ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার করোনা প্রস্তুতি প্রধানমন্ত্রীকে জানালেন বিভাগীয় কমিশনার

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১ এপ্রিল ২০২০

ঢাকার করোনা প্রস্তুতি প্রধানমন্ত্রীকে জানালেন বিভাগীয় কমিশনার

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ঢাকা শহরকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুতির কথা শোনালেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান। মঙ্গলবার এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে তার প্রস্ততি সম্পর্কে অবহিত করেন। তার সকল প্রস্তুতি শুনে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করনে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। সকলকে একযোগে কাজ করে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের মতো একটি মহাদুর্যোগ মোকাবেলা আমাদের কারোই পূর্বাভিজ্ঞতা না থাকলেও আপনার দূরদৃষ্টিপূর্ণ দিকনির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত এবং সমন্বিত কর্যক্রমে আমরা এটাকে মোকাবেলায় প্রস্তুত। আমাদের ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে এটিকে মাথায় রেখে আমরা সর্বোত্র সমন্বয় করে যাচ্ছি। আমাদের এখন ১৪৫০টি বেড তৈরি ৩৩টি এ্যাম্বুলেন্স রেডি এবং ১৫০০ ডাক্তার ও ২৫০০ নার্স তারা প্রশিক্ষিত এবং এটি মোকাবেলা করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। আমাদের পিপিই মজুদ পর্যপ্ত রয়েছে এবং খাদ্য মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে। এতে আমরা বেশ কিছুদিন চালাতে পারব। ঢাকা মহানগরের অন্য কিছু চ্যালেঞ্জ আছে যা অন্য কারও সঙ্গে মিলবে না। তিনি বলেন, ঢাকায় একটি বড় সমস্যা ছিল, করোনায় মৃত ব্যক্তিদের সৎকার করা। এ বিষয়টি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদফতর, ঢাকা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের সহায়তায় সমাধান করা হয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রোটোকল অনুযায়ী এটি করা হচ্ছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য পৃথক একটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয় মেয়র সহযোগিতা করেছেন। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমাদের অপর একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল মানুষকে ঘরে আটকে রাখা। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি ও সর্বোপরি সেনা সদস্যদের সহায়তায় এটিও করা সম্ভব হয়েছে। মানুষ এখন ঘরে অবস্থান করছে। ঢাকা শহরে ৭৩টি বস্তি রয়েছে। এই বস্তিতে বাস করে দিন মজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। এদের পাশাপাশি রাস্তায়ও কিছু গরিব মানুষ, ভিক্ষুক রয়েছে। এদের জন্য আমরা ত্রাণ প্রদানের টিম গঠন করে তাদের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছি। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে দুই দফা বরাদ্দ দিয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে আমাদের দেশের সকল স্টেডিয়ামকে হাসপাতালে পরিণত করব। যেখানে যে বিষয় দরকার তা আমরা করছি। কথা বলেন, সকলের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছি। এতে আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি বলেন, দেশে প্রথম চিহ্নিত করোনা রোগী ফয়সল শেখ সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। সকলে তাকে সাদরে গ্রহণ করেছে। ফয়সল জামার্নিতে পড়তে গিয়ে এই রোগে আক্রান্ত হয়। তাদের বক্তব্য শুনে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, মশার দৌরাত্ম যাতে না বাড়ে সে বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু আসলে তা সামাল দেয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে। আর সকলকে মশারি টানিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দেন তিনি।
×