ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিশু-কিশোরদের হাতে গল্পের বই দিয়ে মাঠ থেকে ঘরে পাঠাচ্ছে পুলিশ

প্রকাশিত: ১০:০৫, ২ এপ্রিল ২০২০

শিশু-কিশোরদের হাতে গল্পের বই দিয়ে মাঠ থেকে ঘরে পাঠাচ্ছে পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে করোনাভাইরাসের সংক্রামণ প্রতিরোধের জন্য নানা কৌশলে কাজ করছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। বুধবার বিকেলে শ্রীপুরে শিশু-কিশোরদের হাতে দেশের খ্যাতনামা লেখকদের গল্প ও কবিতার বই দিয়ে ক্রিকেট খেলার মাঠ থেকে ঘরে পাঠিয়েছেন জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন বাইরে না গিয়ে ঘরে থাকতে গিয়ে তার অধৈর্য্য পড়ছিল। ধৈর্য হারিয়ে শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা মাঝে মধ্যেই লুকিয়ে বাড়ির পাশের মাঠে খেলাধুলার জন্য জড়ো হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণ সম্ভাবনার ভয়ে ভীত অভিভাবকদের তাড়া খেয়ে মনের অপূর্ণ সাধ নিয়ে তারা বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হয়। বুধবার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সলিংমোড় এলাকায় মাওনা-কালিয়াকৈর সড়কের পাশে একটি মাঠে দল বেঁধে ক্রিকেট খেলছিল জোবায়ের, রাতুল, প্রান্ত, শান্ত, শিহাবসহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৪/২৫ জন কোমলমতি শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী। তাদের মনে ছিল না করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক। এ সময় মাঠের পাশ দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন গাজীপুর জেলা পুলিশের সহকারী সুপার আল মামুন। তার নজরে পড়ে শিশু-কিশোর খেলোয়াড়দের। তিনি গাড়িটি সড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলায়রত শিশু-কিশোরদের ডেকে জড়ো করে করোনাভাইরাস সংক্রামণরোধে ঘরে থাকাসহ কয়েকটি সরকারী সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পরামর্শ দিলেন। তাদের চোখে মুখে বিষণ্œতা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তাদের বিষণœ মনে মাঠ থেকে ঘরে যেতে দেখে পুলিশের ওই কর্মকর্তার চোখেও পানি এসে যায়। এ সময় তিনি শিশু-কিশোরদের কাছে ডেকে নেন এবং তাদের প্রত্যেকের হাতে তুলে দেন দেশের খ্যাতনামা লেখকদের গল্প-কবিতার বই। বই হতে পেয়ে মুহূর্তেই শিশু-কিশোররা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠে এবং হাতে তালি দিতে থাকে। পরে তারা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সরকারী নির্দেশ অমান্য করে ঘর ছেড়ে বাইরে না যাওয়ার শপথ করে বই হাতে নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরে যায়। শিশুদের আনন্দ ও উচ্ছলতা দেখে পুলিশের ওই কর্মকর্তাও আনন্দিত হয়ে ওঠেন এবং ওই এলাকা ত্যাগ করেন। পুলিশ কর্মকর্তার হাত থেকে গল্প-কবিতার বই পেয়ে দারুণ খুশি রাতুল ও প্রান্তসহ অন্যরা। তারা জানায়, আগে পুলিশ দেখে ভয় পেতাম, ভাবতাম তারা মানুষকে পেটায় ও বদমেজাজি হয়। কিন্তু পুলিশ যে এত ভাল হতে পারে তা আজ দেখলাম।
×