ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দিল্লীর মসজিদের ঘটনায় ৯ হাজার মানুষ করোনা ঝুঁকিতে

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ৩ এপ্রিল ২০২০

 দিল্লীর মসজিদের ঘটনায় ৯ হাজার মানুষ করোনা ঝুঁকিতে

ভারতে দিল্লীর মার্কায মসজিদের ধর্মীয় জমায়েতে থাকা অন্তত সাত হাজার ছয় শ’ ভারতীয় ও এক হাজার তিন শ’ বিদেশীকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তাবলীগের গত মাসের ওই জমায়েত ভারতজুড়ে করোনাভাইরাসের ছড়ানোর সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে উঠেছে বলে মন্ত্রণালয়টি বুধবার জানিয়েছে। খবর এপির। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা তাবলীগ জামাতের আরও সদস্য শনাক্ত হলে সংখ্যাটি বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে, জানিয়েছে এনডিটিভি। দিল্লীর পশ্চিম নিজামুদ্দিন এলাকায় তাবলীগ জামাতের ওই মার্কায বা কেন্দ্রকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার করোনাভাইরাসের ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করে। এরপর থেকে ভারতের ২৩টি রাজ্য ও চারটি কেন্দ্রশাসিত এলাকা ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করে সংগঠনটির এক হাজার ৩০৬ বিদেশী সদস্যকে শনাক্ত করে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১ এপ্রিল পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে, ওই বিদেশীদের মধ্যে এক হাজার ৫১ জন কোয়ারেন্টাইনে আছেন, ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে এবং দুই জন মারা গেছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা সব ধরনের সুযোগ ব্যবহার করে তাবলীগ জামাতের স্থানীয় সাত হাজার ৬৮৮ সদস্য ও তাদের সংস্পর্শে আসা লোকদের শনাক্ত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে, কারণ এদের সবাইকেই কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘১ এপ্রিল পর্যন্ত আমরা অধিকাংশ বিদেশী ও স্থানীয় সদস্যকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি, কিন্তু কারা তাদের সংস্পর্শে এসেছিল তা নিয়ে কাজ এখনও চলছে।’ রাজ্য সরকারগুলোর ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা তথ্যানুযায়ী, দেশজুড়ে মার্কায নিজামুদ্দিনের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় ৪০০ জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে তামিল নাডুর ১৯০ জন, অন্ধ্রপ্রদেশের ৭১ জন, দিল্লীর ৫৩ জন, তেলেঙ্গানার ২৮ জন, অসমের ১৩ জন, মহারাষ্ট্রের ১২ জন, আন্দামানের ১০ জন, জম্মু ও কাশ্মীরের ছয় জন, পুদুচেরির দুই জন ও গুজরাটের দুই জন আছেন। গত মাসে নিজামুদ্দিন এলাকার সরু বাঁকানো একটি গলির ভেতর তাবলীগ জামাতের ওই কেন্দ্রটিতে ভারত এবং মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মতো বিদেশী কয়েকটি দেশের কয়েক হাজার লোক একটি ধর্মীয় জমায়েতে যোগ দিয়েছিল। কয়েকটি দিন নামাজ-কালাম পড়ে ও ধর্মীয় বক্তৃতা শুনে কাটিয়েছিল তারা। তাবলীগ জামাতের কর্তৃপক্ষ বলেছে, কয়েকদিনের ওই জমায়েত শেষ হওয়ার পর অনেকেই দিল্লী ছেড়ে গেলেও ভারতজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ায় ও সব ধরনের পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার লোক তাদের মার্কায নিজামুদ্দিনে আটকা পড়ে। দিল্লীর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানান, তাবলীগ জামাতের কেন্দ্র ও তাদের মসজিদ থেকে ৩৬ ঘণ্টায় দুই হাজার ৩৩৫ জনকে বের করে আনা হয়েছে, বুধবার এই কাজ শেষ হয়। তিনি বলেন, ‘তাদের সবাইকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে, তবে যাদের মধ্য কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা গেছে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
×