যেক দিনের মরদেহ পোড়ানোর সক্ষমতার হিসেবে-নিকেশ করেছেন। চীনা সাময়িকী ক্যাইক্সিন বলেছে, শুধু একদিনেই হ্যানকু ফিউনারেল হোম কর্তৃপক্ষের কাছে মরদেহ পোড়ানোর পর ছাইভর্তি ৫ হাজার কলস দেয়া হয়েছে। দেশটির সরকার উহানে করোনায় মৃত্যুর যে সংখ্যা প্রকাশ করেছে, এই সংখ্যা তার দ্বিগুণ। এই হিসাবে উহানের সাতটি শ্মশান থেকে প্রত্যেক দিন মরদেহের ছাইভর্তি সাড়ে ৩ হাজার কলস সরবরাহ করা হয়েছে। চুল্লি কর্তৃপক্ষ করোনায় মৃতদের পরিবারকে জানিয়েছে যে, আগামী ৫ এপ্রিল ঐতিহ্যবাহী কিং মিং উৎসবের আগে তারা মৃতদের সৎকার সম্পন্ন করবে। এ হিসেবে গত ২৩ মার্চ থেকে মাত্র ১২ দিনে ৪২ হাজার মরদেহ পোড়ানো হয়েছে। রেডিও ফ্রি এশিয়া আরেকটি হিসাবে বলেছে, উহানের সাতটি শ্মশানের ৮৪টি চুল্লিতে ২৪ ঘণ্টাই মরদেহ পোড়ানোর সক্ষমতা রয়েছে। সেই হিসাবে সেখানে মোট মরদেহ পোড়ানো হয়েছে ৪৬ হাজার ৮০০ জন। হুবেই প্রদেশের একজন বাসিন্দা বলেন, এখানে অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে যে লকডাউনের আগে এবং পরে শহরের ৪০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। পুরোনাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ব্যক্তির ডাকনাম মাও। তিনি বলেন, সম্ভবত কর্তৃপক্ষ ধীরে ধীরে আসল চিত্র প্রকাশ করছে। এটা ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবেও করে থাকতে পারে।
×