ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কী আছে রজার ফেদেরারের ভাগ্যে!

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ৫ এপ্রিল ২০২০

  কী আছে রজার ফেদেরারের ভাগ্যে!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সারা বিশ্বকে একযোগে আতঙ্কিত করা ভয়ঙ্কর এক ভাইরাসের নাম করোনা। বিশ্বজুড়েই তান্ডব চলছে প্রাণঘাতী ভয়ঙ্কর বিভীষিকাময় কোভিড-১৯ নামের এই ভাইরাস। করোনার কারণে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই এখন লকডাউনে। স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ব। গোটা দুনিয়া যেন পরিণত হয়েছে এক মৃত্যুপুরীতে। অন্য সবকিছুর মতো খেলাধুলার জগতেও করোনা নিয়ে এসেছে ঘোর অন্ধকার। ফুটবল, ক্রিকেট এবং টেনিসসহ সব ধরনের খেলাই এখন বন্ধ। করোনাভাইরাসের কারণে সর্বশেষ গত সপ্তাহে বাতিল করে দেয়া হয়েছে টেনিসের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন এবং ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট উইম্বলডনও। সার্বিক পরিস্থিতি বিচার-বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। এর ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম বাতিল করা হলো উইম্বলডন। টেনিসের ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট বাতিল হওয়ায় কপাল পুড়েছে বেশকিছু সিনিয়র খেলোয়াড়ের। কেননা, আগামী বছর এই টুর্নামেন্ট হলে তাদের বয়স হবে চল্লিশ ছুঁই ছুঁই কিংবা তারও বেশি। যে কারণে তাদের সামনে এখন ঘোর অমানিশা। এই তালিকায় রয়েছেন টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি রজার ফেদেরারের নাম। যার বর্তমান বয়স ৩৮। আসছে আগস্টে ঊনচল্লিশে পা রাখবেন তিনি। অর্থাৎ আগামী বছরে ফেড এক্সপ্রেসের বয়স হবে চল্লিশ। উইম্বলডন বাতিল হওয়ার পরই তাই হতাশা প্রকাশ করেন ফেদেরার। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ২০টি গ্র্যান্ডস্লাম জেতা সুইজারল্যান্ডের এই টেনিস তারকা সামাজি যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে লিখেছেন, ‘হতাশ-বিধ্বস্ত লাগছে।’ চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে শুরুর কথা ছিল উইম্বলডন। কিন্তু করোনাভাইরাসের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতা বাতিল করাটাকেই সঠিক সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের চেয়ারম্যান ইয়ান হিউইট। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন চেষ্টা করব এ বিপদে স্থানীয় জনগণকে আমাদের সাধ্যমত সাহায্য করতে।’ ২০১৮ সারে সর্বশেষ কোন গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন রজার ফেদেরার। সেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরার পর আর কোন মেজর টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি তিনি। সুইস কিংবদন্তির সামনে এখন সুযোগ রয়েছে ইউএস ওপেনে খেলার। তবে সেটাও নির্ভর করছে বর্তমান পরিস্থিতির ওপর। আগামী ৩১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়ার কথা মৌসুমের শেষ এই গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট। যদিও পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ থাকে তাহলে নিশ্চই ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিবে আয়োজকরা। কেননা আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত সব ধরনের টেনিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ সামনের চার মাসের করোনা পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে বিশ্ব টেনিস সংস্থা। যে কারণেই রজার ফেদেরারের গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের সম্ভাবনা খুব কম দেখছেন টেনিসবোদ্ধাদের অনেকে। এই মৌসুমে যদি কোর্টে আর টেনিস না ফিরে তাহলে ফেদেরারের গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক তারকা টোড উডব্রিজ। উইম্বলডনের দ্বৈতে নয়বার শিরোপাজয়ী এই অস্ট্রেলিয়ান বলেন, ‘সামনের বছরেও যদি তাকে কোর্টে দেখা যায় তাহলে এই প্রশ্নটি তাকেই করতে হবে যে, কী অনুপ্রেরণা নিয়ে কোর্টে নামবেন তিনি। উইম্বলডন বাতিলের সিদ্ধান্ত তার আরও একটি কিংবা দুটি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের সম্ভাবনা একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে।’ রজার ফেদেরারের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদাল। একটি গ্র্যান্ডস্লাম কম জিতে সুইস তারকার ঠিক পরেই অবস্থান করছেন এই স্প্যানিয়ার্ড। উইম্বলডন বাতিল হওয়ায় তার মনও খারাপ। এ প্রসঙ্গে সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৯টি গ্র্যান্ডস্লাম জেতা রাফায়েল নাদাল বলেছেন, ‘আমরা এখন পরিস্থিতির শিকার। এটি বাতিল হওয়াটা আমাদের জন্য দুঃখজনক।’ নাদালের বর্তমান বয়স ৩৩। টেনিস কোর্টে এখনও দুর্বার গতিতে ছুটে চলছেন তিনি।
×