ভারতে দিল্লীর একটি মসজিদে তবলিগ জামাতের এক জমায়েতে যোগ দিয়ে তেলেঙ্গানায় ফেরার পর পরীক্ষায় করোনাভাইরাস ধরা পড়া ছয় ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় দিল্লীর নিজামুদ্দিনের ওই মসজিদের জমায়েতে দুই হাজারেরও বেশি লোক যোগ দিয়েছিল, তাদের মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদ আরব ও কিরগিজস্তান থেকে আসা প্রতিনিধিরাও ছিলেন। খবর এনডিটিভির।
এই জমায়েতে যোগ দেয়া কাশ্মীরের এক ইমামও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত সপ্তাহে শ্রীনগরের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তেলেঙ্গানায় যে ছয় জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে চার জনের মৃত্যু হয়েছে নিজামাবাদ ও গাডওয়ালে। এদের মধ্যে দুই জন মারা গেছেন গান্ধী হাসপাতালে, একজন এ্যাপোলো হাসপাতালে ও আরেকজন গ্লোবাল হাসপাতালে। যারা এদের সংস্পর্শে এসেছিলেন স্পেশাল টিম তাদের শনাক্ত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে বলে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দফতর থেকে পাঠানো একটি নোটে বলা হয়েছে। পরীক্ষার পর তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে ওই নোটে বলা হয়েছে। দিল্লীর ওই জমায়েত শেষে সেখান থেকে তেলেঙ্গানায় যাওয়া অন্তত ১০ ইন্দোনেশিয়ায়ও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই জমায়েত শেষ হওয়ার পর এবং ২৪ মার্চ ভারতজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পরও তবলিগ জামাতের ওই ‘মার্কায’ মসজিদে প্রায় ১৪ শ’ লোক অবস্থান করছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ভবনটি খালি করে দেয়ার জন্য ২৪ মার্চ থেকে তারা উদ্যোক্তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু এখানে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই লকডাউনের কারণে আটকা পড়ে আছেন বলে জানিয়েছেন তারা। এখান থেকে তিন শ’ জনেরও বেশি লোককে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য দিল্লীর বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে এবং তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ওই মসজিদ কমপ্লেক্সের ছয় তলা একটি ডরমেটরিতে প্রায় ২৮০ জন বিদেশীও আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এখানে অংশগ্রহণকারীদের অনেকে ২০ থেকে ৩০টি বাসে করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গেছেন এবং তাদের নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এই জমায়েতে যোগ দিয়ে ফেরা আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নয় ব্যক্তি ও তাদের একজনের স্ত্রীর দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। দক্ষিণ দিল্লীর একটি এলাকার অনেকের মধ্যে করোনাভাইেরাস সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে, এমন খবরের পর রবিবার রাতে দিল্লী পুলিশ, সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) কর্মকর্তারা ও কয়েকটি মেডিক্যাল টিম ওই এলাকায় যায়। সেখানে কয়েকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এই আশঙ্কায় পুরো এলাকাটি সিল করে দেয়া হয়েছে। দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল তবলিগ জামাতের যে ইমামরা ওই জমায়েতের আয়োজন করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন।