ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুহম্মদ জাফর ইকবাল

করোনার কাল

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ৩ এপ্রিল ২০২০

করোনার কাল

যে কোন হিসেবে মানুষ একটি বিস্ময়কর প্রজাতি। তাদের ছোটখাটো আকার এবং তাদের মাথার ভেতর দেড় কেজি থেকেও কম একটা মস্তিষ্ক। সেই মস্তিষ্কটি ব্যবহার করেই এই মানুষ এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের রহস্য বের করার দুঃসাহস দেখানোর ক্ষমতা রাখে। পদার্থের অণু, পরমাণু, নিউক্লিয়াস চূর্ণ করে তারা তার ভেতর থেকে শক্তি বের করে আনে। তারা জীবনের রহস্য অনুসন্ধান করতে পারে, প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পারে। আকাশে-মহাকাশে বিচরণ করতে পারে। মানুষের শরীর যে অণু, পরমাণু দিয়ে তৈরি হয়েছে তার বেশিরভাগ সৃষ্টি হয়েছে কোন একটি নক্ষত্রের ভেতর। সেই হিসেবে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ আসলে একটি নক্ষত্রের অংশ। যে মানুষ নক্ষত্রের অংশ সেই মানুষ কেমন করে নিচ হতে পারে, হীন হতে পারে? তারপরও মাঝে মাঝেই আমরা দেখি পৃথিবীর মানুষ চরম অবিবেচকের মতো কিছু একটা করে এই পৃথিবীটাকে কলুষিত করে তোলে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ যুদ্ধবিগ্রহ পৃথিবীকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। বিচ্ছিন্নভাবে দেখা হলে পৃথিবীর মানুষ এক রকম কিন্তু সমগ্র মানব জাতিকে একসঙ্গে দেখা হলে মাঝে মাঝেই কী মনে হয় না এই মানব জাতি দাম্ভিক, স্বেচ্ছাচারী, অবিবেচক এবং কখনও কখনও অচিন্তনীয় নিষ্ঠুর? পৃথিবীর এই অহঙ্কারী দাম্ভিক মানবজাতিকে অবিশ্বাস্য দ্রুততায় পদানত করে ফেলেছে ক্ষুদ্র থেকেও ক্ষুদ্র একটি ভাইরাস। পৃথিবীতে তার অস্তিত্ব ছিল না, হঠাৎ করে তার জন্ম হয়েছে। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে, অর্থে, বিত্তে, সম্পদে বলীয়ান হয়েও পৃথিবীর মানুষ তার সামনে অসহায়। এই ক্ষুদ্র থেকেও ক্ষুদ্র যে ভাইরাসটি প্রথম জন্ম নিয়েছিল সেটি যদি মানুষের মতো চিন্তা ভাবনা করতে পারতো তাহলে সে কী সে অট্টহাসি দিয়ে বলত, ‘পৃথিবীর মানুষ, তোমার কী নিয়ে অহঙ্কার? সময় হয়েছে মাটির এই ধরিত্রীকে রক্ষা করার।’ ঠিক কী কারণ জানি না, আমি মাথা থেকে এই চিন্তাটা সরাতে পারি না! ॥ দুই ॥ করোনাভাইরাস নিয়ে ঘরবন্দী হবার পর অনেক ছেলেমেয়ে, তরুণ-তরুণী, ছাত্র কিংবা সহকর্মীরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আমার বয়স যেহেতু বেশি সবাই আমাকে নানা ধরনের উপদেশ দিচ্ছে, সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছে। আমি আনন্দের সঙ্গে তাদের উপদেশ এবং অনুরোধ শুনে যাচ্ছি। উপদেশ এবং অনুরোধ শেষ হওয়ার পর অবধারিতভাবে তারা ব্যাকুলভাবে জানতে চাইছে, ‘এরপর কী হবে?’ ‘আবার কি আমরা আমাদের আগের জীবন ফিরে পাব?’ কেউ কেউ আরও অনেক স্পষ্ট করে বলেছে, ‘স্যার, এতদিন বুঝতে পারিনি, আমাদের জীবনটা আসলে কত সুন্দর ছিল।’ আমাদের বয়সী মানুষ যারা এই দেশের দুঃখ-কষ্ট যন্ত্রণার ভেতর বড় হয়েছি তারা কিন্তু এই সত্যটি অনেক দিন থেকে জানি। এই পৃথিবীটা সুন্দর, এই দেশটা আরও সুন্দর এই জীবনটা তার থেকেও বেশি সুন্দর! আমার মনে আছে একেবারে চরম দুঃসময়ের সময় যখন পরের দিন বেঁচে থাকব কিনা সেটাও জানতাম না তখন মনটা কোন বড় কিছুর জন্য আকুলি-বিকুলি করত না। মনটা আকুলি-বিকুলি করতো খুব ছোট একটা কিছুর জন্য, একটা খোলা রাস্তায় মুক্ত স্বাধীনভাবে হাঁটার জন্য! আমি অনুমান করছি এখনকার যারা নতুন প্রজন্ম তাদের ভেতরেও নিশ্চয়ই এরকম একটা কিছু কাজ করছে! তারা বড় কিছু চাইছে না, ছোট একটা কিছু চাইছে, আবার তারা স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে, বন্ধুদের নিয়ে গল্প করবে, টংয়ে বসে চা খাবে। করোনাভাইরাস অনেকের জন্য অনেক দুঃসময় বয়ে নিয়ে আসছে, কিন্তু এই দেশের নতুন প্রজন্মকে জীবনের মূল্যটা হয়ত একটুখানি হলেও বুঝিয়েছে। শুধু এই দেশের নতুন প্রজন্মকে নয়, সারা পৃথিবীর নতুন প্রজন্মকে। সেটারও নিশ্চয়ই একটু মূল্য আছে! ॥ তিন ॥ স্বাভাবিক সময়ে গৃহবন্দী হয়ে থাকলে নানা ধরনের কাজ করা যেত। কিন্তু এখন যেহেতু একটা অস্থির সময় এখন ঘরের ভেতর চার দেয়ালের ভেতর আটকে থেকে সত্যিকারের কাজ খুব বেশি একটা করা যায় না। তাই অন্য অনেকের মতো আমিও নানা কিছু পড়ে সময় কাটাচ্ছি। বলাই বাহুল্য সেই পড়ার প্রায় পুরোটাই করোনাভাইরাস সংক্রান্ত। অল্প সময়ে অনেক কিছু পড়ে ফেলার মাঝে একটা বিপদ আছে, একজন মানুষ তখন নিজেকে হঠাৎ করে একজন বিশেষজ্ঞ মনে করতে পারে। করোনাভাইরাসের এই বিষয়টি অনেক জটিল এবং তার অনেক মাত্রা আছে। তাই কোন একজন যদি তার যে কোন একটা মাত্রা নিয়ে একটুখানি লেখাপড়া করে নিজেকে একজন বিশেষজ্ঞ মনে করতে শুরু করে তাহলে অনেক বিপদ। কাজেই আমি খুব কঠিনভাবে বিশ্বাস করি যে যারা জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন কিংবা যারা চিকিৎসা বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি জানেন শুধু তারাই এখন মুখ খুলতে পারেন। অন্যরা যখন মুখ খোলেন কিংবা কিভাবে এই বিপর্যয় বন্ধ করতে হবে সে ব্যাপারে উপদেশ দেন তখন আমি কখনও কৌতুক এবং বেশিরভাগ সময় বিরক্তি অনুভব করি। (আমাদের বাংলা ভাষায় এই ধরনের বিশেষজ্ঞদের একটা চমৎকার বাগধারা দিয়ে প্রকাশ করা হয়, সেটা হচ্ছে ‘অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করি, কথায় কথায় ডিকশনারি’)। তবে ইদানীং আমি পত্রপত্রিকায় বিদেশে থাকেন এরকম বাংলাদেশী ডাক্তারদের নানা ধরনের বিশ্লেষণ দেখতে পাচ্ছি। তারা যদি সত্যিই বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে তাদের বিশ্লেষণ শুনতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যখন বিদেশে তাদের সুযোগ-সুবিধার কথা বড় গলায় বলেন কিংবা তার চাইতেও আপত্তিকর ব্যাপারÑ তারা যখন আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীদের নিয়ে তামাশা করেন তখন আমার খুবই বিরক্তি লাগে। তারা উন্নত দেশে মহাধুমধামে থাকতে থাকুন আমার কোন আপত্তি নেই, কিন্তু তাদের জানতে হবে সীমিত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা এই দেশে যে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন আমরা সেটা নিয়ে তাদের জন্য অনেক গর্ব অনুভব করি। শুধু তাই না, আমরা চাইব আমাদের সরকার যেন সবার আগে এই স্বাস্থ্যকর্মীদের পুরোপুরি নিরাপদ পরিবেশে কাজ করার সুযোগ করে দেয়। তার জন্য যা করার প্রয়োজন সেটাই যেন করা হয়। ॥ চার ॥ বড় বিপর্যয়ের সময় সাধারণ মানুষ অন্যদের সাহায্য করার জন্য অসাধারণ হয়ে ওঠে। এবারেও আমরা সেটা দেখতে পাচ্ছি। আবার শুনতে খারাপ লাগলেও একথাটিও মিথ্যা নয় যে অনেকেই বিপর্যয়ের সুযোগ নিয়ে থাকে, তাই আমরা ভাল-মন্দ দুই রকমের খবরই পাই। আগে একটা সময় ছিল যখন দেশের আনাচে-কানাচে ঘটে যাওয়া অনেক ধরনের খবর সাধারণ মানুষ পর্যন্ত পৌঁছাত না। সোশ্যাল নেটওয়ার্কের কারণে আজকাল আর সেটি ঘটে না, দৃষ্টিকটু যে কোন খবর চোখের পলকে সারাদেশে ছড়িয়ে যায়। অন্যায় করে শাস্তি পাওয়ার আগেই এক ধরনের সামাজিক বিচার হয়ে যায়। করোনা বিপর্যয় শুরু হওয়ার পর আমরা অনেক মন খারাপ করা খবর পেয়েছি। আমি সেগুলোর কথা পুনরাবৃত্তি করে আবার নতুন করে কারও মন খারাপ করে দিতে চাই না। তবে একটি ঘটনার কথা আমার একটু বলতেই হবে। সেটি হচ্ছে মুখে মাস্ক না থাকার কারণে মনিরামপুরের এসিল্যান্ড দু’জন বয়স্ক মানুষের কান ধরিয়ে তাদের ছবি তুলেছেন। একজন মানুষকে অপমান করার দৃশ্য সবসময়ই দৃষ্টিকটু, আমরা কখনই সেটা দেখতে চাই না। মনিরামপুরের এই ঘটনাটি ব্যতিক্রমী কারণ এই দৃষ্টিকটু ঘটনার ছবিটি বাইরের কেউ গোপনে তুলে প্রকাশ করে দেননি। এসিল্যান্ড নিজেই সেই ছবি তুলে প্রকাশ করেছেন। যার অর্থ এই সরকারী কর্মকর্তা জানেন না কাজটি অন্যায়। এই কাজটিকে তিনি তার কর্তব্য পালনের অংশ হিসেবে ধরে নিয়েছেন, কাজটি করে তিনি গর্ব অনুভব করেছেন। সরকারী এই চাকরিগুলো দেশের সবচেয়ে লোভনীয় চাকরি, এই দেশের ছেলেমেয়েরা এই চাকরির জন্য জীবনপাত করে দেয়। চাকরি পাওয়ার পর তাদেরকে নানা ধরনের ট্রেনিং দিয়ে কর্মক্ষেত্রে কাজ করার জন্য পাঠানো হয়। (আমি নিজে একাধিকবার তাদের ট্রেনিং এর অংশ হিসেবে তাদের সামনে কথা বলেছি!) তবে সবচেয়ে আতঙ্কের ব্যাপার হচ্ছে এত কিছুর পরও এই সরকারী কর্মকর্তাদের একেবারে সবচেয়ে মৌলিক বিষয়টি শেখানো হয়নি। তারা জানেন না যে, মানুষকে কখনও অসম্মান করা যায় না- সেই মানুষটি যেই হোন না কেন! আমাদের দেশে আমরা কেমন করে এভাবে ব্যর্থ হলাম? এই ঘটনাটি যেভাবে হোক আমাদের চোখের সামনে চলে এসেছে, আমাদের চোখের আড়ালে ঘটে যাচ্ছে এরকম কতগুলো ঘটনা আছে? আমি আরও একটা বিষয় সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য এই ঘটনাটির কথা সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছি। খুবই স্বাভাবিকভাবেই ঘটনাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে, সবাই বলেছেন, দু’জন বয়স্ক মানুষকে এভাবে অপমান করার অধিকার কারও