ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হজের কাজ এখনই শুরু না করার পরামর্শ সৌদি আরবের

প্রকাশিত: ১০:৩০, ২ এপ্রিল ২০২০

হজের কাজ এখনই শুরু না করার পরামর্শ সৌদি আরবের

আজাদ সুলায়মান ॥ চলতি বছরের হজের কাজ এখনই শুরু না করে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে সৌদি আরব। পরিস্থিতি স্পষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত হজের বিষয়ে কোন চুক্তি না করতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রিয়াদ। এতে সময় মতো হজের প্রাক নিবন্ধনসহ আনুষঙ্গিক কাজ করতে না পারলে বাকি সময়ে সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশ। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ শেখ আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, অন্য বছর এই সময়ের মধ্যে হজের নিবন্ধনসহ অন্যান্য যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল। সৌদি আরব এখনই বাড়ি ভাড়া খাবার ও হোটেলের চুক্তি থেকে বিরত থাকতে বলেছে আমরা সেটাই করব। কিন্তু সময় মতো যদি তা বন্ধ রাখতে হয় তাহলে পরে কতটুকু কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হবে- সেটাই আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ। এ বিষয়ে হাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম জানিয়েছেন, সারাবিশ্বের যা হবে আমাদেরও তাই হবে। এ নিয়ে আমাদের করার কিছু নেই। তবে আমরা আশাবাদী শেষ মুহূর্তে হলেও হজে এবারের হজের একটা সুরাহা হয়ত হবে। জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে এখনই হজের পরিকল্পনা না করে পরিস্থিতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির হজ ও ওমরাহ বিষয়কমন্ত্রী মোহাম্মদ সালেহ বেনতেন মঙ্গলবার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে আল-আখবারিয়ায় বিশ্ব মুসলিমের উদ্দেশে এ আহ্বান। গতকাল বুধবার তিনি বলেন, হজ ও ওমরাহ পালনে ইচ্ছুকদের সেবায় সৌদি আরব পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে আমরা যখন বৈশ্বিক মহামারী মোকাবেলা করছি, তখন সৌদি আরব মুসলিমসহ অন্য নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাই পরিস্থিতি স্পষ্ট হওয়া পর্যন্ত হজের বিষয়ে কোন চুক্তিতে না যেতে আমরা সব দেশের মুসলিম ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। উল্লেখ্য, নোভেল করোনাভাইরাস ছড়ানোর ভয়ে গত মাসের শুরুর দিকে মৌসুমের ওমরাহ স্থগিত করা হয়। অভূতপূর্ব এই পদক্ষেপের কারণে এ বছরের হজ নিয়ে তখনই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। জুলাইতে অনুষ্ঠেয় এক সপ্তাহের হজ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ২৫ লাখ মুসলিম এবারও আসার কথা। এ সময় তারা মক্কা ও মদিনা শহরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। হজ মৌসুমে যে আয় হয় তা সৌদি আরবের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখে। ওমরাহ হজ স্থগিত ছাড়াও ভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে সৌদি আরব সব আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী ফ্লাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছে এবং গত সপ্তাহে মক্কা-মদিনাসহ কযেকটি শহরে আগমন-বহির্গমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জানা গেছে, এবারের হজ নিয়ে সৌদ আরব এখনও নিশ্চিত কিছু বলতে পারছে না। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের উচ্চাভিলাসী অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচীর অধীনে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ানোর যে পরিকল্পনা রয়েছে- তার মেরুদ- ও সৌদি আরবের জন্য বড় ব্যবসার উৎস এই হজ। বিশ্ব মুসলিমের এই সর্ববৃহৎ সম্মিলনী বাতিল হলে সেটা হবে আধুনিককালের সবচেয়ে অভূতপূর্ব ঘটনা। তবে এর আগেও ইবোলা প্রাদুর্ভাবের সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে হজযাত্রীদের আগমন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। করোনা ঠেকাতে এ বছর ওমরাহ হজ স্থগিত করার পাশাপাশি সৌদি আরব সব আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী ফ্লাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছে এবং গত সপ্তাহে মক্কা-মদিনাসহ কয়েকটি শহরে আগমন-বহির্গমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ অচলাবস্থার নিরসন কখন কিভাবে হবে সেটা এখনও অনিশ্চিত। সেজন্য এবারের হজ নিয়েও অনেকে সন্দিহান। সৌদি আরবে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে দেড় হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন এগারো জন।
×