ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউইয়র্কে ৩১ ও যুক্তরাজ্যে ১১ বাংলাদেশীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১ এপ্রিল ২০২০

নিউইয়র্কে ৩১ ও যুক্তরাজ্যে ১১ বাংলাদেশীর মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বৈশ্বিক মহামারী নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে এ পর্যন্ত ৩১ বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে। আর দুইদিনে অর্থাৎ ২৯ ও ৩০ মার্চই মৃত্যু হয়েছে ১৪ বাংলাদেশীর। খবর ওয়েবসাইটের। মৃতদের মধ্যে চট্টগ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার ইব্রাহিম, ফটো সাংবাদিক স্বপন হাই, আইটি প্রফেশনাল মির্জা হুদাও রয়েছেন। নিউইয়র্কের কুইন্স হাসপাতাল, জ্যামাইকা হাসপাতাল, এলমহার্স্ট হাসপাতাল এবং ব্রুকলিনে ব্রুকডেল হাসপাতালের উদ্ধৃতি দিয়ে কমিউনিটি লিডার মাজেদা এ উদ্দিন এবং কাজী আজম জানান, ৪৩ বছর বয়সী স্বপন হাই কিডনি রোগে ভুগছিলেন। ডায়ালিসিস করতে হাসপাতালে গিয়ে করোনা সংক্রমিত হন। এরপর সেখানেই ৩০ মার্চ স্বপনকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ৭৫ বছর বয়সী আনোয়ারুল আলম চৌধুরী করোনায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ব্রুকডেল হাসপাতালে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা হেলাল মাহমুদের শ্বশুর আনোয়ারুল সোমবার বিকেলে মারা গেছেন। জ্যাকসন হাইটসের প্রিমিয়াম সুইটসের কর্মী নিশাত চৌধুরীকে (২৪) মৃত ঘোষণা করা হয় সোমবার সকালে। কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বাসিন্দা খালেদ হাসমতও (৬৩) ওইদিন মারা যান। এর আগেরদিন রবিবার নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন হাসপাতালে যে, ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশী রয়েছেন। তারা হলেন- কায়কোবাদ ইসলাম, শফিকুর রহমান মজুমদার, আজিজুর রহমান, মির্জা হুদা, বিজিত কুমার সাহা, মোঃ শিপন হোসাইন, জায়েদ আলম ও মুতাব্বির চৌধুরী ইসমত। এ নিয়ে নিউইয়র্ক সিটি এবং সংলগ্ন এলাকার হাসাতালে ৩০ মার্চ পর্যন্ত ৩১ বাংলাদেশী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। যুক্তরাজ্যে মৃত্যু ১১ বাংলাদেশী ॥ যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে লাশের মিছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের নাম। গত ৮ মার্চ থেকে ৩১ পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছে ১১ জন বাংলাদেশী। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে। ২৯ মার্চ বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টার দিকে লন্ডনের এনফিল্ডের একটি হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোঃ সোহেল আহমেদ (৫০) নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশী মারা যান। শনিবার লন্ডনের কিং জর্জ হাসপাতালে মারা যান আনোয়ারা বেগম চৌধুরী (৬৫) নামের এক ব্রিটিশ বাংলাদেশী। তিনি সিলেটের বালাগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। একইদিন আলম আশরাফ আকন্দ (৫০) নামের আরেক বাংলাদেশী মারা যান। এর আগে শুক্রবার লন্ডন স্থানীয় সময় ম্যানচেস্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাঈদ হোসেন জসিম (৬৫) নামে এক বাংলাদেশী। এছাড়া এদিন লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় মোঃ মনির উদ্দিন (৬০) নামের এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বুধবার মারা গেছেন হাজী ফখরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার একই হাসপাতালে মারা যান খসরু মিয়া (৪৯) নামের এক ব্যক্তি। এর আগে ২৩ মার্চ ওই হাসপাতালে মৃত্যু হয় টাওয়ার হ্যামলেটসের স্যাটেল স্ট্রিটের বাসিন্দা হাজী জমশেদ আলীর (৮০)। ১৬ মার্চ তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে মারা যান যুক্তরাজ্য সফররত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ মাহমুদুর রহমান (৭০)। যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে মৃত্যুবরণ করেন লন্ডনের বাঙালী অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের রেহান উদ্দিন (৬৬)। করোনাভাইরাসের সঙ্গে হাসপাতালে আটদিন যুদ্ধ করার পর গত ১৩ মার্চ পূর্ব লন্ডনের রয়েল লন্ডন হাসপাতালে মারা যান তিনি। ৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন ম্যানচেস্টারে বসবাসরত ৬০ বছর বয়সী এক বাংলাদেশী। সৌদিতে প্রথম বাংলাদেশীর মৃত্যু ॥ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মুসলিমদের দ্বিতীয় পবিত্র স্থান মদিনা শরীফে এক বাংলাদেশী মারা গেছেন। ৩০ মার্চ দেশটির মদিনা আল জাহারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেদ্দা বাংলাদেশ কনস্যুলেটকে জানান, তিনি গত ২৪ মার্চ মদিনার আল জাহরা হাসপাতালে মারা যান। এদিকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত আজইয়াদ, আল মাসাফি, মিসফালাহ, আল হুজুন, নাকাসা ও হোশ বকর এলাকায় প্রবেশ বা বহির্গমন নিষিদ্ধ থাকবে। কার্ফু চলাকালীন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে শুধু চিকিৎসা ও নিত্যপণ্য কেনাকাটায় বাইরে যাওয়া যাবে। সৌদিতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৫৩ জন, মারা গেছেন আটজন। ইতালিতে আরেক বাংলাদেশীর মৃত্যু ॥ মিলানে করোনাভাইরাসে অপু নামে আরও এক বাংলাদেশী মারা গেছেন। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় মিলানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে ইতালিতে দুই বাংলাদেশীর মৃত্যু হলো।
×