ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মার্চ মাসে বিও হিসাব বন্ধের সংখ্যা বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১ এপ্রিল ২০২০

মার্চ মাসে বিও হিসাব বন্ধের সংখ্যা বেড়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে গত মাসে বড় ধরনের ধস হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। আলোচিত সময়ে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার কারণে ৩০ হাজার কোটি টাকার বাজার মূলধন কমেছে। আগামীতে আরও কমতে পারে এমন আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন অনেক বিনিয়োগকারী। ফলে বিক্রির চাপ বেড়ে পতন হয়েছে প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের দামে। এই আতঙ্কের বাজারে দেশি-বিদেশি নারী বিনিয়োগকারীদের নামে থাকা ৪৭২ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বিও হিসাব নবায়নের সুযোগও নেই। তাই যারা বিও হিসাব বন্ধ করেছেন দীর্ঘমেয়াদে বাজার থেকে বের হয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই বন্ধ করেছে। নারী বিনিয়োগকারীদের বড় অঙ্কের বিও হিসাব বন্ধ হলেও এই আতঙ্কের বাজারে কোম্পানি বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৮১টি। আর পুরুষ বিও হিসাব বেড়েছে ৭১টি। কোম্পানি ও পুরুষ বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব বাড়লেও মার্চে সার্বিকভাবে ৩২০টি বিও হিসাব কমেছে। গত ডিসেম্বর মাসে করোনাভাইরাস গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম চীনে দেখা দেয়। ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে সাড়ে ৮ লাখের ওপরে মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ দিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪২ হাজার মানুষ। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় গত ৮ মার্চ। এরপর থেকেই দফায় দফায় ধসের কবলে পড়ে শেয়ারবাজার। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলো আহ্বান করা হয়। ব্যাংকের বিনিয়োগ কিছুটা বাড়লেও তা পতন ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলে পতনের লাগাম টানতে বাংলাদেশ সিউকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নতুন সার্কিট ব্রেকার চালু করে শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (যে দামের নিচে নামতে পারবে না) নির্ধারণ করে দেয়। তবে তার আগেই অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে শেয়ারবাজার থেকে বেরিয়ে যান। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসের শেষ কার্যদিবস বা ২৫ মার্চ শেষে বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৭৮ হাজার ৩২৭টি, যা ফেব্রুয়ারি মাস শেষে ছিল ২৫ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪৭টিতে। অর্থাৎ মার্চে ৩২০টি বিও হিসাব কমেছে। অথচ ফেব্রুয়ারিতে ১৪৪টি বিও হিসাব বেড়েছিল। সিডিবিএলের তথ্যমতে, বর্তমানে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব আছে ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৪৫৪টি। ফেব্রুয়ারি শেষে এই সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৩টি। আর জানুয়ারি শেষে ছিল ১৮ লাখ ৭৯ হাজার ৮১৮টি। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের হিসাব ৭১টি এবং দুই মাসের ব্যবধানে ৫৬৫টি বেড়েছে। বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৩টি। ফেব্রুয়ারি শেষে এই সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮৫টি। আর জানুয়ারি শেষে ছিল ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৯টি। অর্থাৎ মার্চে ৪৭২টি এবং ফেব্রুয়ারিতে ৪৯৪টি বিও হিসাব বন্ধ হয়েছে। এ হিসাবে দুই মাসে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমেছে ৯৬৬টি। দুই মাসে কোম্পানি বিও হিসাব বেড়েছে ১৫৪টি। এর মধ্যে মার্চে ৮১টি এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭৩টি বেড়েছে। বর্তমানে কোম্পানি বিও হিসাব রয়েছে ১৩ হাজার ৩৬০টি। ফেব্রুয়ারি শেষে এই সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ২৭৯টিতে। আর জানুয়ারির শেষ ছিল ১৩ হাজার ২০৬টি।
×