ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছেলেকে জন্মদিনের উপহার, এক মাসের বাড়ি ভাড়া নেবেন না তাসকিনের বাবা

প্রকাশিত: ০০:৫২, ১ এপ্রিল ২০২০

ছেলেকে জন্মদিনের উপহার, এক মাসের বাড়ি ভাড়া নেবেন না তাসকিনের বাবা

অনলাইন ডেস্ক ॥ খেলোয়াড়ি জীবন শুরুর থেকেই বাবার সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেসার তাসকিন আহমেদের। এখন রীতিমত তারকা বনে যাওয়ার পরেও বাবার হাতটি ছাড়েননি এ ডানহাতি গতিতারকা। দুজনের মাঝে সম্পর্কটা দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ। এই সম্পর্কের খাতিরেই বাবার কাছ থেকে অন্যরকম এক জন্মদিনের উপহার পাচ্ছেন তাসকিন। আগামী ৩ এপ্রিল ২৫ বছরে পূর্ণ হবে তাসকিনের। প্রতি জন্মদিনেই বাবার কাছ থেকে কিছু না কিছু উপহার পেয়ে থাকেন তিনি। তবে করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মাথায় রেখে এবারের জন্মদিনে নিজেই চেয়ে নিয়েছেন উপহার। আর সেটি হলো, তাদের বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়াদের এক মাসের ভাড়া মওকুফ করে দেয়া। ছেলের এমন মহৎ প্রস্তাবে রাজি হতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি বাবা আবদুর রশিদ মনু। রাজি হয়ে গেছেন সঙ্গে সঙ্গে। বিভিন্ন সম্পত্তি থেকে সবমিলিয়ে মাসে ১ লাখ টাকার বেশি ভাড়া পেয়ে থাকেন তাসকিনের বাবা। তবে এবার ছেলের জন্মদিনের উপহার হিসেবে এক মাসের বাড়ি ভাড়া নেবেন না তিনি। তাসকিন জানিয়েছেন, এতে খুব একটা সমস্যা হবে না তার পরিবারের। তিনি নিজে এক মাস ভালোভাবে ক্রিকেট খেলতে পারলেই এ টাকা জোগাড় হয়ে যাবে বলে মনে করছেন। দেশের এক সংবাদমাধ্যমে তাসকিন নিজেই জানিয়েছেন এ খবর। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক চিন্তা করে দেখেছি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার করোনায় ভীষণ কষ্টে দিন যাপন করছে। তবে কখনও কারো কাছে কিছু চাইতে পারে না তারা। আমার বাবার যে সম্পতি আছে সেখান থেকে মাসে এক লাখেরও বেশি ভাড়া আসে। আমি বাবাকে অনুরোধ করি যে এবার আমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে সেই ভাড়া যেন তিনি মাফ করে দেন।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এপ্রিলের ৩ তারিখ আমার জন্মদিন, বাবাও আমার কথায় রাজি হয়েছেন। আসলে এমন নয় যে আমাদের অঢেল আছে। তবে আমি যদি এক মাস ঠিকমতো খেলতে পারি সেই টাকা আল্লাহ আমাকে জোগাড় করে দেবেন। আমি মনে করি এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো উচিত, যারা কারো কাছে চাইতে পারে না।’ এ বিষয়টি কাউকে জানানোর ইচ্ছা ছিলো না তাসকিনের। তবে ভেবে দেখেছেন, তার দেখাদেখি আরও কেউ যদি এমন উদ্যোগ নেয়, তাহলে বিপদে পড়া মানুষদের সাহায্য হবে। তাসকিন বলেন, ‘আমি আসলে বিষয়টি কাউকে জানাতে চাইনি। তবে পরে মনে হলো এটি দেখে বা শুনে যদি অন্যরাও সাধ্যমত এগিয়ে আসে, তাহলে এমন অনেক পরিবারের উপকার হবে যারা সাহায্যের কথা লজ্জায় মুখ ফুটে বলতে পারে না। দেশের প্রতিটি মানুষের এখন মানবিক হওয়া উচিত। মনটা বড় করে সবাই যেন বিপদে পাশে দাঁড়ায়- এই প্রার্থনা করি।’
×