ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সোসাইটি পারলে সিটি কর্পোরেশন পারে না কেন?

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ৪ এপ্রিল ২০২০

 সোসাইটি পারলে সিটি কর্পোরেশন পারে না কেন?

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বেশির ভাগ এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা চোখে পড়লেও ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যায় হাতে গোনা কয়েকটি সোসাইটিতে। বিশেষ করে গুলশান, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরার মতো কয়েকটি সোসাইটিতে গেলে দেখা যায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে, ড্রেনেজ সিস্টেম এমন কি যান চলাচল সব কিছুতেই রয়েছে একটি আধুনিক নগরের শৃঙ্খলার ছাপ। কারণ সেখানকার সার্বিক ব্যবস্থাপনা দেখভাল করছে স্থানীয় কমিউনিটির লোকজন। ঢাকাকে একটি আধুনিক রূপ দিতে ২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশনকে দুই ভাগে ভাগ করে শহর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপরও দুই সিটি কর্পোরেশন তাদের আওতাধীন এলাকাগুলোয় এমন সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। এর প্রমাণ দেখা যায়, ঢাকার মগবাজারের রেললাইন সংলগ্ন এলাকা পার হয়ে রামপুরা, বনশ্রী এবং মেরাদিয়ার বেশ কয়েকটি স্থানে। সেখানে চোখে পড়ে কিছু দূর পর পর পড়ে আছে আবর্জনার স্তূপ। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা এবং খোলা ড্রেনের দুর্গন্ধে নিশ্বাস নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বনশ্রী সি ব্লকের কাছে একটি স্কুলের পাশেই চোখে পড়ে ময়লার ভাগাড়, সেখানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা যত্রতত্রভাবে পাশের লেকে ময়লা ফেলছেন। সিটি কর্পোরেশনকে প্রতি মাসে টাকা দিয়েও কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে হতাশ এই এলাকার বাসিন্দা মৌটুসি রহমান। তিনি বলেন, যখন ওই লেকের পাশ দিয়ে আসি দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে। তারপর রাত হলে মশার তা-ব। এই যে রাস্তার পাশে ময়লা ফেলে রেখেছে, এগুলো পরিষ্কারের নাম নেই। পানি জমে মশা হচ্ছে, দেখার কেউ নেই। আমরা কিন্তু এই সার্ভিসগুলোর জন্য প্রতি মাসে টাকা দিচ্ছি। কিন্তু কোন সেবা পাচ্ছি না। অথচ পুরো ভিন্ন চিত্র রামপুরা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে গুলশান, নিকেতন, বনানী, বারিধারা ও বসুন্ধরা এলাকায়। এই এলাকাগুলো জনবহুল হওয়া সত্ত্বেও রাস্তাঘাটে কোন আবর্জনা নেই। সবখানেই ছিমছাম পরিবেশ। এর একটাই কারণ এই প্রতিটি এলাকা তাদের নিজস্ব কমিউনিটির উদ্যোগে এই কাজগুলো করিয়ে থাকেন। এজন্য তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা ও দানের মাধ্যমে বাড়তি জনবল নিয়োগ দিয়ে থাকেন যেমন কমিউনিটি নিজস্ব পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ট্রাফিক পুলিশ, পাহারাদার ইত্যাদি। যেসব ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের সহায়তার প্রয়োজন হয় সেখানে এই সোসাইটি তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে কাজ আদায় করে থাকে বলে জানান গুলশান সোসাইটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান সদস্য শিরিন শিলা। তিনি বলেন, আমরা সোসাইটির পক্ষ থেকে মূল যে কাজটি করি সেটা হচ্ছে আমরা কর্তৃপক্ষের ওপর প্রেসার ক্রিয়েট করি, যে আমার এই এরিয়ার জন্য এই জিনিসটা চাই। সমন্বিতভাবে চাপ দিলেই আদায় করা যাবে। আমরা আমাদের চাওয়াগুলো গুছিয়ে নিয়ে সিটি কর্পোরেশনকে বলি, বোঝাই এবং আদায় করি। এটাই সোসাইটির শক্তি।
×