নেই। আমি একটু অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছি, সাধারণভাবে মনে করে নেয়া হয়েছে মানুষ দু’জন বয়স্ক না হলে এটি তত গুরুতর বিষয় হতো না, অর্থাৎ কমবয়সীদের অপমান করা যায়, শিশুদের অপমান করা যায়! আমি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই শুধু বয়স্ক মানুষদের অপমান করা যায় না এটি মোটেও সত্যি নয়, কোন মানুষকেই অপমান করা যায় না। মানুষটি শিশু হোক বা প্রাপ্তবয়স্ক তাতে কিছু আসে যায় না। আমরা সবাই তো একসময় শিশু ছিলাম, আমাদের কি শৈশবের কথা মনে নেই? অনেক ঘটনার কথা ভুলে গেছি কিন্তু যতবার স্কুলের শিক্ষক বা বড় মানুষ আমাদের অপমান করেছে তার প্রত্যেকটির কথা স্পষ্ট মনে আছে। যেহেতু এই দেশে আমার অগ্রজ হুমায়ূন আহমেদ প্রায় সবারই প্রিয় একজন মানুষ, তাই তাকে নিয়ে শৈশবের একটি ঘটনার কথা বলা হয়তো খুব অপ্রাসঙ্গিক হবে না। আমরা তখন বান্দরবান থাকি, বাসার সামনেই স্কুল, সেই স্কুলে ভাই-বোনেরা সবাই পড়ি, আমরা ওয়ান কিংবা টুতে হুমায়ূন আহমেদ আমার থেকে তিন ক্লাস উপরে। হুমায়ূন আহমেদ যেহেতু দুষ্টুর শিরোমণি ছিল প্রায় সময়েই সে স্কুলের ঝামেলায় পড়ে যেত। সেভাবে একবার ঝামেলায় পড়েছে, শিক্ষক তাকে শাস্তি দেবেন। সেই স্কুলের একটা ভয়াবহ ঐতিহ্য ছিল, কখনও কখনও কাউকে শাস্তি দেয়ার জন্য তার বুকে একটা কাগজে অপরাধের বর্ণনা লিখে দেয়া হতো, তারপর দফতরি তাকে স্কুলের সব ক্লাসে নিয়ে যেত। সারা স্কুলের সব ছাত্রছাত্রী সেটা দেখত। হুমায়ূন আহমেদকেও সেই শাস্তি দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হলো। হুমায়ূন আহমেদ তার শিক্ষককে কাকুতি-মিনতি করে বলল, স্যার, ‘আমাকে আপনি যা ইচ্ছা শাস্তি দেন, এই ক্লাসের ভেতর আমাকে যত ইচ্ছা পেটান কিন্তু আমাকে ক্লাসে ক্লাসে পাঠাবেন না। আমার ছোট ছোট ভাই বোনেরা আমাকে দেখবে, আমি খুব লজ্জা পাব।’ সেটা শুনে শিক্ষক দ্বিগুণ উৎসাহিত হয়ে তার বুকে অপরাধের বর্ণনা লিখে তাকে দফতরির হাতে ধরিয়ে দিলেন। ক্লাস রুম থেকে বের হওয়া মাত্র সেই আট দশ বছরের শিশু হুমায়ূন আহমেদ দফতরির শক্ত হাত থেকে ঝটকা মেরে নিজেকে মুক্ত করে স্কুল থেকে ছুটতে ছুটতে বাসায় চলে এসে সে কী কান্না! এই ছোট শিশুটি যে অপমান সহ্য করতে রাজি হয়নি পৃথিবীর কোন শিশুই সেই অপমান সহ্য করতে রাজি নয়। আমাদের সরকারী কর্মকর্তাদের সেটি কি শেখানোর সময় হয়নি? শিশু হোক বয়স্ক হোক কাউকে কখনও অপমান করা যায় না। (শিশু হুমায়ূন আহমেদের সেই ঘটনার পর সেই স্কুল থেকে এই ভয়ঙ্কর নিয়মটি চিরদিনের মতো তুলে দেয়া হয়েছিল।) ॥ পাঁচ ॥ এটি করোনার কাল, আমরা এখন শুধু করোনা নিয়ে কথা বলি। খুব আশা করে আছি এই করোনার কাল শেষ হবে আমরা তখন আবার আকাশ-বাতাস নিয়ে কথা বলব, দেশ নিয়ে কথা বলব, রাজনীতি নিয়ে কথা বলব, বিজ্ঞান নিয়ে কথা বলব, সাহিত্য নিয়ে কথা বলব। আমরা সবাই সে জন্য অপেক্ষা করে আছি। যতদিন সেটি না হচ্ছে সবাই নিয়ম-নীতি মেনে ভাল থাকুক, সুস্থ থাকুক। এপ্রিল ১, ২০২০
×