ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গণমাধ্যম নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তথ্যমন্ত্রী

করোনা দুর্যোগে সরকার ও গণমাধ্যম আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ৩১ মার্চ ২০২০

করোনা দুর্যোগে সরকার ও গণমাধ্যম আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ‘করোনা’ দুর্যোগ মোকাবেলায় গণমাধ্যম ও সরকার আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার দুপুরে ঢাকায় তথ্যমন্ত্রী মিন্টু রোডের সরকারী বাসভবনে গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা জানান। নিউজপেপারস ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- নোয়াব-এর সভাপতি এ কে আজাদ, নির্বাহী সদস্য মতিউর রহমান ও তারিক সুজাত, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম, সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম, ‘এ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এটকো’ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু ও এটকো’র অন্যতম পরিচালক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বৈঠকে যোগ দেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। করোনা সঙ্কট মোকাবেলা ও এই সঙ্কটের কারণে গণমাধ্যমে নতুনভাবে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগে ঐক্যমত্যের কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক দুর্যোগের এ সময় আমাদের দেশও করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকেনি। এই প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন মালিক, সম্পাদক পরিষদ ও এডিটরস গিল্ড নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষকে অবহিত ও সতর্ক করা, সঠিক চিত্র তুলে ধরা ও সার্বিকভাবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ব্যাপক। সরকার ও গণমাধ্যমসহ আমরা সকলে যাতে একসঙ্গে কাজ করে এই সঙ্কট থেকে উত্তরণ করতে পারি, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী জানান, আমরা ঐক্যমতে পৌঁছেছি যে, বৈশ্বিক দুর্যোগের এ সময় অবশ্যই আমরা সবাই একযোগে কাজ করব। জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, অতীতেও আমরা দেখেছি, এমন দুর্যোগের সময়ে নানা ধরনের গুজব রটানো হয়, কিছু অনলাইন পোর্টাল থেকে মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য ভুয়া সংবাদ পরিবেশিত হয়। এই গুজব ও মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে আমাদের মূলধারার গণমাধ্যমগুলো ভূমিকা রাখতে পারে এবং রাখছে। সরকারও তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সেই সঙ্গে এ ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কিভাবে আরও জোরালো ভূমিকা রাখা যায়, সে বিষয়ে আমরা মূলধারার গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছি বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা সবাই একমত হয়েছি যে, এ সময় জনগণকে আতঙ্কিত করা কোনভাবেই সমীচীন নয়, বরং সতর্ক করা দরকার এবং সরকার ও সবাই আর কী কী করতে পারি, ভবিষ্যত পরিকল্পনায় আরও কী যুক্ত করতে পারি, সে বিষয়ে আমরা আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব। করোনা পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় এনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই সঙ্কটময় সময়ে সংবাদপত্র ও টেলিভিশনও নানা সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে, বিশেষ করে সংবাদপত্রের সার্কুলেশন কমে গেছে, কোনটা অর্ধেকে নেমে এসেছে, কোনটা আরও কমে গেছে। হকারেরা ও সংবাদপত্রে যারা দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করে, তারা নানা সমস্যায় পড়েছে। টেলিভিশনেও কিছু সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যাগুলো মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে কী কী করা যায়, তাদের পাওনা বিলগুলো যাতে আমরা তাড়াতাড়ি দিতে পারি, সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বৈঠক শেষে বিটিভিকে দেয়া সাক্ষাতকারে সম্পাদকীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম এ সময় সঙ্কট উত্তরণে সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজের বিষয়ে ঐক্যমত্যের কথা জানিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাপী সঙ্কটের সময়ও গণমাধ্যম ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখে এবং রাখবে। সংবাদপত্র শিল্পের স্বার্থে সরকারের বিভিন্ন দফতরে পত্রিকাগুলোর পাওনা বিলগুলো দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ জানান তিনি। এটকো সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু সাংবাদিকরা এ সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে উল্লেখ করেন ও আগামী পাঁচ মাসের জন্য এটকোকে একটি থোক বরাদ্দের অনুরোধ জানান। তিনিও সরকারের কাছে টিভিগুলোর পাওনা বিজ্ঞাপন বিল দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ জানান। গুজব প্রতিরোধে মূলধারার গণমাধ্যম দৃঢ় ভূমিকা রাখবে, বলেন বাবু।
×