ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম মনিটর করছেন ;###;সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন

সঠিক পথেই দেশ ॥ করোনার ধাক্কায় গোটা বিশ্ব দিশেহারা

প্রকাশিত: ১০:০২, ৫ এপ্রিল ২০২০

সঠিক পথেই  দেশ ॥ করোনার ধাক্কায় গোটা বিশ্ব দিশেহারা

নিখিল মানখিন ॥ করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে সরকার। প্রতিরোধ কার্যক্রমের সঙ্গে পুরো সরকারব্যবস্থা ও দেশবাসীর সম্পৃক্ততা দৃশ্যমান। এমনটি মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, সাধারণ ছুটি, সরকারী-বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, দেশের মানুষকে বাসায় ঢুকিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ কঠোর হাতে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে সরকার। সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে করোনার থাবায় দিশেহারা ইউরোপের দেশগুলোর তুলনায় অনেক ভাল আছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত করোনা প্রতিরোধ কমিটি এবং জনপ্রতিনিধিরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। অসহায়, দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে সরকারের। করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের প্রতি মুহূর্ত মনিটরিং করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারী নির্দেশনাসমূহের সঙ্গে জনসাধারণের আন্তরিক অংশগ্রহণের মিলন ঘটলেই করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম সফল হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতি একটি বৈশ্বিক মহামারী। এটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো অসহায় হয়ে পড়ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও আতঙ্কমুক্ত থাকতে পারে না। চীনে মহামারী এবং ইউরোপের দেশগুলোতে করোনার প্রাথমিক সংক্রমণের সময় বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টাইন শতভাগ নিশ্চিত করতে না পারলেও করোনা সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করার কাজটি অনেক আগে শুরু করে বাংলাদেশ। আর দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর করোনা প্রতিরোধে গ্রহণ করতে থাকে একের পর এক কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্থল, সমুদ্র ও বিমানবন্দরগুলোতে বিদেশফেরতদের স্ক্রিনিং কার্যক্রম, করোনার নমুনা পরীক্ষা, হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে বাধ্য এবং জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৮ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সিনেমা হল, সভা-সমাবেশ, কমিউনিটি সেন্টার এবং সকল ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সরকারী ঘোষণা দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসহ স্থল ও সমুদ্রবন্দরসমূহের প্রবেশপথ। ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে দুদফা। অফিস-আদালতের পাশাপাশি গণপরিবহন সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরী সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে নিজ নিজ বাসায় ঢুকিয়ে দিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সর্বশেষ ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি জনকণ্ঠকে বলেছেন, সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে করোনার থাবায় দিশেহারা ইউরোপের দেশগুলোর তুলনায় ভাল আছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামাজিক দূরত্ব কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে মাঠে সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত করোনা প্রতিরোধ কমিটি এবং জনপ্রতিনিধিরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের প্রতি মুহূর্ত মনিটরিং করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারী নির্দেশনাসমূহের সঙ্গে জনসাধারণের আন্তরিক অংশগ্রহণের মিলন ঘটলেই করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম সফল হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশও তাই করছে। বাংলাদেশে করোনা প্রতিরোধে সরকারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে দেশবাসী। অনেক মন্ত্রণালয়েরই করোনা প্রতিরোধে কন্ট্রোল রুম রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হওয়া ব্যক্তিবর্গ ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এটাই প্রমাণ করে যে গোটা সরকারব্যবস্থা করোনা প্রতিরোধে সার্বিকভাবে যুক্ত হয়েছে। করোনা বিষয়ে একাধিক কমিটি আছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি জাতীয় কমিটি আছে। প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে। একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ আছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম আছে। সব ধরনের কাজের সমন্বয়ের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে একটি সমন্বিত কন্ট্রোল রুম আছে। আইইডিসিআরে আছে পৃথক কন্ট্রোল রুম। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি কন্ট্রোল রুমও করোনা নিয়ে কাজ করছে। প্রস্তুতির ব্যাপারে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি রশীদ-ই-মাহবুব জনকণ্ঠকে বলেন, সরকার দেরিতে হলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি দেয়া, দেশের বিভিন্ন স্থান লকডাউন করা, লম্বা সরকারী ছুটি দেয়া, পরীক্ষার আওতা বৃদ্ধি, সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টি, লোকজনকে নিজ নিজ বাসায় ঢুকিয়ে দেয়া, কোয়ারেন্টাইনে রাখতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ- এসব পদক্ষেপ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান বলেন, করোনাভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতি একটি বৈশি^ক মহামারী। এটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিশে^র উন্নত দেশগুলো অসহায় হয়ে পড়ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও আতঙ্কমুক্ত থাকতে পারে না। চীনে মহামারী এবং ইউরোপের দেশগুলোতে করোনার প্রাথমিক সংক্রমণের সময় বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টাইন শতভাগ নিশ্চিত করতে না পারলেও করোনা সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করার কাজটি অনেক আগে শুরু করে বাংলাদেশ। আর দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর প্রতিরোধে গ্রহণ করতে থাকে একের পর এক কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ জনকণ্ঠকে বলেন, সমন্বিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চালাচ্ছে সরকার। দেশে এখন সাধারণ ছুটি চলছে। মানুষ থেকে মানুষকে দূরে রাখতে, জনসমাগম রহিত করতে এ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ছুটির পাশাপাশি দেশের কয়েকটি জেলায় কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা আরোপ করেছে সরকার। এটা কার্যকর করতে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন তৎপর আছে। তাদের সহায়তা করছে স্থানীয় পুলিশ। মূল উদ্দেশ্য ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মী করোনা মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩১ দফা নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করলে করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম দ্রুত সফলতার মুখ দেখবে। করোনা প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি ॥ করোনা প্রতিরোধে এর আগে চলতি মাসের এক তারিখে একটি জাতীয়সহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও কমিটি গঠন করে সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের জাতীয় কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব, ১৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব; স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক রয়েছেন। এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইউনিসেফ এবং ইউএসএআইডির প্রতিনিধি রয়েছেন। জাতীয় কমিটি দেশের অভ্যন্তরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তার বিষয়ে পরামর্শ ও স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিসমূহকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছে। করোনা প্রতিরোধ বিভাগীয় কমিটি গঠন ॥ করোনাভাইরাস প্রতিরোধসহ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে জাতীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কমিটির পর গত ১৮ মার্চ বিভাগীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে কমিটিতে বিভাগীয় শহরের জেলা প্রশাসকসহ ১২ জন সদস্য রয়েছেন। করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যে কোন তথ্য পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ জাতীয় কমিটির পরামর্শ প্রহণ করবে এই কমিটি। বিভাগীয় কমিটি করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে। এছাড়াও করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, প্রয়োজনে কোয়ারেন্টাইনসহ আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। করোনা প্রতিরোধে গাইডলাইনসমূহ ॥ করোনা প্রতিরোধে অনেক গাইড লাইন তৈরি করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-জাতীয় কোভিড-১৯ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে করোনা ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোল নীতিমালা। কোভিড-১৯ প্যারেন্টিং। করোনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পিপিই এর যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার। করোনা জীবাণুমুক্তকরণ এবং পরিবেশগত সংক্রমণ রোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা। করোনা রোগেমৃতব্যক্তির মৃতদেহ নিরাপদভাবে দাফন/ সৎকার/ ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা। করোনা মানসিক চাপমুক্ত থাকতে বড়দের জন্য গাইডলাইন। করোনা মানসিক চাপমুক্ত থাকতে ছোটদের জন্য গাইডলাইন। করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় প্রতিবন্ধীদের জন্য বিবেচ্য বিষয়সমূহ। করোনার জন্য হাসপাতাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। করোনার জন্য বিমানবন্দর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। করোনা মোকাবেলায় জীবাণুনাশক দ্রবণ তৈরির নিয়ম। বিশ্বজুড়ে করোন প্রতিরোধে গর্ভবতী মা ও পরিবারের করণীয়। করোনা সংক্রান্ত কুসংস্কার দূরীকরণ। করোনা কেইস ডেফিনেশন। কোভিড-১৯ এবং সামজিক কুসংস্কার বা সোশ্যাল স্টিগমা। করোনাভাইরাস রোগ/ কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা সন্দেহে থাকা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন সম্পর্কে জ্ঞাতব্য। করোনা আক্রান্ত সন্দেহজনক রোগী যার মৃদু সংক্রমণ রয়েছে এবং করোনা আক্রান্ত রোগী যার আর হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই তাদের জন্য নির্দেশনা। জরুরী প্রসূতি সেবা গাইডলাইন ২০১৯। ডিজিএইচএস-২ ডাটা এন্ট্রি ফর্ম সংক্রান্ত নির্দেশনা। ডিজিএইচএস-২ ডাটা প্রদান সম্পর্কিত নির্দেশিকা। সিএইচসিপিদের ই-মেইল সম্পর্কিত নির্দেশিকা। ডিজিএইচএস-২ এ প্রোফাইল হালনাগাদকরণ সম্পর্কিত নির্দেশিকা। আইসিটি ফোকাল পার্সন গাইডলাইন। