ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শরণার্থী শিবিরের গাদাগাদি পরিবেশে দ্রুত করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ৩১ মার্চ ২০২০

শরণার্থী শিবিরের গাদাগাদি পরিবেশে দ্রুত করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে

অনলাইন ডেস্ক ॥ জাতিসংঘের হিসাবে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী শিবিরে বাস করছেন ৬৬ লাখ শরণার্থী ও উদ্বাস্তু। অনেকেরই আশংকা গাদাগাদি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যেহেতু তারা থাকেন , কোভিড-১৯ মহামারিতে তাদের আক্রান্ত হবার ঝুঁকি খুবই বেশি। পৃথিবীতে প্রতি দু সেকেন্ডে কেউ না কেউ কোন না কোন দেশে অবস্থার কারণে ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে বলে বলছে জাতিসংঘের হিসাব। আর এই ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠি যে কোন রোগ বিস্তারের ঝুঁকিতে থাকে। যেভাবে গাদাগাদি করে তাদের থাকতে হয়, এবং যেধরনের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাদের দিন কাটাতে হয়, তাতে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর জন্য যেসব পরামর্শ সবাইকে দেয়া হচ্ছে – অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং ঘনঘন হাত ধোয়া – এসব মেনে চলা শরণার্থীদের জন্য এককথায় অবাস্তব। এসব শিবিরে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে তার ফল মারাত্মক হবে বলে আশংকা বাড়ছে। “এখনও এই ভাইরাসের সংক্রমণ আমাদের শিবিরে ধরা পড়েনি। কিন্তু তা ছড়াতে শুরু করলে আমার মনে হয় ৮০ শতাংশ সংক্রমণের শিকার হবে, কারণ এমন গাদাগাদি ভিড় এখানে,” বিবিসিকে বলছিলেন বাংলাদেশে কুতুপালংয়ের একজন শরণার্থী। সম্ভাব্য বিপর্যয় : কক্সবাজারে কুতুপালং ক্যাম্পে স্বামী, দুই মেয়ে এবং তার বোনকে নিয়ে চেকুফা থাকেন তিন মিটার বাই চার মিটার আয়তনের ছোট এক তাঁবুতে। মিয়ানমারে ব্যাপক নির্যাতন ও দমনপীড়ন এড়াতে ২০১৭ সালে সাত লাখ রোহিঙ্গা, প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য তারা বর্ষায় ফুলে ফেঁপে ওঠা নদী এবং বন্যার ঢল, সেইসঙ্গে বন্যপ্রাণীর ঝুঁকি উপেক্ষা করে ঘর ছেড়েছিলেন। তিন বছর পর এখন তাদের জন্য আরেক নতুন সঙ্কট তৈরি হচ্ছে এবং তাদের যাবার আর কোন জায়গা নেই। “দশটা পরিবারের জন্য এখানে একটা পায়খানা এবং একটা বাথরুম। একটা টিউবয়েলের পানি ব্যবহার করে ৫০টি বাসার বাসিন্দা। এই পরিস্থিতিতে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে এখানকার মানুষ এড়াবে কীভাবে?” বলছেন এই শরণার্থী। সব কিছু বন্ধ : ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যথাসাধ্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। “গত কয়েকদিনে ক্যাম্প চুপচাপ হয়ে গেছে। বাজার দোকান, মাদ্রাসা, সবধরনের স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে,” চেকুফা বলছেন। “কেউ কেউ মাস্ক কিনেছেন। আমি শুনেছি কিছু এনজিও লোকজনকে সাবান দিচ্ছে এবং তাদের শেখাচ্ছে ভাইরাসে ঠেকাতে কীভাবে ঠিক করে হাত ধুতে হয়।” জাতিসংঘের হিসাব বলছে পৃথিবীর নানা অংশে ৬৬ লাখ মানুষ এধরনের অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করে। আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের দুই কোটি ৬০ লাখ উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠির মধ্যে এরাই একটা বড় অংশ। প্রায় ২০ লাখ মানুষ থাকে স্থানীয়ভাবে জোগাড় করা খুবই সাধারণ জিনিস দিয়ে নিজেদের হাতে বানানো শিবিরে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হল বাংলাদেশ। এমনকী এই মহামারি শুরু হবার আগেও এত বিশাল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেবার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যথাসাধ্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। “গত কয়েকদিনে ক্যাম্প চুপচাপ হয়ে গেছে। বাজার দোকান, মাদ্রাসা, সবধরনের স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে,” চেকুফা বলছেন। “কেউ কেউ মাস্ক কিনেছেন। আমি শুনেছি কিছু এনজিও লোকজনকে সাবান দিচ্ছে এবং তাদের শেখাচ্ছে ভাইরাসে ঠেকাতে কীভাবে ঠিক করে হাত ধুতে হয়।” জাতিসংঘের হিসাব বলছে পৃথিবীর নানা অংশে ৬৬ লাখ মানুষ এধরনের অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করে। আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের দুই কোটি ৬০ লাখ উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠির মধ্যে এরাই একটা বড় অংশ। প্রায় ২০ লাখ মানুষ থাকে স্থানীয়ভাবে জোগাড় করা খুবই সাধারণ জিনিস দিয়ে নিজেদের হাতে বানানো শিবিরে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হল বাংলাদেশ। এমনকী এই মহামারি শুরু হবার আগেও এত বিশাল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেবার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৫। তারপরেও চেকুফা চান তাদের শিবিরগুলোতে আরও স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হোক যাতে তাদের মত উদ্বাস্তুরা আশ্বস্ত বোধ করতে পারেন। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইসিআর বলছে বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরগুলোতে এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯-এ কেউ আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে না। তবে তারা আইসোলেশনে থাকার জন্য কিছু জায়গার ব্যবস্থা করেছে যেখানে ৪০০ রোগী আলাদা থাকতে পারবে। তারা আরও ১০০০ বাড়তি বেডের জন্য জায়গা জোগাড় করার চেষ্টা করছে। কুতুপালং বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী শিবির। সূত্র : বিবিসি বাংলা
×