ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর ৩১ নির্দেশনা

প্রকাশিত: ০৭:৪৯, ৫ এপ্রিল ২০২০

প্রধানমন্ত্রীর ৩১ নির্দেশনা

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার জরুরী ভিত্তিতে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই গ্রহণ করেছে। ১০ দিনের ঘরে থাকা ছুটিও দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো হয়েছে। দুঃখজনক হলো, এখনও মানুষের ভেতর অসতর্কতা ও অসচেতনতা রয়ে গেছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকেও বাধ্য হয়ে কঠোর অবস্থানে চলে যেতে হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর পুনঃপুন সতর্কতার আহ্বান থেকে এটাই স্পষ্ট যে, প্রতিক্ষণই তিনি চলমান সঙ্কট সম্পর্কে অবহিত এবং দেশবাসীকে সুরক্ষার জন্য সর্বতোভাবে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি যথার্থই বললেন, ‘প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। বাইরে বের হলে মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলুন। যাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিদেশ থেকে ফিরেছেন তাঁরা ১৪ দিন সম্পূর্ণ আলাদা থাকুন। ঘনঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশি দিতে হলে রুমাল বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিন। যেখানে-সেখানে কফ-থুতু ফেলবেন না। করমর্দন বা কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন। মুসলমান ভাইয়েরা ঘরেই নামাজ আদায় করুন। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও ঘরে বসে প্রার্থনা করুন।’ এর প্রতিটি বাক্য বর্তমান সময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নতুনভাবে ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জাতির সামনে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে কোন ধরনের লুকোচুরি না করার আহ্বান জানিয়েছেন। মহামারীর সময় মেডিক্যাল ম্যানেজমেন্ট বা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সুরক্ষার বিষয়টিই অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। তাই প্রধানমন্ত্রী আবারও বলেছেন, কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় নিয়োজিত সব চিকিৎসক, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, এ্যাম্বুলেন্স চালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। সারাদেশের সব সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম আরও জোরদার করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে দৃষ্টি দেয়ার ওপরও তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, জাতীয় এ দুর্যোগে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সব সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী যথাযথ ও সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেনÑ এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যেমন: কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, রিক্সা/ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, পথশিশু, স্বামী পরিত্যক্তা/বিধবা নারী এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ নজর রাখাসহ ত্রাণ সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করার নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে বর্তমান জনকল্যাণমুখী সরকারের নীতিই প্রতিফলিত হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মীরা যে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে যথাযথ ভূমিকা পালন করে চলেছেন সে বিষয়ে আলোকপাত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন ধরনের গুজব ও অসত্য তথ্য যাতে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার তাগিদ দিয়েছেন আবারও। এটা সত্য যে, ডিজিটাল প্লাটফর্মে নানা গুজব রটানো হচ্ছে। তাই জনতার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গুজবে কান দিবেন না এবং গুজবে বিচলিত হবেন না। প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা সবার জন্য প্রযোজ্য। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা শতভাগ মেনে চললে দেশে জাতি চলমান দুঃসময় পাড়ি দিয়ে নতুন আগামী রচনা করতে পারবে বলে আশা করা যায়।
×