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১। জাতীয় আইসিটি নীতি ২০০৯। ন্যাশনাল নিওন্যাটাল হেলথ স্ট্রাটেজি এ্যান্ড গাইডলাইন ফর বাংলাদেশ। ন্যাশনাল গাইডলাইন অন এমবিটি ২০১০ এবং আইসিডি-১০। সিএইচসিপি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সহায়িকা। স্বাস্থ্য সহকারীর ট্যাবলেট প্রশিক্ষণ সহায়িকা ২০১৩। স্বাস্থ্য সহকারীর ট্যাবলেট প্রশিক্ষণ সহায়িকা ২০১৪। ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন অন ইনফ্যান্ট এ্যান্ড ইয়াং চাইল্ড (আইওয়াইসিএফ)। বাংলাদেশ ক্লাবফুড সেবার জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার গাইডলাইন। ন্যাশনাল গাইডলাইন অন ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট অব চিকুনগুনিয়া ফিভার। বর্তমানে প্রস্তুত করোনাভাইরাস পরীক্ষাকেন্দ্রসমূহ ॥ ঢাকায় আইইডিসিআর, আইপিএইচ, আইসিডিডিআর’বি, আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ, আইদেশী, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন এবং কুর্মিটোল জেনারেল হাসপাতালে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর ঢাকার বাইরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিকস এ্যান্ড ইনফরমেশন ডিজিজেস, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজে করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। করোনা রোগীর হাসপাতাল ॥ করোনা চিকিৎসার জন্য নির্বাচিত সরকারী হাসপাতালগুলো হলো- বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল এবং মিরপুর লালকুঠি মাতৃ ও শিশু হাসপাতাল। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত প্রতিরোধ কার্যক্রম ॥ করোনাভাইরাসের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কমপক্ষে ১২টি মন্ত্রণালয় এ কাজে যুক্ত হয়েছে। ৩১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরা ছাড়াও এতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা যুক্ত হন। এছাড়া এ কাজে যুক্ত আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। টেস্ট কিটস, পিপিই, করোনা সংক্রান্ত কল এবং স্ক্রিনিং অবস্থা ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জনকণ্ঠকে জানান, দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার আগে থেকেই স্থল, সমুদ্র ও বিমানবন্দরসমূহে প্রত্যেক যাত্রীকে স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয়। এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহ ৩ লাখ ২২ হাজার ৪৩০ জন, সমুদ্রবন্দরসমূহে ১১ হাজার ৭৪৮ জন, স্থলবন্দরসমূহে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৩৫১ জন এবং ক্যান্টনমেন্ট রেলেওয়ে স্টেশনে ৭ হাজার ২৯ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। অর্থাৎ স্ক্রিনিং করা হয়েছে ৬ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৮ জনকে। এ পর্যন্ত মোট সংগৃহীত টেস্ট কিটস ৯২ হাজার এবং বিতরণ করা হয়েছে ২১ হাজার। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৭১ হাজার টেস্ট কিটস। এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৬৯৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন এবং ২৬০ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সংগৃহীত পিপিইর সংখ্যা ৪ লাখ ২৮ হাজার ৬০টি এবং বিতরণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬৫০টি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৬৪ হাজার ৪১০টি। এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য বাতায়ন, ৩৩৩ নম্বর ও আইইডিসিআরের নম্বরে করোনা সংক্রান্ত মোট কল এসেছে ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৬১৪টি । গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য বাতায়নে ৬২ হাজার ১৭৩টি, ৩৩৩ নম্বরে ১৫৪১টি এবং আইইডিসিআরের নম্বরে ৩ হাজার ৮৯টি অর্থাৎ মোট ৬৬ হাজার ৮০৩টি কল এসেছে। প্রতিবন্ধকতা ॥ সরকার সামাজিক দূরত্ব তৈরির উদ্দেশ্যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। ছুটি পেয়ে মানুষ দল বেঁধে ঢাকা ছেড়েছে। ফেরিঘাট, রেলস্টেশন বা বাসস্ট্যান্ডের ভিড় গণজমায়েতের চেহারা পেয়েছিল। ঢাকা শহরে গাড়ি চলতে শুরু করেছে, অলিগলিতে মানুষের ভিড়। দেশের কোথাও কোথাও হাটবাজারে জনসমাগম হচ্ছে। ত্রাণ বা খাদ্যসহায়তা নিতেও মানুষ ভিড় করছে। এসব সংক্রমণ প্রতিরোধের অন্তরায় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এখানে মানুষের আচরণের বিষয়টি যেমন আছে, সরকারী কাজে সমন্বয়হীতার বিষয়টিও আছে। অন্য চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে স্বাস্থ্য খাতের সক্ষমতা, অবকাঠামোগত, সরঞ্জাম সরবরাহে ও জনবলের বিষয়ে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কর্মসূচী বাস্তবায়ন করাটাও কঠিন হয়ে পড়ছে।
×