কল্পিত রহস্যময় একটি প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জরুরী ভিত্তিতে পরিচালিত মহড়া পরীক্ষা এক মাসেরও কম সময়ের পর এসে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ঠেকানোর হাতিয়ার তৈরিতে দক্ষিণ কোরিয়াকে সহায়তা করেছিল। খবর ওয়েবসাইটের।
ওই মহড়া সংশ্লিষ্ট এক বিশেষজ্ঞ ও সরকারী গোপন নথির ভিত্তিতে প্রকাশিত বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়েছে। ওই নথিতে দেখা যায়, গত ১৭ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার সংক্রামক ব্যাধি বিষয়ে দুই ডজন শীর্ষ বিশেষজ্ঞ একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সামাল দেন। চীন ভ্রমণ করে আসা এক দক্ষিণ কোরীয় পরিবারের মধ্যে নিউমোনিয়ার দেখা পান তারা।
ততদিনে চীনে ছড়িয়ে পড়েছে অজ্ঞাত এক রোগ। নতুন ধরনের করোনাভাইরাস হিসেবে কল্পনা করে নেয়া রোগটি দ্রুতই পরিবারের সদস্য ও তাদের সংস্পর্শে আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (কেসিডিসি) রোগটির জীবনশক্তি ও উৎপত্তি খুঁজতে এ্যালগরিদমের পাশাপাশি দ্রুত পরীক্ষার কৌশলও তৈরি করে ফেলেন। গোপন ওই নথি অনুসারে, ২০ জানুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথম নোভেল করোনাভাইরাসের সন্দেহভাজন রোগী দেখা দিলে তখনকার মহড়া থেকে পাওয়া ওই ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হয়।
মহড়া পরিচালনাকারী কেসিডিসির অন্যতম বিশেষজ্ঞ লি স্যাং অন বলেন, ‘গত ২০ বছরের দিকে তাকালে দেখা যায়, মানুষের জীবন ইনফ্লুয়েঞ্জা অথবা করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিপর্যস্ত ছিল। আমরা তা ভালভাবেই মোকাবেলা করেছি। কিন্তু নতুন ধরনের একটি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। ‘এটা (মহড়া কাজে লাগার বিষয়টি) ছিল একটা অন্ধ ভাগ্য... ওই পরিস্থিতিটি বাস্তবে রূপ নিতে দেখে আমরা হতবাক হয়ে পড়েছি। কিন্তু মহড়া থেকে পরীক্ষা পদ্ধতি ও রোগ শনাক্তের পদ্ধতিতে আমাদের অনেক সময় বাঁচিয়ে দিয়েছে।’ আগ্রাসী ও টেকসই পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করে চীনের বাইরে এশিয়ার সবচেয়ে বড় করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের গতি শ্লথ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ওই মহড়া। শুরুতে বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর কয়েক দিনের মধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়া ব্যাপকভাবে পরীক্ষা শুরু করে। উপসর্গ না থাকলেও অন্যকে সংক্রমিত করতে পারেন এমন লোকদের পরীক্ষা করা, নিশ্চিত রোগীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা এবং তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার মতো বিস্তৃত কর্মসূচী নিয়েছিল দেশটি। বেশি একটা বিপর্যয় সৃষ্টির আগেই নোভেল করোরাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়ার নেয়া কার্যকর পদক্ষেপ খুবই প্রশংসিত হয়। এ মহামারীতে নয় হাজার ৫৮৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ বা তার নিচে রয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: