ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রেই ৫৬

বিভিন্ন দেশে এ পর্যন্ত ৮৬ বাংলাদেশীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ৪ এপ্রিল ২০২০

 বিভিন্ন দেশে এ পর্যন্ত ৮৬ বাংলাদেশীর মৃত্যু

ফিরোজ মান্না ॥ করোনা ভাইরাসে বিদেশে বাংলাদেশী নাগরিকের মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। দিন যত যাচ্ছে মৃত্যুর হার তত বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এরপরের অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। পরিস্থিতি দিন দিন জটিল আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে ৮৬ বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাস আক্রান্তে গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১৮ বাংলাদেশী মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে অন্তত ৫৬ বাংলাদেশী মারা গেলেন। আর যুক্তরাজ্যে নতুন করে আরও ৮ বাংলাদেশীর মৃত্যুসহ মোট ১৯ বাংলাদেশী নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। এই দুটি দেশ বিশ্বের উন্নত দেশ হলেও মৃত্যুর হার এখানেই বেশি। অন্যান্য দেশে মৃত্যুর হার অনেক কম বলে সরকারী তথ্যে জানা গেছে। এদিকে, বিদেশে অবস্থিত এক কোটির বেশি বাংলাদেশী কর্মীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দূতাবাস এবং হাইকমিশনের মাধ্যমে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। কর্মী নিয়োগকারী দেশগুলোতে করোনার ক্ষতিগ্রস্তদের ৫ হাজার টাকা করে দেয়ার জন্য দূতাবাস ও হাইকমিশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি কর্মী রয়েছে। এসব দেশে কর্মীরা ঘরবন্দী জীবন যাপন করছেন। তাদের অনেকের খাবার শেষ হয়ে গেছে। তাদের খোঁজখবর রাখার জন্য দূতাবাস ও মিশনগুলোকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ই-মেল করা হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে বাংলাদেশী লাখ লাখ কর্মী কাজ করেন। এসব দেশে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। প্রতিটি দেশে বর্তমানে লকডাউনে রয়েছে। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। দিন যত যাচ্ছে আক্রান্ত দেশের সংখ্যা তত বাড়ছে। করোনাভাইরাসের কারণে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশীরা শুধু আতঙ্কেই নন তারা চাকরিও হারাচ্ছেন। এই মুহূর্তে ২ লাখ ৬০ হাজারের মতো বাংলাদেশী ইতালিতে রয়েছেন। ইতালির বেশির ভাগ শহরে জনকোলাহল থেমে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তালা ঝুলছে। সুপারশপ, রেস্টুরেন্ট, নাইট ক্লাবগুলোর বেশির ভাগই বন্ধ। সিনেমা হল, জাদুঘরও বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতালির মতো সবগুলো আক্রান্ত দেশে বাংলাদেশীদের একই অবস্থা বিরাজ করছে। ঘরে বসে তাদের জীবন যাপন করছেন। তাদের খাবার সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। সৌদি আরবে অফিসিয়ালি ২৬ লাখের বেশি বাংলাদেশী কাজ করেন। সেখানে বেশ কয়েক এলাকায় কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে সৌদি আরবের বেশ কয়েকটি শহরে ‘কারফিউ’ জারি করা হয়েছে। বিনা বেতনে মালিক তাদের ২/৩ মাসের ছুটি দিয়ে দিয়েছে। ছুটি দেয়ার সময় কর্মীদের বলে দেয়া হয়েছে-তারা যেন ঘরের বাইরে না যান। ফলে তাদের ঘরে বন্দী জীবন যাপন করতে হচ্ছে। যার যার কাছে যে পরিমাণ টাকা ছিল তা দিয়ে খাবার কিনে ঘরে নিলেও পরিস্থিতি যে হারে অবনতি হচ্ছে তাতে তাদের খাদ্য সঙ্কট দেখা দেবে। সৌদির পরেই ওমান, কাতার, জর্দান, লেবানন, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাতেও একই অবস্থায় পড়েছে কর্মীরা। গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ৬০ লাখের বেশি কর্মী রয়েছে। এদিকে মালয়েশিয়াতে ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশী কর্মী কাজ করেন। এই কর্মীদের এখন কোন কাজ নেই।
×