ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জ্বর শ্বাসকষ্টে ৪ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ৫ এপ্রিল ২০২০

  জ্বর শ্বাসকষ্টে ৪ জনের মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাসে দেশের বিভিন্ন জেলায় শনিবার পর্যন্ত ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর যাদের শরীরে করোনার লক্ষণ পাওয়া যায়নি তাদের কোয়ারেন্টাইন শেষে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া করোনা সন্দেহে অনেক বাড়িঘর, দোকানপাট ও এলাকা লকডাউন করে দেয় হয়েছে। অন্যদিকে শনিবার শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, সর্দি ও জ্বরে দুই শিশু, এক বৃদ্ধ ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া করোনার কারণে অনেককে আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে নতুন করে যাদের করোনা আছে বলে সন্দেহ করা হয়েছে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে শরীয়তপুরে রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা লাশ নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানা য়ায়। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। লক্ষ্মীপুর ॥ লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হিমন নামে পাঁচ বছর বয়সের শিশু এবং শ্বাসকষ্ট ও খিচুনীসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে আড়াই বছরের হাবিবুর রহমান নামে আরেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে কমলনগর চরমার্টিন ৯নং ওয়ার্ড় থেকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে শনিবার সকালে হিমন নামে শিশুটি মারা যায়। এর আগে শুক্রবার রাতে উপজেলার তোরাবগঞ্জ নিজ বাড়িতে আড়াই বছরের হাবিবুর রহমান নামে অপর শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনায় চরমার্টিনে ৬টি এবং তোরাবগঞ্জের ৩টিসহ ৯টি পরিবারকে চলাচলের ওপর লকডাউন করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরুল আবছার জানান, চরমার্টিনের হিমন (০৫) নামে শিশুটি গত ৩/৪দিন যাবৎ জ্বরে ভুগছিলো। অবস্থার অবনতিতে নোয়াখালী মেডিক্যালে নেয়ার পথে শনিবার সকাল প্রায় সাড়ে ৭টার দিকে শিশু হিমন মারা যায়। করোনা সন্দেহে ওই পরিবারসহ আশপাশের ৬টি পরিবারের চলাচলের ওপর লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে লকডাউন করে দেয়া হয়। এর আগে করোনা সন্দেহে তোরাবগঞ্জের আড়াই হারিবুর রহমান নামে শিশুর পরিবারসহ তিনটি পরিবারকে চলাচলের ওপর লকডাউন করে দেয়া হয়। শরীয়তপুর ॥ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এক নারীর জ্বর ও মাথাব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর মারা যাওয়ায় করোনা সন্দেহে লাশ নিয়ে পালিয়ে গেছে স্বজনরা। ঐ নারীর বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে। শনিবার ১০টার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে মারা যান ওই নারী। মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহের প্রস্তুতিকালে স্বজনরা মরদেহ নিয়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মুনির আহম্মেদ খান। এদিকে এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহেরের নির্দেশে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মাহাবুর রহমান, পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আসলাম উদ্দিন ও জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের একটি টিম ওই গ্রামে গিয়ে মৃতের লাশ দাফন করেছেন এবং করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পালং থানার ওসি আসলাম উদ্দিন বলেন, আমি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ডাঃ সোবাহান এলাকায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করি। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পরিবারের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। চাঁদপুর ॥ চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের মুন্সিরকান্দি গ্রামে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে জুলেখা বেগম (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার আশপাশের ৫টি বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন। মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ নুসরাত জাহান মিথেন বলেন, সিভিল সার্জনের নির্দেশে ওই নারীর মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তিন বাড়ির ২০-২৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। রাজশাহী ॥ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে একজন নার্সসহ ১২ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার সকালে হাসপাতালে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান চিকিৎসকরা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চিকিৎসাধীনদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ ও ছয়জন নারী। তাদের বেশির ভাগেরই বর্তমান অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে। তবে তিনজন পুরুষ ও একজন নার্সকে পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের মিডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও করোনা চিকিৎসক সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল হক আজাদ। এদিকে শনিবার জেলা প্রশাসনের পৃথক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত মার্চ মাসে রাজশাহীতে বিদেশ থেকে এসেছে দুই হাজার ৯৫৯ জন। এর মধ্যে শনিবার পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয় এক হাজার ৮০ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩১৪ জন। আর ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৭৬৬ জনকে। গত ২০ ঘণ্টায় চারজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। এরা সভায় জেলার মোহনপুরে। বগুড়া ॥ বগুড়ায় শহরের পুরান বগুড়া এলাকায় শনিবার দুপুরে ছেলের বাড়িতে বেড়াতে এসে সত্তর বছরের এক বৃদ্ধ শ^াসকষ্ট নিয়ে মারা গেছেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্কতামূলকভাবে করোনা সন্দেহে মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা নিয়েছে। বগুড়ার সিভিল সার্জন ডাঃ গওসুল আজিম চৌধুরী জানান, শ^াসকষ্টে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বগুড়া সদর থানার ওসি বিকেলে জানান, পুলিশের একটি টিম সেখানে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে ওই বৃদ্ধ ১০/১২ দিন আগে গাইবান্ধা থেকে পুরানবগুড়ায় ছেলের বাড়িতে এসেছিলেন। এদিকে বগুড়ায় করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও ২ জন বগুড়া মোহাম্মাদ আলী আইসোলেশন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মোহাম্মাদ আলী হাসপাতাল শুধু করোনাভাইরাসের লক্ষণযুক্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন হাসপাতাল হিসাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে। নতুন ৩ জন নিয়ে এ পর্যন্ত ৭ জন রোগী সেখানে ভর্তি হলো। এদিকে শনিবার বগুড়া থেকে মোট ১১ জন করোনাভাইরাসের লক্ষণযুক্ত রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহীতে স্থাপিত ল্যাবে পাঠান হয়েছে বলে বগুড়ার সিভিল সার্জন ডাঃ গওসুল আজিম চৌধুরী জানিয়েছেন। নেত্রকোনা ॥ জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার বড়হাটি গ্রামে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ নিয়ে নৃপেন্দ্র সরকার কাচু (৫৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। শনিবার সকাল ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন, এমন সন্দেহে স্থানীয় প্রশাসন ওই ব্যক্তির বাড়িসহ আশপাশের তিনটি পরিবারের সদস্যদের কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে। জানা গেছে, নৃপেন্দ্র সরকার ঢাকায় তার এক ভাতিজার বাসায় থাকতেন। ২০-২৫ দিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে জ¦র, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। এসব উপসর্গ নিয়েই শনিবার সকাল ৬টার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে মারা যান। গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধায় করোনায় আক্রান্ত দুই আমেরিকা প্রবাসীর সংস্পর্শে আসা আরও এক নারী নতুন করে করোনাভাইরাস পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার হবিবুল্যাপুর গ্রামের পশ্চিম (হিন্দু) পাড়া লকডাউন করা হয়েছে। এনিয়ে শনিবার পর্যন্ত জেলায় ৫ জন করোনা ভাইরাস পজেটিভ রোগী শনাক্ত হলো। এর মধ্যে ২ জন আমেরিকা প্রবাসী মা ও ছেলে এবং এই দুইজনের সংস্পর্শে আসা বাকি ৩ জন। এই ৫ জনেই পরস্পরের আত্মীয় স্বজন। শনিবার দুপুরে সাদুল্যাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নবীনেওয়াজ এই লকডাউন আদেশ জারি করেন। এদিকে গাইবান্ধায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় ১০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ জানান, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদেশ ফেরত ১৬৩ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে রক্ত পরীক্ষার ফলাফল না জানা পর্যন্ত সন্দেহজনক রোগীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। রংপুর ॥ রংপুরে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। তার সংস্পর্শে যাওয়ায় লাল পতাকা উড়িয়ে দিয়ে আট বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার সদ্যপুস্করিণী ইউনিয়নের জানকি ধাপের হাট এলাকার ৮টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। লকডাউন ঘোষণা করা পরিবারের এক বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় এবং তার সংস্পর্শে আসায় জেলা সিভিল সার্জন ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই এলাকায় গিয়ে পাশাপাশি আটটি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেন। এদিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের (রমেক) পিসিআর ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা ৪২ জনের নমুনায় করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাদের আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে করোনা আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ প্রতিরোধ বিষয়ক গঠিত টাস্কফোর্সের প্রধান ও রমেক অধ্যক্ষ ডাঃ একেএম নুরুন্নবী লাইজু জানান, পিসিআর ল্যাবরেটরিতে বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে জমা হওয়া ৪২ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়নি। কক্সবাজার ॥ টেকনাফ থেকে ঢাকায় ফিরে আসা এক র‌্যাব সদস্যের করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। তার সংস্পর্শে আসা টেকনাফের ৭টি দোকান ও ৮টি বাড়িসহ মোট ১৫টি বাড়ি ও দোকান উপজেলা প্রশাসন লকডাউন করেছে। করোনা শনাক্ত ওই র‌্যাব সদস্য আক্কাস আহমদের বাড়ি টেকনাফে। শুক্রবার ১০টায় টেকনাফ পুরাতন পল্লান পাড়ায় বাড়ি ও দোকান গুলো লকডাউন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম। সিলেট ॥ সিলেট বিভাগে নতুন করে আরও ১৩ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সেই সাথে ৯৫ জনকে কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৭ জন ও মৌলভীবাজারে ৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সিলেট ও হবিগঞ্জে নতুন করে কাউকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়নি। তবে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আরও ২ জনকে নতুন করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জে করোনা পরীক্ষার জন্য এ পর্যন্ত ১৭ জনের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার পাঁচ উপজেলার ৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ২ জন, গজারিয়া উপজেলায় ১ জন, টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ২জন এবং শ্রীনগর উপজেলায় ২ জন রয়েছেন। এর আগে শুক্রবার সংগ্রহ করা ৯ জনের সোয়াব শনিবার সকালে আইইডিসিআরে নেয়া হয়েছে। শুক্রবার মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের ১ জন ডুবাই প্রবাসীর সোয়াব সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া গজারিয়া, টঙ্গীবাড়ি, লৌহজং ও সিরাজদিখান উপজেলায় দু’জন করে আরও আট জনের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছিল। হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জ জেলায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হোম কোয়ারান্টাইনে রয়েছে ১৩৭ জন। কোয়ারান্টাইন শেষ হয়েছে ৯৬৭ জনের। তবে কোন নতুন আক্রান্ত নেই। জেলা পর্যায়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। পঞ্চগড় ॥ পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা থেকে ফেরা তিন ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সকালে দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের দুই ব্যক্তি ঢাকা থেকে ফিরলে তাদের আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়। এর আগে ঢাকা গাজীপুর থেকে ফেরা আরেক ব্যক্তিকে আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়। আইসোলেশনে থাকা এই তিন ব্যক্তিরই করোনা সংক্রান্ত নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ॥ চট্টগ্রামে প্রথম শনাক্ত সেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৬৭ বছর বয়সের বৃদ্ধ রোগীর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। নগরীর দামপাড়া এলাকার এ বাসিন্দা শনিবার একটি ক্লিনিকে ভর্তি হতে না পেরে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যান। সেখানে তাকে ভর্তি করে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডিতে। রাত ৮টার পর ৩২টির মধ্যে এ রোগীর নমুনা পজেটিভ হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে, এ ঘটনার পর রাতেই তার বাড়িসহ এলাকার মোট ৬টি ভবন লকডাউন করা হয়। এছাড়া খবর নিয়ে তিনি যেখানে যেখানে গিয়েছিলেন সে রকম আরও বেশ কয়েকটি বাড়ি লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের দেওয়ানহাট, পটিয়া ও সাতকানিয়া। এছাড়া নগরীর যে ক্লিনিকে তিনি চিকিৎসা নিতে গিয়ে ফিরে যান সে ক্লিনিকের ৩ ডাক্তারসহ ১৮ নার্সকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে জনকণ্ঠের পটিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়া এলাকার একটি বাসায় বেয়াইকে দেখতে যাওয়ায় এবার পটিয়া পৌর সদরের একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটে পুলিশের দুই কনস্টেবলকে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। দু’জনের একজন বাগেরহাট সদর হাসপাতালে এবং অপরজনকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তাদের ভর্তি করা হয় বলে শনিবার বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডাঃ কে.এম হুমাযুন কবির জানান। বাগেরহাটে এ পর্যন্ত ১৬৮৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩২ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে গিয়েছেন। আর হোম কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ করেছেন ১ হাজার ৪৫৪ জন। গত ১ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে তিন হাজার ৮৮২ জন প্রবাসী বাগেরহাটে আসেন।
×