ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সবার পিপিই ব্যবহারের প্রয়োজন নেই ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:২৪, ১ এপ্রিল ২০২০

সবার পিপিই ব্যবহারের প্রয়োজন নেই ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টদের জন্য পার্সোনাল প্রটেকশন ইক্যুইপমেন্ট বা ব্যক্তি সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) ব্যবহার নিয়ে সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পিপিই কোন ধরনের সেবাদাতা ব্যক্তির জন্য প্রয়োজন তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবার তো পিপিই ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। যাদের প্রয়োজন নেই, তাদের পিপিই পরিধান করার প্রয়োজন নেই। তাদের শুধু মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভস পরলেই হবে। এক্ষেত্রে আইইডিসিআরকে দ্রুত সঠিক নির্দেশনা জারির নির্দেশ দেন তিনি। মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আট বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জেলা প্রশাসকসহ মাঠ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশ দেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশব্যাপী চলমান কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী এই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সংযুক্ত হন। মতবিনিময়ের এক পর্যায়ে আইইডিসিআর পরিচালক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যাদের মধ্যে লক্ষণ আছে, তাদের সবাইকে পরীক্ষা করা হয়েছে। ঢাকার বাইরেও করোনা পরীক্ষার সুবিধা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। তিনি পিপিই ব্যবহার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে দেশের সব জেলা-উপজেলায় পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, অনেক স্থানেই যাদের প্রয়োজন নেই, তারাও পিপিই ব্যবহার করছেন। এতে করে যাদের প্রকৃত প্রয়োজন, তাদের পিপিই’র ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তিনি বলেন, যারা করোনা সংক্রান্ত রোগীদের সেবা বা সংস্পর্শে যাবেন, তাদের পিপিই’র প্রয়োজন রয়েছে। যারা এমন রোগীর সংস্পর্শে যাচ্ছেন না, তাদের শুধু মাক্স ব্যবহার করলেই হবে। সারাবিশ্বেই পিপিই সঙ্কট চলছে। তাই যাদের প্রয়োজন নেই তারা ব্যবহার না করলে পিপিই সাশ্রয়ী হবে। সেব্রিনা ফ্লোরা’র এমন বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিপিই সত্যিকার অর্থে যাদের প্রয়োজন, তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। যাদের প্রয়োজন নেই, তাদের পিপিই পরিধান করার প্রয়োজন নেই। যেমন, যারা রোগীদের সরাসরি সেবা দেবেন, তাদের কিন্তু পিপিই অবশ্যই পরতে হবে। কিন্তু হাসপাতালেও যারা সরাসরি রোগী দেখবেন না, সংস্পর্শে যাবেন না- তাদের জন্য কিন্তু পিপিই প্রয়োজন নেই। সেভাবে পিপিই’র ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি পিপিই ব্যবহারে সঠিক নির্দেশনা জারি করতে আইইডিসিআরকে নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে বেশ কয়েকজন জেলা প্রশাসক ও সির্ভিল সার্জন ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন, তারা প্রত্যেকেই পর্যাপ্ত পিপিই পেয়েছেন। তাদের পিপিই’র কোন সঙ্কট নেই। কেউ কেউ অবশ্য বলেন, যাদের প্রয়োজন নেই, তারাও জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে পিপিই পাওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন। এর মধ্যে গণমাধ্যমকর্মীরাও রয়েছেন। তবে প্রকৃত প্রয়োজন যাদের, তাদের মধ্যেই পিপিই বিতরণ করছেন তারা। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পিপিই ব্যবহার নিয়ে অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা থাকতে পারে। আমার মনে হয়, আইইডিসিআর বা সংশ্লিষ্টরা এ ক্ষেত্রে পিপিই ব্যবহারের একটি নির্দেশনা তৈরি করে দিতে পারে। প্রয়োজনে সচিত্র নির্দেশনা তৈরি করা যেতে পারে। কারা, কখন পিপিই ব্যবহার করবেন, এটি সবার সঠিকভাবে জানা প্রয়োজন এবং সবার মধ্যে এ নির্দেশনা সঠিকভাবে প্রচারিত হওয়া প্রয়োজন। বরগুনা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে স্থানীয় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু সারাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতেও পিপিই সরবরাহের অনুরোধ জানান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে পিপিই’র প্রয়োজন দেখছি না। সেখানে দায়িত্ব পালনকারীরা মাক্স এবং বড় প্রয়োজন হলে হ্যান্ডগ্লাভস পরতে পারেন।
×